ঢাকা, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

বাংলাদেশকে অল্প রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ২০ ১৯:৫২:১১
বাংলাদেশকে অল্প রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে দারুণ বোলিং নৈপুণ্যে সফরকারী পাকিস্তানকে মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বোলিং, টাইট ফিল্ডিং এবং পরিকল্পিত আক্রমণের মাধ্যমে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেয় টাইগাররা।

ফখর জামান ছাড়া কেউ দাঁড়াতে পারেননি

পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার ফখর জামান। তিনি ৩৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন, যাতে ছিল ৬টি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা। তবে তাকে ঘিরে ইনিংস গড়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয় একের পর এক উইকেট পতনে। পাকিস্তানের ইনিংস থেমে যায় মাত্র ১৯.৩ ওভারে ১১০ রানে।

বাকি ব্যাটারদের কেউই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি বা দলের প্রয়োজনে লড়াই করতে পারেননি। বিশেষ করে টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার একদমই ব্যর্থ ছিল। সাইম আইয়ুব ৬, মোহাম্মদ হারিস ৪, অধিনায়ক সালমান আগা ৩, হাসান নবাজ শূন্য এবং মোহাম্মদ নবাজ করেন মাত্র ৩ রান। এমনকি শেষ দিকে খুশদিল শাহ ১৭ ও আব্বাস আফ্রিদি ২২ রান করলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে যথেষ্ট ছিল না।

মুস্তাফিজের নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন, তাসকিনের বিধ্বংসী স্পেল

বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট অসাধারণ পারফর্ম করেছে। বিশেষ করে মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন অনবদ্য। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেন। তার বোলিংয়ে ছিল নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেন্থ, দুর্দান্ত কাটার ও স্লোয়ার, যার সামনে অসহায় ছিল পাকিস্তানি ব্যাটাররা।

তাসকিন আহমেদ তিনটি উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে ধাক্কা দেন বারবার। ৩.৩ ওভারে ২২ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন সাইম, আফ্রিদি এবং ফাহিম আশরাফের উইকেট। তরুণ তানজিম হাসান সাকিব ৪ ওভারে ২০ রানে ১ উইকেট নেন এবং তার ডট বলের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো।

মাহেদি হাসান ৪ ওভারে ৩৭ রানে ১ উইকেট এবং রিশাদ হোসেন ৩ ওভারে ১৯ রান দিলেও উইকেট পাননি। তবে শামীম হোসেনের ১ ওভারে মাত্র ২ রান এবং একটি রানআউটে অংশ নেওয়া তাকে আলাদা করে তুলে ধরে।

তিনটি রানআউট, লিটনের উইকেটকিপিং ছিল চমৎকার

পাকিস্তানের ইনিংসে তিনটি রানআউট হয়, যার মধ্যে দুটিতে সরাসরি ভূমিকা ছিল অধিনায়ক ও উইকেটকিপার লিটন দাসের। উইকেটের পেছনে তার সজাগ উপস্থিতি ও চটপটে কাজ পাকিস্তানকে আরও চাপে ফেলে দেয়।

পাকিস্তানের উইকেট পতনের ক্রমানুসার

১-১৮ (সাইম আইয়ুব),

২-৩২ (মোহাম্মদ হারিস),

৩-৪০ (সালমান আগা),

৪-৪১ (হাসান নবাজ),

৫-৪৬ (মোহাম্মদ নবাজ),

৬-৭০ (ফখর জামান),

৭-১০৩ (খুশদিল শাহ),

৮-১১০ (ফাহিম আশরাফ),

৯-১১০ (সালমান মির্জা),

১০-১১০ (আব্বাস আফ্রিদি)।

ম্যাচের বর্তমান পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা

একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১১০ রানের লক্ষ্য সাধারণত খুব ছোট বলেই বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ফর্মে থাকলে এই লক্ষ্য পেরিয়ে যাওয়া কঠিন হওয়ার কথা নয়। এমনকি ব্যাটিংয়ে বিপর্যয় ঘটলেও দলের গভীরতা এবং অভিজ্ঞতায় এটি জয়ী হবার মতো ম্যাচ।

ক্রিকইনফোর লাইভ ম্যাচ পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা ৮৫.৭৯ শতাংশ, যেখানে পাকিস্তানের সম্ভাবনা মাত্র ১৪.২১ শতাংশ। এটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে স্বাগতিক দল শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং এই ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার হাতছানি দিচ্ছে।

বাংলাদেশের একাদশ

তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকের আলি, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ।

প্রথম ইনিংস শেষে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ স্পষ্ট। ব্যাটাররা যদি দায়িত্ব নিয়ে খেলেন, তবে ম্যাচটি সহজেই নিজেদের করে নিতে পারবে স্বাগতিকরা। পাকিস্তানের ব্যাটিং দুর্বলতা ও বাংলাদেশের বল হাতে দারুণ শৃঙ্খলা, এই ম্যাচে জয়ের মূল রসদ হয়ে উঠতে পারে। দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগারদের ব্যাটিং কেমন হয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ