ঢাকা, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি! শেয়ারবাজারে উড়ছে ১৭ খাত

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১৮:৪৫:৫১
বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি! শেয়ারবাজারে উড়ছে ১৭ খাত

বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (৩১ আগস্ট থেকে ০৪ সেপ্টেম্বর) এক অভূতপূর্ব গতিশীলতা প্রদর্শন করেছে। এই সময়ে বাজারের প্রধান সূচক ৯৬.৩৩ পয়েন্ট, অর্থাৎ ১.৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ হাজার ৬১৪.২৮ পয়েন্টে স্থিতিশীল হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। একই সাথে, মোট লেনদেনের পরিমাণ ৬ হাজার ৪৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় পৌঁছেছে, যা পূর্ববর্তী সপ্তাহের চেয়ে ৭৬২ কোটি টাকা বেশি, যা বাজারের তারল্য বৃদ্ধিতে এক ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।

এই শক্তিশালী পারফরম্যান্সের পেছনে ১৭টি খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। এই খাতগুলোতে সম্মিলিতভাবে ১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৫১ কোটি টাকা বেশি। এই প্রবৃদ্ধি খাতের সুনির্দিষ্ট শক্তি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির প্রতিফলন।

গতিশীলতার শীর্ষে তথ্যপ্রযুক্তি:

লেনদেন বৃদ্ধির এই রথে সবচেয়ে বেশি গতি দেখিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত। এই সপ্তাহে ৯৪ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৯৬ শতাংশের এক বিশাল উল্লম্ফন। এটি প্রযুক্তি খাতের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং সম্ভাবনাকে তুলে ধরে।

টেলিকম ও আর্থিক খাতের শক্তিশালী অবস্থান:

তথ্যপ্রযুক্তির পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল টেলিকমিউনিকেশন খাত, যেখানে ৩৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, যা সপ্তাহওয়ারি প্রায় ৮৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপরেই ছিল আর্থিক খাত, যেখানে ৩৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৮৪.৫৭ শতাংশ বেশি। এই তিনটি খাত বাজারের মোট প্রবৃদ্ধিতে এক বিশাল অবদান রেখেছে।

অন্যান্য খাতের ধারাবাহিক উন্নতি:

শুধু শীর্ষ তিন খাতই নয়, অন্যান্য বেশ কয়েকটি খাতও শক্তিশালী পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। বিবিধ খাতে লেনদেন বেড়েছে ৫০.৯৬% (৮০.৯০ কোটি টাকা), ব্যাংক খাতে ৪৬.৫০% (১৪৯.৯৬ কোটি টাকা), সিমেন্ট খাতে ৪৩.০৭% (১৬.২৪ কোটি টাকা) এবং সিরামিক খাতে ৩৬.৪২% (২১.১৪ কোটি টাকা)।

এছাড়া, সেবা ও আবাসন খাতে ৩১.৬৩% (২১.৭৪ কোটি টাকা), প্রকৌশল খাতে ২৪.৬৯% (১২৬.৬৮ কোটি টাকা), মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ২০.৭৬% (১৪.৩৯ কোটি টাকা) এবং লাইফ ইন্স্যুরেন্স খাতে ১৭.১৪% (৭৪.০৮ কোটি টাকা) লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে।

তুলনামূলকভাবে কম হলেও, করপোরেট বন্ড (১০.৬০ লাখ টাকা, ১৪.৩৭% বৃদ্ধি), ট্যানারি (১৫.১১ কোটি টাকা, ১২.৯৭% বৃদ্ধি), খাদ্য ও আনুষঙ্গিক (৯৬.১৮ কোটি টাকা, ১০.৩৪% বৃদ্ধি) এবং ওষুধ ও রসায়ন (১৭৯.৪০ কোটি টাকা, ৫.১৭% বৃদ্ধি) খাতগুলোও বাজারের এই ইতিবাচক ধারাকে শক্তিশালী করেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ব্যাপক ভিত্তিক প্রবৃদ্ধি এবং তারল্য বৃদ্ধি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি সুস্থ ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করছে।

আমিনুল ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ