
MD. Razib Ali
Senior Reporter
বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে বিএসইসি’র নতুন পদক্ষেপ

দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে সহজ করতে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করলো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি, সংস্থাটি দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের জন্য নতুন দুটি বিরোধ নিষ্পত্তি প্রবিধানমালা অনুমোদন করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর এক বৈঠকে 'ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বিরোধ নিষ্পত্তি) প্রবিধানমালা, ২০২৫' এবং 'চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (বিরোধ নিষ্পত্তি) প্রবিধানমালা, ২০২৫' বিএসইসি কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এটি শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
কেন এই পরিবর্তন?
বিএসইসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই উদ্যোগের প্রধান উদ্দেশ্য হলো সালিশ প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও কার্যকর করা। ব্রোকারেজ হাউজ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে জমা পড়া অভিযোগের সংখ্যা কমানো এবং এর ফলে কমিশনের ওপর থেকে আইনি ও প্রশাসনিক চাপ কমানো।
বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘকাল ধরে ব্রোকারেজ হাউজ ও তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সাথে ছোটখাটো সমস্যা মোকাবিলা করে আসছিলেন। অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া জটিল এবং সময়সাপেক্ষ হওয়ায় তারা পিছিয়ে যেতেন। এমনকি অভিযোগ দায়ের করলেও, সেগুলোর নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ সময় লাগত। নতুন এই প্রবিধানমালা এই সমস্যাগুলোর একটি স্থায়ী সমাধান দেবে বলে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন।
নতুন প্রবিধানমালায় কী থাকছে?
এই নতুন প্রবিধানমালা অনুযায়ী, প্রতিটি স্টক এক্সচেঞ্জ একটি করে বিশেষ সালিশ প্যানেল বা 'বিরোধ নিষ্পত্তি বোর্ড' গঠন করবে। এই প্যানেলের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন রেজিস্ট্রারও নিয়োগ দেওয়া হবে। রেজিস্ট্রার হবেন সংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জের নিয়ন্ত্রণমূলক বিভাগের একজন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বা সমমানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
সালিশ প্যানেলে দেশের স্বনামধন্য ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা থাকবেন, যার মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, প্রথিতযশা আইনজীবী এবং শেয়ারবাজারের দক্ষ পেশাদাররা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
অভিযোগ দায়ের ও নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া সহজীকরণ
বিনিয়োগকারীরা এখন একটি নির্দিষ্ট ফর্মে রেজিস্ট্রারের কাছে তাদের অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন। রেজিস্ট্রার তখন অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত পক্ষ – যেমন ব্রোকার বা তালিকাভুক্ত কোম্পানি – উভয়ের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আলোচনার ব্যবস্থা করবেন।
যদি প্রাথমিক আলোচনায় কোনো সমাধান না হয়, তবে বিষয়টি সালিশ প্যানেলের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এখানে প্রতিটি পক্ষ অনুমোদিত তালিকা থেকে নিজস্ব সালিশকারী নির্বাচন করার সুযোগ পাবে। সাক্ষ্য গ্রহণ এবং প্রাসঙ্গিক নথি পর্যালোচনার পর সালিশকারীরা তাদের রায় প্রদান করবেন। এই রায় সর্বসম্মতিক্রমে বা সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তে প্রদান করা যেতে পারে, এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। প্রয়োজনে, যেকোনো পক্ষ – বিনিয়োগকারী, ব্রোকার বা কোম্পানি – বিএসইসি বা আদালতে আপিল করার অধিকার রাখবে।
এখন থেকে বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি’র অনলাইন অভিযোগ মডিউল এবং সংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জের সালিশ ইউনিট – উভয় মাধ্যমেই অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। ছোটখাটো বিরোধগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট এক্সচেঞ্জে পাঠানো হবে, যা এক্সচেঞ্জগুলোর সালিশ বিভাগকে আরও শক্তিশালী করবে। এই ব্যবস্থার ফলে এক্সচেঞ্জগুলো বিনিয়োগকারীদের সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী তাদের অভ্যন্তরীণ পরিচালন কাঠামো উন্নত করতে পারবে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত আইনি সংস্কার
স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের একটি কার্যকর বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া চালু করার উদ্যোগ ২০১৯ সাল থেকেই বিচারাধীন ছিল। সরকারি গেজেটে প্রকাশের পরই এই প্রবিধানমালা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হবে।
বিএসইসি-এর মুখপাত্র মো. আবুল কালাম গণমাধ্যমকে বলেন, "সালিশ প্যানেলগুলো চালু হলে, অনেক বিনিয়োগকারীর অভিযোগ প্রাথমিক পর্যায়েই নিষ্পত্তি হয়ে যাবে, যার ফলে কমিশনের ওপর চাপ অনেক কমবে।" তিনি আরও যোগ করেন যে, বর্তমানে বিএসইসি-কে বিপুল সংখ্যক অভিযোগ তদন্ত এবং শুনানির ব্যবস্থা করতে হয়। "এই প্রবিধানগুলো যদি আগে চালু থাকত, তবে অনেক বিরোধ এক্সচেঞ্জ স্তরেই সমাধান করা যেত," তিনি মন্তব্য করেন।
তাঁর মতে, এই ধরনের প্রক্রিয়া আগে থাকলে অসাধু ব্রোকারদের দ্বারা বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অনেক ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হতো। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ অনুযায়ী, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর নিজস্ব প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা রয়েছে। তাই, সালিশ প্যানেলগুলোর রায়ের একটি শক্তিশালী আইনি ভিত্তি থাকবে।
এই নতুন প্রবিধানমালা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং একটি নিরাপদ বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরিতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আল-মামুন/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- চলছে বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ওয়ানডে ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- আজ বাংলাদেশ বনাম হংকং ম্যাচ: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- আজ ব্রাজিল বনাম দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচ: কখন, কোথায় ও কিভাবে লাইভ দেখবেন
- আগামীকাল বাংলাদেশ বনাম হংকং ম্যাচ: কখন, কোথায় ও কিভাবে দেখবেন লাইভ
- কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ওয়ানডে ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- মুখোমুখি হচ্ছে ব্রাজিল বনাম দক্ষিণ কোরিয়া: জানুন সময়সূচি ও স্কোয়াড
- বাংলাদেশ বনাম হংকং: লস টাইমে দুই গোল, শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- আজকের খেলার সময়সূচি:বাংলাদেশ বনাম হংকং,বিশ্বকাপ বাছাই
- চলছে বাংলাদেশ বনাম হংকং ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- আজ বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ১ম ওয়ানডে: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- চলছে বাংলাদেশ বনাম হংকং ম্যাচ: ৭০ মিনিটের খেলা শেষ, লাইভ দেখুন এখানে
- আজ বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ১ম ওয়ানডে: লাইভ দেখার সহজ উপায়
- অবিশ্বাস্য ভাবে শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- ডিগ্রি ২য় বর্ষের ফল প্রকাশ: ফলাফল দেখুন এখানে
- আজ বাংলাদেশ বনাম হংকং ম্যাচ: মোবাইল ও টিভিতে লাইভ দেখার সহজ উপায়