ঢাকা, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ঘরে বসে এনআইডি আবেদন ২০২৫: ধাপে ধাপে পুরো নিয়ম জানুন

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ২০ ১৩:০৫:৪৫
ঘরে বসে এনআইডি আবেদন ২০২৫: ধাপে ধাপে পুরো নিয়ম জানুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল। এটি শুধু ভোটার হওয়ার সুযোগই দেয় না, পাশাপাশি ব্যাংকিং, মোবাইল সিম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, চাকরি, শিক্ষা, চিকিৎসা—সবক্ষেত্রে অপরিহার্য একটি পরিচয়পত্র।

আগে এনআইডি করতে হলে সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হতো। তবে এখন ২০২৫ সাল থেকে এনআইডির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ ও অনলাইনভিত্তিক হয়েছে। ঘরে বসেই আপনি সম্পূর্ণ অনলাইন পদ্ধতিতে এনআইডি আবেদন করতে পারবেন।

কে এনআইডির জন্য আবেদন করতে পারবেন?

যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক যার বয়স ১৬ বছর বা তার বেশি, তিনি এনআইডির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়ার জন্য অবশ্যই ১৮ বছর পূর্ণ হতে হবে।

ঘরে বসে এনআইডি আবেদন করার ধাপসমূহ (২০২৫ আপডেট)

১. ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন শুরু করুন

জাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান:

https://services.nidw.gov.bd

‘Apply for NID’ বা ‘নতুন নিবন্ধন’ অপশন সিলেক্ট করুন।

২. ব্যক্তিগত তথ্য দিন

আপনার নাম, পিতামাতা ও অভিভাবকের নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করুন।

৩. মোবাইল নম্বর যাচাই (OTP ভেরিফিকেশন)

ফর্ম পূরণ শেষে মোবাইল নম্বর দিন।

আপনার নম্বরে একটি OTP (একবার ব্যবহারযোগ্য কোড) যাবে, সেটি দিয়ে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।

৪. ছবি ও ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করুন

আবেদন ফর্মের সঙ্গে আপনাকে একটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং নিম্নোক্ত যেকোনো একটি ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি দিতে হবে:

জন্ম নিবন্ধন সনদ

পাসপোর্ট

এসএসসি/সমমান সনদপত্র

৫. আবেদন সাবমিট ও স্লিপ প্রিন্ট

আবেদন জমা দেওয়ার পর একটি অ্যাপ্লিকেশন স্লিপ বা ট্র্যাকিং নম্বর পাওয়া যাবে।

এটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন, ভবিষ্যতে প্রয়োজন হবে।

বায়োমেট্রিক ও তথ্য যাচাই কীভাবে হবে?

আবেদনের পর নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় অফিস থেকে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি কল/মেসেজ আসবে। এতে নির্ধারিত তারিখ ও সময় উল্লেখ থাকবে। সেই সময় আপনাকে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে দিতে হবে:

আঙুলের ছাপ (Fingerprint)

চোখের রেটিনা স্ক্যান

ছবি তোলা (সাইটে সরাসরি তোলা হবে)

কীভাবে এনআইডি কার্ড পাবেন?

তথ্য যাচাই ও বায়োমেট্রিক গ্রহণের পর আপনি:

ডিজিটাল NID কার্ড PDF ফরম্যাটে ওয়েবসাইটে লগইন করে ডাউনলোড করতে পারবেন।

স্মার্ট (প্লাস্টিক) কার্ড ডাকযোগে বা অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন—এটি পেতে কিছু সময় লাগতে পারে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একনজরে:

জন্ম নিবন্ধন সনদ / পাসপোর্ট / এসএসসি সনদ (যেটি প্রযোজ্য)

অভিভাবকের এনআইডি নম্বর (ঐচ্ছিক)

ছবি (অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রে তোলা হয়)

কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

আপনার নাম, ঠিকানা ও জন্ম তারিখের বানান যেন জাতীয়ভাবে একরকম থাকে (জন্মসনদ, সার্টিফিকেট ও এনআইডিতে)।

সঠিক মোবাইল নম্বর দিন, যেন নির্বাচন কমিশন সহজেই যোগাযোগ করতে পারে।

কোনও তথ্য ভুল হলে তা পরে সংশোধন করতে সময় ও খরচ বেশি হয়।

২০২৫ সালে এনআইডি আবেদন করা আর আগের মতো সময়সাপেক্ষ বা জটিল নয়। ঘরে বসে অনলাইন ফর্ম পূরণ, ডকুমেন্ট আপলোড, বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া—এই কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করলেই আপনি সহজেই পেতে পারেন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার জানলে সরকারি সেবা পাওয়াও এখন হাতের মুঠোয়।

এখনই আবেদন করতে চান?

https://services.nidw.gov.bd

FAQ ও উত্তর

প্রশ্ন ১: ঘরে বসে এনআইডি আবেদন করা যাবে কীভাবে?

উত্তর: জাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে Apply for NID অপশনে ক্লিক করে প্রাথমিক তথ্য দিয়ে, ডকুমেন্ট আপলোড করে ও মোবাইল নম্বর ভেরিফাই করে আবেদন করা যায়।

প্রশ্ন ২: এনআইডি পাওয়ার জন্য কোন কোন কাগজপত্র লাগে?

উত্তর: জন্ম নিবন্ধন সনদ, পাসপোর্ট বা এসএসসি সনদ (যেটা প্রযোজ্য), পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও মোবাইল নম্বর প্রয়োজন।

প্রশ্ন ৩: স্মার্ট কার্ড কতদিনে পাওয়া যাবে?

উত্তর: বায়োমেট্রিক ও তথ্য যাচাইয়ের পর ডিজিটাল কার্ড দ্রুতই ডাউনলোড করা যায়, তবে স্মার্ট কার্ড হাতে পেতে কিছুটা সময় লাগে।

প্রশ্ন ৪: কত বছর বয়সে এনআইডির জন্য আবেদন করা যায়?

উত্তর: ১৬ বছর বয়সে এনআইডির জন্য আবেদন করা যায়, তবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে হলে ১৮ বছর হতে হবে।

প্রশ্ন ৫: মোবাইল নম্বর ভুল দিলে কী হবে?

উত্তর: ভুল নম্বর দিলে OTP পাওয়া যাবে না এবং নির্বাচন অফিসের যোগাযোগে সমস্যা হবে, তাই সঠিক নম্বর দেওয়া জরুরি।

জামিরুল ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ