বিদেশিরা ছাড়ছে বহুজাতিকের শেয়ার, আস্থায় বড় ধাক্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারকে দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ ও স্থিতিশীল বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হতো। আন্তর্জাতিক মান, নিয়মিত লাভ এবং আকর্ষণীয় লভ্যাংশের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বেশির ভাগ সম্পদ এই শেয়ারগুলোতেই রাখতেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা এই আস্থায় ভাঙন ঘটিয়ে এগুলোর শেয়ার বিক্রি করছেন।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১১টি বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে ৮টি কোম্পানির শেয়ারের বিপুল অংশ বিদেশিরা বিক্রি করেছেন। এর বাজারদর মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০৩ কোটি ৫৪ লাখ ২৮ হাজার টাকারও বেশি।
বিশদ পরিসংখ্যান:
কোম্পানির নাম | বিক্রি শেয়ারের পরিমাণ | বাজারমূল্য (টাকা) | সর্বশেষ নগদ লভ্যাংশ (%) | তালিকাভুক্তির বছর |
---|---|---|---|---|
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো | ১৭,৮২,০০০ | ৫০,৮২,২৬,৪০০ | ২০২৪: ৩০০%, ২০২৩: ১০০%, ২০২২: ২০০% | ১৯৭৭ |
রেকিট বেনকিজার | ৪৮,৬৬৮ | ১৬,২৭,৩৬,০৫৮ | ২০২৪: ৩৩৩০%, ২০২৩: ৫৫০%, ২০২২: ৯৮০% | ১৯৮৭ |
সিঙ্গার বাংলাদেশ | ১৩,৬৫,৯২৯ | ১৫,০৬,৬৮,৯১৮ | ২০২৪: ১০%, ২০২৩: ৩৫%, ২০২২: ১০% | ১৯৮৩ |
ম্যারিকো বাংলাদেশ | ৩৭,৮০০ | ৯,১৮,১২,৪২০ | ২০২৪: ৩৮৪০%, ২০২৩: ৭৫০%, ২০২২: ৮০০% | ২০০৯ |
লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ | ৪,৬৪,৫৪৯ | ২,২১,১২,৫৩২ | ২০২৪: ৩৮%, ২০২৩: ৫০%, ২০২২: ৪৮% | ২০০৩ |
গ্রামীণফোন | ২,৭০,০৬০ | ৮,১৯,৬৩,২১০ | ২০২৪: ৩৩০%, ২০২৩: ১২৪%, ২০২২: ২২০% | ২০০৯ |
বাটা সু | ১৯,১৫২ | ১,৫৩,৯২,৪৬২ | ২০২৪: ১০৫%, ২০২৩: ৪৩৫%, ২০২২: ৩৬৫% | ১৯৮৫ |
আরএকে সিরামিকস | ১,২৮,৩৯০ | ২৫,১৬,৪৪৪ | ২০২৪: ১০%, ২০২৩: ১০%, ২০২২: ১০% | ২০১০ |
বিদেশি শেয়ার বিক্রির কারণ:
ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ায় এবং ফ্লোর প্রাইসের কারণে দীর্ঘদিন শেয়ার বিক্রি হয়নি। যখন ফ্লোর প্রাইস বাড়ে, তখন লোকসানে হলেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিক্রি শুরু করেন।”
মিডওয়ে সিকিউরিটিজের এমডি মো. আশিকুর রহমান বলেন, “বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্থিরতা সবচেয়ে বড় কারণ। বিদেশিরা শুধু কোম্পানির আয়-ব্যয় দেখেন না, ডলারের সঙ্গে টাকার সম্পর্কও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেন। টাকার অবমূল্যায়নের আশঙ্কায় বিক্রির চাপ বেড়ে গেছে।”
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রিচার্ড ডি’ রোজারিও জানান, “ফ্লোর প্রাইস শুরু হওয়ার পর বিদেশিদের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে। অনেকেই লোকসান সত্বেও শেয়ার বিক্রি করেছেন। বাজারকে অসুস্থ মনে করছেন, যেখানে এক্সিট নেই।”
বিশ্লেষক মতামত:
আর্থিক অবস্থা ভালো থাকা সত্ত্বেও ডলারের অস্থিরতা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ফ্লোর প্রাইস নীতিমালা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করেছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এখনও ভালো মুনাফা ও লভ্যাংশ দিচ্ছে, কিন্তু বিনিয়োগকারীদের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়েছে।
শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার ফলে সামগ্রিক বাজারের স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা এবং শেয়ারবাজারের নীতিতে যথাযথ সংস্কার জরুরি।
মো: রাজিব আলী/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভারতের সাবেক স্পিনার দিলীপ দোশী মারা গেলেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে
- PSG বনাম ইন্টার মায়ামি: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ ম্যাচ
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ম্যাচ প্রিভিউ, একাদশ ও ম্যাচ শুরুর সময়
- ৮ গোল: শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম বাহারাইনের মধ্যকার ম্যাচের ৯০ মিনিটের খেলা
- মাহিয়া মাহির মৃত্যু গুজব: সত্য ও মিথ্যার বিশ্লেষণ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা দিল ডিএসই
- শান্তর পদত্যাগ, নতুন টেস্ট অধিনায়কত্বে এগিয়ে যিনি
- শ্রীলঙ্কা বনাম বাংলাদেশ: বৃষ্টির কারণে বন্ধ দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ
- কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন ফখরুল, চোখের জলে ভেসে গেল শেষ বিদায়
- বিনিয়োগকারীদের নজর কেড়েছে ৩ কোম্পানির শেয়ারে
- বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নজরে পাঁচ কোম্পানি
- বাজারে সামগ্রিক মন্দার মাঝেও বস্ত্র খাতের ৫ কোম্পানির চমক
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ৪-০ গোলে শেষ হলো ম্যাচ
- ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ : দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত ১৬ দলের, সময় সূচি প্রকাশ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য তিন কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা