ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

বাচিমে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মহিউদ্দিন রনিসহ ৪২ জনের নামে মামলা

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১৪:০০:৪৯
বাচিমে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মহিউদ্দিন রনিসহ ৪২ জনের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় এবার উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল বাদী হয়ে মহিউদ্দিন রনিসহ ৪২ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দাখিল করেছেন। এর মধ্যে ১২ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে এবং বাকি ৩০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি।

মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মামলার আবেদন জমা পড়েছে। “এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে,” বলেন তিনি।

পরিচালকের পক্ষ থেকে মামলা

মামলার বাদী জুয়েল চন্দ্র শীল বলেন, “আসলে মামলাটি হাসপাতালের পরিচালকের পক্ষ থেকেই করা হয়েছে, আমি কেবল বাদী হিসেবে স্বাক্ষর করেছি। আমরা হামলা করিনি, বরং আন্দোলনকারীরা হামলা করতে এসেছিল, আমরা প্রতিরোধ করেছি।”

এজাহারের অভিযোগ

এজাহারে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনের সড়কে নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবিতে অধ্যক্ষ, পরিচালক, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা মানববন্ধন করছিলেন। এ সময় মহিউদ্দিন রনির নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন লোহার রড, চাপাতি, এসএস পাইপ, হকিস্টিক ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। অভিযোগে বলা হয়, রনি প্রথমেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী রফিকুল পাটোয়ারির মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হন এবং নার্স-আয়াদের শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়। পরে হামলাকারীরা মানববন্ধনকারীদের হত্যার হুমকি দেয়।

আসামিদের মধ্যে রাকিন, সুনান, সিফাত, শামিম, আল মুসা, সিফা, দাইয়ান, কাফি, এইচএম আবুল খায়ের, নূরুন নাহার ও সিয়ামের নাম রয়েছে। অধিকাংশই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কয়েকজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরও আছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভিন্ন চিত্র

তবে ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা গেছে, ঘটনার শুরু হাসপাতালের ভেতরে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির সিকদার মায়ের চিকিৎসা করাতে এসে চিকিৎসা বন্ধ রেখে কর্মচারী-নার্সদের মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানালে তাকে ও তার মাকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। এরপর কর্মচারীরা বিক্ষোভে যোগ দিয়ে ফিরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়, টেনে-হিঁচড়ে বের করে দেয় এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থীদেরও আন্দোলনকারী ভেবে মারধর করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, মামলার তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের অনেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

মহিউদ্দিন রনির অভিযোগ

আন্দোলনের নেতা মহিউদ্দিন রনি বলেন, “স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উস্কানিতে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা যে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লড়ছি, তারা মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে আন্দোলন থামাতে চাইছে। সহযোদ্ধারা সুস্থ হলে আমরা আবার কর্মসূচিতে ফিরব।”

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ