ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রতিদিন ইস্তেগফার করলে যা যা ঘটে—কোরআনের ৫টি প্রতিশ্রুতি

২০২৫ জুলাই ১৮ ১৩:৫৮:২৪
প্রতিদিন ইস্তেগফার করলে যা যা ঘটে—কোরআনের ৫টি প্রতিশ্রুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইস্তেগফার মানে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। এটি শুধু গোনাহ মাফের দোয়া নয়, বরং একজন মুমিনের জন্য জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে নিরাপত্তা, বরকত ও সফলতার এক চাবিকাঠি। প্রতিদিন ইস্তেগফার করলে কোরআন অনুযায়ী শুধু পরকালেই নয়, দুনিয়ার জীবনেও মেলে অসংখ্য ফায়েদা।

কোরআনে বহু আয়াতে ইস্তেগফারের গুরুত্ব ও এর প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা নিজেই বান্দাদের ইস্তেগফার করতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং বলেছেন, ইস্তেগফারকারীদের তিনি ভালোবাসেন, সাহায্য করেন এবং তাঁদের ওপর বরকত বর্ষণ করেন।

এখানে কোরআনের আলোকে তুলে ধরা হলো—প্রতিদিন ইস্তেগফার করলে যা যা ঘটে, এমন ৫টি প্রতিশ্রুতি, যা আল্লাহ তাআলা সরাসরি কোরআনে উল্লেখ করেছেন:

১. গোনাহ মাফ হয়, নেকি বৃদ্ধি পায়

ইস্তেগফারের মূল উদ্দেশ্যই হলো গোনাহ মাফ করিয়ে নেওয়া। কিন্তু শুধু তাই নয়—কোরআনে বলা হয়েছে, ইস্তেগফার করলে আল্লাহ বান্দার গোনাহ মাফ করার পাশাপাশি তার নেক আমলও বাড়িয়ে দেন।

আয়াত:

“ক্ষমা প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেব এবং সৎকর্মীদের প্রতিদান বৃদ্ধি করব।”(সুরা বাকারা: ৫৮)

২. বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়

কোনো জাতি বা ব্যক্তি ইস্তেগফার করলে তাদের ওপর আল্লাহর গজব বা শাস্তি নেমে আসে না। এটি কোরআনের একটি বড় প্রতিশ্রুতি।

আয়াত:

“আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না, যতক্ষণ আপনি (নবী) তাদের মধ্যে রয়েছেন এবং যতক্ষণ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে।”(সুরা আনফাল: ৩৩)

৩. রিজিক বৃদ্ধি ও বরকত লাভ হয়

প্রতিদিন ইস্তেগফার করলে রিজিকে বরকত হয়, জীবনের সংকট দূর হয় এবং আল্লাহ অচিন্তনীয় উৎস থেকে সাহায্য করেন।

আয়াত:

“তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন।”(সুরা নুহ: ১০–১২)

৪. শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা লাভ হয়

ইস্তেগফার মানসিক প্রশান্তি দেয়, দুশ্চিন্তা কমায় এবং আল্লাহ দেহেও শক্তি ও সুস্থতা দান করেন।

আয়াত:

“তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তাঁর দিকে ফিরে এসো, তিনি প্রচুর বৃষ্টি দেবেন এবং তোমাদের শক্তিকে আরও বাড়িয়ে দেবেন।”(সুরা হুদ: ৫২)

৫. ভালো জীবন ও আল্লাহর নৈকট্য লাভ

ইস্তেগফারকারীরা আল্লাহর কাছে প্রিয় হয় এবং তাঁদের জীবন সুন্দর ও অর্থবহ হয়ে ওঠে। তারা দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তি—উভয়ই লাভ করে।

আয়াত:

“তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তাঁর দিকে ফিরে এসো, তাহলে তিনি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের উত্তম জীবন সামগ্রী ভোগ করতে দেবেন।”(সুরা হুদ: ৩)

ইস্তেগফার একটি শক্তিশালী আমল। এটি শুধু দোয়া নয়, বরং একজন মুসলমানের জীবনের রক্ষাকবচ। প্রতিদিন ইস্তেগফার করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রহমত, সাহায্য ও সফলতার দরজা খুলে দেন। দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির জন্য আমাদের উচিত দিনে বহুবার ইস্তেগফার করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠা।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ