রাষ্ট্রপতির আদেশে ৪০০ নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল
নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ—বাংলার ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ অধ্যায়। সেই অধ্যায়ের শুরুর কাহিনি লেখা হয়েছিল ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে যাঁরা স্বাধীনতার আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন, যাঁদের কাঁধে ভর করেই রচিত হয়েছিল একটি জাতির জন্ম, এবার তাঁদেরই মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল করল সরকার।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ এক অধ্যাদেশ জারি করে জানায়, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ী চার শতাধিক এমএনএ ও এমপিএ, যাঁদের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদের মতো নেতৃত্বগুণে উদ্ভাসিত ব্যক্তিরাও ছিলেন—তাঁদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে আর গণ্য করা হবে না।
নতুন অধ্যাদেশে তাদের পরিচিতি পাল্টে দেওয়া হয়েছে—এবার থেকে তাঁরা হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’।
নতুন শ্রেণিবিন্যাস: কে হবেন ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’?
এই অধ্যাদেশে শুধু প্রবাসী সরকারের প্রতিনিধিরাই নন, আরও চার শ্রেণির মানুষকে একইভাবে ‘সহযোগী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে:
বিদেশে অবস্থানকারী সেই পেশাজীবীরা, যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বমত গঠনে কাজ করেছেন
মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারী, সহকারী ও কূটনৈতিক দূতেরা
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, কলাকুশলী এবং যুদ্ধপক্ষীয় দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা, যাঁরা মাঠে-ঘাটে ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের জন্য
২০২২ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন অনুযায়ী এই শ্রেণির মানুষদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সে স্বীকৃতিকে এক ধাক্কায় সরিয়ে রেখে নতুন পরিচয়ে স্থান দেওয়া হলো।
ইতিহাসে সংশোধন, নাকি বিকৃতি?
বঙ্গবন্ধুর মতো ইতিহাসনির্মাতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল—এমন সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিস্তর বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তীব্র সমালোচনা, বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে: যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন যুদ্ধের, তাঁরাই যদি মুক্তিযোদ্ধা না হন, তবে কে হন?
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি শুধু একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি ইতিহাসের ভাষা পাল্টে দেওয়ার মতো বিষয়। একজন অংশগ্রহণকারী না হয়েও যুদ্ধের প্রধান কাণ্ডারি হতে পারেন—তাজউদ্দীনের মতো নেতৃত্বই তার উদাহরণ। তাঁদের স্বীকৃতি প্রশ্নের মুখে পড়লে প্রজন্ম বিভ্রান্ত হবে, ইতিহাস খুঁড়িয়ে হাঁটবে।
অধ্যাদেশের পথচলা
জানা গেছে, নতুন অধ্যাদেশটি গত ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হয়। সেখানে আইন মন্ত্রণালয় এটি অনুমোদন দেয় শর্তসাপেক্ষে। এরপর রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত অনুমোদনের পর ৩ জুন রাতে তা কার্যকর করা হয়।
তবে এই সিদ্ধান্ত কতটা টিকবে, সেটি সময় বলবে। কারণ ইতিহাসের কিছু অধ্যায় শুধু কাগজে লেখা থাকে না, তা গেঁথে থাকে মানুষের বিশ্বাসে। বঙ্গবন্ধু বা তাজউদ্দীনদের নাম ইতিহাসের সঙ্গে গাঁথা। তাঁদের স্বীকৃতি বদলালেও তাঁদের অবদান মুছে ফেলা যাবে না।
স্বাধীনতার চেতনা কোনো কাগুজে পরিচয় নয়, তা জাতির চেতনায় বয়ে চলে। তবে রাষ্ট্র যদি সেই চেতনার গায়ে কলম চালায়, প্রশ্ন তো উঠবেই—কাদের হাতে ইতিহাসের ব্যাখ্যা সবচেয়ে নিরাপদ?
জামিরুল ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আইপিএলনিলাম শেষ, বাংলাদেশ থেকে দল পেলেন যারা
- আজআইপিএল নিলাম 2026: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন Live
- IPL 2026 মিনি-নিলাম: তারিখ, সময়, বাজেট ও লাইভ স্ট্রিমিং - এক নজরে সব তথ্য
- আইপিএল নিলাম ২০২৬: দেখুন এখন পর্যন্ত দল পেলেন যারা ও মুস্তাফিজের অবস্থান
- আইপিএল নিলাম ২০২৬: এখন পর্যন্ত দল পেলেন যারা, জানুন মুস্তাফিজ ও রিশাদের অবস্থান
- আইপিএল নিলাম ২০২৬: দল পেলেন মুস্তাফিজের সতীর্থ
- আজ IPL Auction 2026: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- আইপিএল নিলাম ২০২৬:: সর্বোচ্চ দামে দল পেলেন মুস্তাফিজ
- IPL Auction 2026: কবে, কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- আইপিএল নিলাম আজ: মুস্তাফিজের ২ কোটির ভিত্তিমূল্য, জানুন এক নজরে সকল তথ্য
- IPL Auction 2026: তাসকিনের নিলাম শেষ
- চলছেIPL নিলাম:মুস্তাফিজ-রিশাদ কি দল পেয়েছে? জানুন সর্বশেষ অবস্থান
- আইপিএল নিলাম ২০২৬ : কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- IPL Auction 2026: শেষ হলো নিলাম, জানুন কে কোন দলে
- আজকের সোনার দাম: (সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫)