শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া: সূচক ও লেনদেনে ফের মন্দাভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পরদিন দেশের শেয়ারবাজারে ফের মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। বাজেট ঘিরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে সাময়িক আশাবাদ তৈরি হয়েছিল, তা বাজেট ঘোষণার পরদিনেই হোঁচট খেয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে, যা বাজারে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে।
সূচকের পতন এবং দুর্বল লেনদেন
দিনের শুরুতেই বাজার নেতিবাচক প্রবণতায় প্রবেশ করে। বেলা ১২টা পর্যন্ত সূচক কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও দুপুরের পর আবারও তা নিম্নমুখী হয় এবং দিনশেষে সূচক উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৪.৯৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৫৮৮.৭৫ পয়েন্টে। ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৯.২৮ পয়েন্ট এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬.৮৯ পয়েন্ট।
লেনদেনেও স্পষ্ট দুর্বলতা দেখা গেছে। আগের দিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২৭৫ কোটি টাকার বেশি, আজ তা কমে দাঁড়ায় ২২৯ কোটি টাকায়। এর ফলে বাজারে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
সিএসইতে ভিন্নচিত্র, তবে লেনদেনে দুর্বলতা অব্যাহত
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকগুলোর মধ্যে ৩টি সূচকে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেলেও সামগ্রিক লেনদেন দুর্বল ছিল। এতে বোঝা যায়, ডিএসই ও সিএসই উভয় বাজারেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা এবং অপেক্ষার মনোভাব বিরাজ করছে।
বাজেট প্রণোদনার বাস্তব প্রভাব অনুপস্থিত
বাজারসংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকদের মতে, বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য কয়েকটি প্রণোদনামূলক প্রস্তাব থাকলেও, তাৎক্ষণিকভাবে বাজারে এর কোনো ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। করপোরেট কর হ্রাস, তালিকাভুক্তির উৎসাহ ও মূলধন গঠনের বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য হলেও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল আরও কার্যকর সংস্কার এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য সরাসরি প্রণোদনা। এ দুটি দিক স্পষ্টভাবে বাজেটে উপস্থাপিত না হওয়ায় বাজারে প্রত্যাশিত আস্থা তৈরি হয়নি।
বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাজেট ঘোষণার পরপরই বাজারে কোনো স্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন না আসা শেয়ারবাজারে বিদ্যমান আস্থার ঘাটতির প্রতিফলন। বাজেটের ঘোষণাগুলো কতটা বাস্তবায়নযোগ্য এবং তার প্রতিফলন কবে থেকে দেখা যাবে—বিনিয়োগকারীরা এখন সেই দিকেই নজর রাখছেন। বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে আরও স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন।
বাজেট-পরবর্তী দিনে শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেনের মন্দাবস্থা প্রমাণ করে, কেবল প্রণোদনা ঘোষণা যথেষ্ট নয়। বাজারে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে হলে বাস্তবায়নের গতি, নীতিগত স্থিতিশীলতা এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা—এই তিনটি বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে সাময়িক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ধরে রাখা সম্ভব হবে না।
জাকারিয়া/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- নকল অ্যাপ, ভুয়া ব্রোকারেজ: শেয়ারবাজারের বড় প্রতারণা উন্মোচন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬৪% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা: ৩,০০০ সদস্যের প্রতারক চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- শেয়ারবাজারে আলোড়ন: ৯ স্টকে বাই সিগন্যাল, নতুন সুযোগ?
- সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর: নতুন পে-স্কেল, কার কত বেতন বাড়বে
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলো ৮ কোম্পানি
- বিনিয়োগকারীদের চিন্তা দুর করলো ৯ কোম্পানির শেয়ার
- শেয়ারবাজারে নতুন মোড়: ফিরছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা!
- ২,৩০০ কোটি টাকার বন্ডে শেয়ারবাজারে আলোড়ন: বিএসইসি'র অনুমোদন
- পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুখবর দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- উদ্যোক্তা পরিচালকের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার বিক্রি: বিনিয়োগকারীদের আস্থা কি ঝুঁকিতে?
- ইন্টার মায়ামি বনাম শিকাগো ফায়ার: শেষ ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ
- আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ৪ পরিবর্তন
- রেকর্ড চাহিদা: বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ২৪ কোম্পানির শেয়ার
- পুঁজি সংগ্রহে ব্যর্থ শেয়ারবাজার: দায়ী কারা? ফাঁস করলেন বিশেষজ্ঞরা