ঢাকা, সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

MD Zamirul Islam

Senior Reporter

পিনাকী নিজেই এনসিপির সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১১:২১:২৮
পিনাকী নিজেই এনসিপির সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্রান্সে নির্বাসিত চিকিৎসক, লেখক ও জনপ্রিয় ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য তার সাম্প্রতিক এক ভিডিওতে রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে ওঠা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতা, বিশেষ করে বিএনপির ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছেন। এছাড়া, বিদেশে থাকা অ্যাক্টিভিস্টদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব এবং এর পেছনের সম্ভাব্য ষড়যন্ত্রের দিকেও তিনি আলোকপাত করেন।

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্ক: উপদেষ্টা নই, সমালোচক

ভিডিওর প্রায় ৬ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের দিকে পিনাকী ভট্টাচার্য স্পষ্ট করে বলেন যে, এনসিপির সঙ্গে তার কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই। অনেকেই তাকে এনসিপির "আধ্যাত্মিক নেতা" বা "প্রেসিডেন্ট" হিসেবে মনে করলেও তিনি জানান, দলটি তার সঙ্গে ভয়েই যোগাযোগ করে না, কারণ তিনি তাদের ভুল পদক্ষেপের জন্য সরাসরি তিরস্কার করেন। তিনি বলেন, "এনসিপির ওরা আমারে ডরেই যোগাযোগ করে না। কারণ যোগাযোগ করলে আগে ঝাড়ি খায়।"

পিনাকী আরও জানান, এনসিপির পক্ষ থেকে তাকে উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "আমি এই সমস্ত [গালি] উপদেষ্টা হবো না। কারণ তোমরা তো আমার উপদেশই শোনো না।" তিনি উদাহরণ হিসেবে এনসিপির "আলেম উইং" গঠন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির মতো পদক্ষেপগুলোর সমালোচনা করেন, যা তার উপদেশের পরিপন্থী ছিল। তিনি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র ক্যাপ্টেন হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গেই তার নিয়মিত যোগাযোগ হয়।

বিরোধী দলগুলোর ব্যর্থতা ও সেনাবাহিনীর উত্থান

পিনাকী তার ভিডিওতে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর একটি শক্তিশালী জাতীয় সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতাকে। তিনি বলেন, জনাব তারেক রহমানের কাছে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, তখন বিএনপি সেই সুযোগ গ্রহণ না করে নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থে নির্বাচনমুখী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তার মতে, এই "বালকসুলভ আত্মকেন্দ্রিকতা"-এর কারণেই বিপ্লবের শক্তি থাকা সত্ত্বেও তারা ক্ষমতা থেকে দূরে সরে যায় এবং একটি ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি হয়।

অ্যাক্টিভিস্টদের দ্বন্দ্ব ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

ভিডিওর একটি বড় অংশজুড়ে ছিল অ্যাক্টিভিস্ট নাহিদ ইসলাম এবং জুলকারনাইন সায়েরের মধ্যকার চলমান দ্বন্দ্ব। নাহিদের ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে পিনাকী বলেন, জুলকারনাইন সায়ের নাকি সেনাবাহিনীর একটি অংশকে দিয়ে "আর্মি ক্যু" করানোর চেষ্টা করেছিলেন। অন্যদিকে, জুলকারনাইনের পাল্টা পোস্টে দাবি করা হয় যে, ছাত্র আন্দোলনের দুজন সমন্বয়ক ডিজিএফআই-এর গেস্ট হাউসে "পোলাও, চিকেন রোস্ট এবং শামী কাবাব" খাচ্ছিলেন।

পিনাকী এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগকে "বিপ্লব নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র" হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, জুলকারনাইন কীভাবে ডিজিএফআই-এর গেস্ট হাউসের ভেতরের খবর জানেন? এই দ্বন্দ্বের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, বিপ্লবের শক্তিকে বিভক্ত করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, যার পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তি জড়িত থাকতে পারে।

সবশেষে পিনাকী ভট্টাচার্য দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বিপ্লবের আগুন একবার জ্বলে উঠলে তা নেভে না। তার মতে, রাজনৈতিক দলগুলোর কপটতা এবং ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও ছাত্র-জনতার এই জাগরণ বৃথা যাবে না। "ইনকিলাব জিন্দাবাদ" স্লোগান দিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন, যা একটি নতুন ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশের প্রতি তার আকাঙ্ক্ষারই প্রতিধ্বনি।

আরও বিস্তারিত জানতেভিডিওতে দেখুন

জামিরুল ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ