ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম কমানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করলো সরকার

২০২৫ জুলাই ১৬ ১৩:০৭:১৭
বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম কমানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করলো সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যয় কমাতে সরকার নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইন্টারনেটের মূল্য কমানো এবং গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে কয়েকটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

বুধবার (১৬ জুলাই) রাজধানীতে আয়োজিত এক প্রযুক্তি সামিটে তিনি বলেন, “আমরা ইন্টারনেট খাতে কার্যকর সংস্কার আনতে কাজ করছি। খরচ কমিয়ে সেবা আরও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

ইন্টারনেট ব্যবহারে সাশ্রয়ী পরিবর্তন আসছে

বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক ব্যবহারকারী তুলনামূলক উচ্চমূল্যের ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। এই বাস্তবতা বদলাতে সরকার অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, আইএসপি নীতিমালা হালনাগাদ এবং বাজার প্রতিযোগিতা জোরদার করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

ফয়েজ আহমদ বলেন, “উচ্চগতির ইন্টারনেট যেন গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে যায়, সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। একইসঙ্গে খরচও যেন নাগালের মধ্যে থাকে।”

ডেটা সুরক্ষা ও আইনগত সংস্কার

ইন্টারনেট খাতে দাম কমানোর পাশাপাশি সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, যাতে ব্যবহারকারীদের ডেটা নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। একইসঙ্গে টেলিযোগাযোগ আইন ও আইসিটি আইন সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নীতিমালা এবং ডেটা গভর্নেন্স আইন প্রণয়ন হচ্ছে, যা প্রযুক্তিনির্ভর সেবার বিস্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”

ডিজিটাল পেমেন্ট ও সরকারি সেবার উন্নয়ন

প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমকেও নিরাপদ ও বিস্তৃত করার কাজ করছে সরকার। একইসঙ্গে সরকারি সেবা আরও সহজ করতে গড়ে তোলা হচ্ছে ন্যাশনাল এপিআই হাব ও সরকারি ক্লাউড অবকাঠামো।

ফয়েজ আহমদ বলেন, “সরকারি অফিসে এখনো অনেক আবেদন অনলাইনে হলেও, শেষ পর্যন্ত প্রিন্ট নিয়ে জমা দিতে হয়—এটা ডিজিটাল বাংলাদেশ নয়। আমরা পুরো ব্যবস্থাটিকে বাস্তব ডিজিটাল রূপ দিতে চাই।”

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

প্রযুক্তি খাতে নেওয়া এসব উদ্যোগ সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অংশ। ফয়েজ আহমদ আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতের সরকারগুলোও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত আরও মজবুত হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের ইন্টারনেট খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। নাগরিকদের জীবনযাত্রা যেমন হবে সহজতর, তেমনি ডিজিটাল অর্থনীতির ভিত্তিও হবে আরও সুদৃঢ়।

FAQ (প্রশ্নোত্তর):

প্রশ্ন: বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম কমছে কেন?

উত্তর: সরকার খরচ কমিয়ে জনগণের জন্য ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করতে চাইছে। এজন্য অপটিক্যাল ফাইবার বিস্তার ও আইএসপি নীতিমালার সংস্কার করা হচ্ছে।

প্রশ্ন: কবে থেকে ইন্টারনেট সেবার উন্নয়ন দেখা যাবে?

উত্তর: সরকারের চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের পর আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ধাপে ধাপে পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।

প্রশ্ন: ইন্টারনেট খাতে আর কী ধরনের পরিবর্তন আসছে?

উত্তর: ডেটা নিরাপত্তা আইন, টেলিযোগাযোগ আইন হালনাগাদ, ডিজিটাল পেমেন্ট সুরক্ষা এবং ক্লাউড অবকাঠামোর উন্নয়নসহ নানা পরিবর্তন আসছে।

প্রশ্ন: এই উদ্যোগগুলো কি দীর্ঘমেয়াদি হবে?

উত্তর: হ্যাঁ, সরকার আশা করছে ভবিষ্যতের সরকারগুলোও এই সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

জামিরুল ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ