ঢাকা, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

সবজির দামে উত্তাপ, মাংসের দরও আকাশছোঁয়া

অর্থনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ১১:৫৫:০০
সবজির দামে উত্তাপ, মাংসের দরও আকাশছোঁয়া

বৃষ্টির অজুহাতে বাজারে আগুন, স্বস্তি খুঁজে ফিরছে সাধারণ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিম্নআয়ের মানুষজনের কপালে যেন স্বস্তির রেখা নেই। রাজধানীর বাজারে গিয়ে পকেট গরম না করে ফেরা এখন অসম্ভব এক কাজ। সবজি থেকে শুরু করে মাংস—সবকিছুর দাম যেন আগুন ছুঁয়েছে। প্রতিদিনের বাজার যেন ক্রেতাদের জন্য এক ধরণের মানসিক চাপের নাম হয়ে উঠেছে।

শনিবার (৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর রামপুরা বাজারে গিয়ে দেখা গেল—সবজির স্টলগুলোতে যেন টাঙানো ‘অভাবের বোর্ড’। দাম শুনলেই হাত-পা ঠান্ডা হওয়ার জোগাড়!

কাঁচা মরিচ কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা, গাজরও সেই একই দামে। ঢেঁড়স, ধুন্দুল, বরবটি, বেগুন, কাঁকরোল—সব কিছুর দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার ঘরে। করল্লা তো পৌঁছেছে শত টাকায়! শুধু পটলের দিকে তাকিয়ে একটু স্বস্তি—পাওয়া যাচ্ছে ৫০ টাকায়।

এদিকে মাংসের বাজারে গিয়েও দেখা গেল ভিন্ন কিছু নয়। এক সপ্তাহ আগেও যে ব্রয়লার মুরগি মিলত ১৪০-১৫০ টাকায়, এখন সেটিই হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। সোনালি মুরগি ৩২০-৩৩০ টাকা আর লেয়ার মুরগির দাম ছুঁয়েছে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত।

গরু ও খাসির মাংসের দাম অবশ্য নতুন করে না বাড়লেও তাতে স্বস্তি নেই, কারণ তারাও দাড়িয়ে আছে সাধারণ মানুষের নাগালের অনেক বাইরে—গরুর মাংস ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি!

ক্রেতাদের মাঝে বিরাজ করছে তীব্র হতাশা ও ক্ষোভ। বাজারে আসা আমিনুল হোসেন বলেন,

“সবকিছুর দাম শুধু বাড়ে, কোনোদিন তো কমতে দেখি না। মনে হয় বাজারে গেলেই যেন শাস্তি পেতে হবে।”

আরেক ক্রেতা বদরুল ইসলাম বললেন,

“আগে বাজারে গেলে দুই-তিন দিনের জন্য জিনিস কেনা যেত। এখন তো একদিনের বাজার করতেই টাকায় কুলায় না। আমাদের চলার উপায় কী?”

এদিকে বিক্রেতারাও দামের দায় নিচ্ছেন না। দোকানি আল আমিন বলেন,

“বৃষ্টির কারণে নাকি ক্ষেত থেকে ঠিকমতো পণ্য আসছে না। পাইকারি বাজারে দাম বেশি, আমরাও তো লোকসানে বিক্রি করতে পারি না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌসুমি প্রভাব, সরবরাহ সংকট ও পরিবহন ব্যয়ের চাপ বাজারকে অস্থির করে তুলেছে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—প্রতি বছরই তো বর্ষা আসে, তখন কি এমন হাহাকার লেগেই থাকে?

সাধারণ মানুষের দাবি, বাজারে লাগাম টানতে নিয়মিত তদারকি ও কার্যকর নজরদারি প্রয়োজন। না হলে এই দাম-বৃদ্ধির খেলায় সবচেয়ে বেশি ঠকবে সেই মানুষগুলো, যাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তফাৎ দিনকে দিন পাহাড়সম হয়ে উঠছে।

বাজারে গেলে এখন কেবল পণ্য নয়, স্বস্তিও খুঁজে ফেরে মানুষ। আর সেই স্বস্তি মিলছে না অনেক দিন ধরেই।

জাকারিয়া ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ