ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২

Zakaria Islam

Senior Reporter

'এটা নির্বাচন নয়, নোংরামি'! তামিমের পদক্ষেপে বিসিবিতে মহাপ্রলয়

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৩:০৪:১২
'এটা নির্বাচন নয়, নোংরামি'! তামিমের পদক্ষেপে বিসিবিতে মহাপ্রলয়

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক সফল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। একসময়ে বোর্ডের সক্রিয় সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও, শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহারের মাধ্যমে তিনি ক্রিকেট অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তার সঙ্গে আরও ১৪-১৫ জন হেভিওয়েট প্রার্থীর এই গণ-প্রত্যাহার দেশের ক্রিকেট প্রশাসনে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

'এটা কোনো নির্বাচন নয়' - তামিমের বিস্ফোরক মন্তব্য:

গতকাল থেকেই তামিমের সরে দাঁড়ানোর গুঞ্জন চলছিল, যা আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেন তিনি। বিসিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তামিম বলেন, "আপনারা জানেন যে আজকে আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। আমি সহ প্রায় ১৪-১৫ জন প্রার্থী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর কারণ অত্যন্ত স্পষ্ট, যা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।"

আগামী ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য এই প্রক্রিয়াকে 'নির্বাচন' বলতে নারাজ তামিম। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, "আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি, এই তথাকথিত নির্বাচন কোন দিকে যাচ্ছে, কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তা এখন সবার কাছেই দিবালোকের মতো পরিষ্কার। যখন যা খুশি তাই করা হচ্ছে। এটিকে কোনো অর্থেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বলা চলে না। ক্রিকেটের মতো একটি সম্মানজনক খেলার সঙ্গে এই ধরণের প্রক্রিয়া কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।"

হেভিওয়েটদের সম্মিলিত প্রতিবাদ:

কেন এই গণ-প্রত্যাহার? এই প্রশ্নের জবাবে তামিম ইকবালের মন্তব্য ছিল আরও ধারালো। তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হলেই আপনারা বুঝতে পারবেন, যারা সরে দাঁড়িয়েছেন তাদের প্রায় সবাই ক্রিকেট অঙ্গনের পরিচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। এটি আমাদের সম্মিলিত প্রতিবাদ যে, আমরা এই 'নোংরামির' অংশ হতে চাই না। বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী এমন প্রহসনমূলক একটি প্রক্রিয়ার যোগ্য নয়।"

তামিম আরও উল্লেখ করেন যে, অনেক প্রার্থীই প্রত্যাহার করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। "আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আরও অনেক প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারের ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তাদের ওপর নানা দিক থেকে চাপ সৃষ্টি করে নিরস্ত করা হয়েছে। তবে ১৫ জনের মতো প্রার্থীর সরে দাঁড়ানোটাও কিন্তু কম নয়, এটি মোট প্রার্থীর প্রায় ৫০ শতাংশ! এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য আমি ভবিষ্যতে প্রকাশ করব।"

'ক্রিকেট হেরে গিয়েছে' - বিসিবির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়:

নিজের বক্তব্যের উপসংহারে তামিম ইকবাল এই নির্বাচনকে বিসিবির ইতিহাসে এক 'কালো অধ্যায়' হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, "বর্তমান বোর্ড সদস্যরা যেভাবে এই নির্বাচন পরিচালনা করছেন, তাতে হয়তো তারা জয়ী হতে পারেন। কিন্তু এটিকে কোনোভাবেই একটি প্রকৃত নির্বাচন বলা যায় না। যা-ই ঘটুক না কেন, শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটেরই পরাজয় হয়েছে। যারা ক্রিকেটে ফিক্সিং বন্ধ করার কথা বলেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আগে আপনারা এই নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করুন। এই তথাকথিত নির্বাচন বিসিবির ইতিহাসে একটি লজ্জাজনক কালো দাগ হয়ে থাকবে।"

তামিম ইকবালের এই বিস্ফোরক মন্তব্য দেশের ক্রিকেটে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার এই সাহসী অবস্থান দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ