ঢাকা, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১২ কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো বেড়েছে

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ২৮ ১০:১০:২৯
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১২ কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা, জুন ২০২৫-দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর সাম্প্রতিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোম্পানি চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নগদ অর্থপ্রবাহ বা ক্যাশ ফ্লোতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, এই খাতে তালিকাভুক্ত ২৩টির মধ্যে ২১টি কোম্পানি মার্চ ২০২৫ প্রান্তিকের (জুলাই ২০২৪ - মার্চ ২০২৫) হিসাব প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ১২টি কোম্পানি আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো (OCFPS) বৃদ্ধির তথ্য দিয়েছে।

এই বৃদ্ধি কোম্পানিগুলোর অপারেশনাল কার্যক্রমে উন্নয়ন, খরচ ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং নগদ প্রবাহে স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে। নিচে কোম্পানিগুলোর ক্যাশ ফ্লো প্রবৃদ্ধির তথ্য সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো:

১. সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি লিমিটেড

তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৭ টাকা ৬৯ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১৮ পয়সা। ক্যাশ ফ্লো বেড়েছে প্রায় তিনগুণের বেশি।

২. বারাকা পাওয়ার

এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৩৭ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল মাত্র ৬৭ পয়সা। এটি ইঙ্গিত করে অপারেশনাল কার্যক্রমে দৃঢ় উন্নতি।

৩. ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো ৮ টাকা ৯৮ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় ১ টাকা ৯৯ পয়সা থেকে চার গুণের বেশি বৃদ্ধি।

৪. ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস

শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ৬৮ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এটি ছিল মাত্র ৭১ পয়সা। এটি খাতটির মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির একটি দৃষ্টান্ত।

৫. যমুনা অয়েল

শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৮৮ টাকা ২৬ পয়সা, যা গত বছর ছিল ১৬ টাকা ৬৬ পয়সা। উল্লেখযোগ্যভাবে ক্যাশ ফ্লো প্রায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

৬. লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড

২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো অর্জন করেছে ৩ টাকা ৮০ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৩ টাকা ২২ পয়সা।

৭. লুব-রেফ (বাংলাদেশ লিমিটেড)

তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ২ টাকা ৩২ পয়সা, আগের বছরের ১ টাকা ৫২ পয়সা থেকে বেড়ে।

৮. মেঘনা পেট্রোলিয়াম

এই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১৪৯ টাকা ৩১ পয়সা। উল্লেখযোগ্যভাবে, আগের বছর এই সময় কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো ছিল মাইনাস ১৪ টাকা ৩৫ পয়সা। এটি উল্লেখযোগ্য টার্নঅ্যারাউন্ড।

৯. তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন

কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ২ পয়সা, যা আগের বছরের ৩ টাকা ৩১ পয়সা থেকে প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি।

১০. পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ

শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৪৭ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৯ টাকা ৮৪ পয়সা।

১১. সামিট পাওয়ার

কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো ছিল ৭ টাকা ২৩ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল ৭ টাকা ৫ পয়সা। তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

১২. ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন

এই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৭ টাকা ৬৫ পয়সা।

প্রতিষ্ঠানভেদে ক্যাশ ফ্লো বৃদ্ধির হার ভিন্ন হলেও অধিকাংশ কোম্পানির পারফরম্যান্স আগের বছরের তুলনায় শক্তিশালী। বিশেষ করে মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস ও যমুনা অয়েলের মতো কোম্পানিগুলো লক্ষণীয় টার্নঅ্যারাউন্ড করেছে। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে—এই খাতটি নগদ প্রবাহে স্থিতিশীলতা অর্জনের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর পথে অগ্রসর হচ্ছে।

বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিকতা

ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে, ক্যাশ ফ্লো হলো কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য যাচাইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ঋণ পরিশোধ, লভ্যাংশ প্রদান ও নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের সক্ষমতা নির্ভর করে যথাযথ ক্যাশ ফ্লো ব্যবস্থাপনার ওপর। তাই, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এই প্রবৃদ্ধিমূলক ফলাফল বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত।

ডিএসই তালিকাভুক্ত এসব কোম্পানির ভবিষ্যৎ পারফরম্যান্সে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে বাজারে এ খাতের মূল্যায়ন আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ