ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ধোনি, হেইডেনসহ ৭ ক্রিকেট কিংবদন্তি আইসিসির হল অব ফেমে

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১০ ১০:১১:৪৯
ধোনি, হেইডেনসহ ৭ ক্রিকেট কিংবদন্তি আইসিসির হল অব ফেমে

সানা মীর গড়লেন ইতিহাস, সম্মান পেলেন আমলা-স্মিথও

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগমুহূর্তে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এল আরেক দারুণ সুখবর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাদের হল অব ফেমে যুক্ত করেছে সাতজন কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে—যাঁরা ব্যাট, বল আর নেতৃত্বে বদলে দিয়েছেন খেলাটির মানচিত্র।

সাত তারকার এই তালিকায় রয়েছেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি, অস্ট্রেলিয়ান বিধ্বংসী ওপেনার ম্যাথু হেইডেন, দক্ষিণ আফ্রিকার দুই স্তম্ভ হাশিম আমলা ও গ্রায়েম স্মিথ, নিউজিল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার ও অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেটোরি, ইংল্যান্ড নারী দলের সাবেক উইকেটকিপার-ব্যাটার সারা টেইলর এবং পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সানা মীর।

সানা মীর: পাকিস্তানের প্রথম নারী ক্রিকেটার আইসিসি হল অব ফেমে

এই তালিকায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম সানা মীর। তিনি পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা করে নিয়েছেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে ১২০টি ওয়ানডে এবং ১০৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে ৭২টি ওয়ানডে ও ৬৫টি টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

২০১০ ও ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে পাকিস্তান নারী দলকে স্বর্ণপদক জেতান সানা মীর। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৫১ উইকেট এবং একসময় বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ অবস্থান—সব মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন নারীদের ক্রিকেটের পথপ্রদর্শক।

ধোনি: সাদা বলের ক্রিকেটের একমাত্র পূর্ণ জয়ী অধিনায়ক

মহেন্দ্র সিং ধোনি—নামটাই যেন আলাদা এক অধ্যায়। ২০০৭ সালে ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দল, ২০১১ সালের ঐতিহাসিক ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি—এই তিনটি সাদা বলের ট্রফিই ভারতের ঘরে এনেছেন একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে। তাঁর নেতৃত্বেই ভারত টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছিল।

হেইডেন: বোলারদের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠা এক ওপেনার

অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন ছিলেন সময়ের অন্যতম ভয়ঙ্কর ওপেনার। তাঁর ব্যাটিং ছিল আগ্রাসী এবং ধ্বংসাত্মক। ২০০৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য এই ব্যাটার ২০০৭ বিশ্বকাপে করেছেন তিনটি সেঞ্চুরি। শুরুর বলেই প্রতিপক্ষ বোলারদের চাপে ফেলতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত।

আমলা ও স্মিথ: প্রোটিয়াদের দুই দিকপাল

হাশিম আমলা দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে প্রথম টেস্ট ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৫৫টির বেশি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি—নির্ভরতার আরেক নাম।

অন্যদিকে গ্রায়েম স্মিথ হলেন একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি ১০০টির বেশি টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছেন। তাঁর অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ৫৩টি টেস্ট—এটি এখনো বিশ্বরেকর্ড। ১৫০টি ওয়ানডে ম্যাচেও নেতৃত্ব দিয়েছেন স্মিথ, যা দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ।

ভেটোরি: কিউইদের নির্ভরতার প্রতীক

ড্যানিয়েল ভেটোরি নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সফল অলরাউন্ডার। মাত্র তিনজন ক্রিকেটারের মধ্যে একজন যিনি টেস্টে করেছেন ৪০০০ রান এবং নিয়েছেন ৩০০ উইকেট। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার নেতৃত্বেই নিউজিল্যান্ড পৌঁছায় ফাইনালে।

সারা টেইলর: উইকেটপেছনের নিখুঁত কারিগর

ইংল্যান্ড নারী দলের সাবেক উইকেটরক্ষক সারা টেইলর ছিলেন মাঠের নেপথ্য নায়িকা। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের নারী দলকে জেতান ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালেও ছিল তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর উইকেটকিপিং ডিসমিসাল সংখ্যা ২৩২—নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য।

ক্রিকেটের আকাশে আরও সাতটি উজ্জ্বল নক্ষত্র

আইসিসির হল অব ফেম মানেই ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় স্বীকৃতি। এই সাত কিংবদন্তির অন্তর্ভুক্তি ক্রিকেটবিশ্বকে আরও একবার মনে করিয়ে দিল, খেলাটা শুধু মাঠে নয়—মনেও গেঁথে থাকে ইতিহাস হয়ে।

FAQ (প্রশ্ন-উত্তরসহ)

আইসিসির হল অব ফেমে কারা জায়গা পেয়েছেন ২০২৫ সালে?

উত্তর: ২০২৫ সালে আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পেয়েছেন ধোনি, ম্যাথু হেইডেন, হাশিম আমলা, গ্রায়েম স্মিথ, ড্যানিয়েল ভেটোরি, সারা টেইলর ও সানা মীর।

সানা মীর কী কারণে ইতিহাস গড়েছেন?

উত্তর: সানা মীর পাকিস্তানের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন।

ধোনির কি অর্জন তাঁকে এই সম্মাননায় স্থান দিয়েছে?

উত্তর: ধোনি একমাত্র অধিনায়ক যিনি আইসিসির তিনটি সাদা বলের ট্রফি—টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (২০০৭), ওয়ানডে বিশ্বকাপ (২০১১), চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (২০১৩)—জিতেছেন এবং ভারতকে টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে তুলেছেন।

আইসিসির হল অব ফেমে কিভাবে জায়গা দেওয়া হয়?

উত্তর: আইসিসি প্রতি বছর ক্রিকেটে অসাধারণ অবদান রাখা প্রাক্তন খেলোয়াড়দের একটি বোর্ডের মাধ্যমে বাছাই করে হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করে। এখানে ব্যাটিং, বোলিং, অধিনায়কত্ব, প্রভাব ও ঐতিহাসিক অবদান বিবেচনায় নেওয়া হয়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ