ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

দু্ই কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি: ডিএসইর সতর্কবার্তা

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১৫:৫০:১৪
দু্ই কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি: ডিএসইর সতর্কবার্তা

ঢাকা, ০৯ অক্টোবর: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানি – কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং ন্যাশনাল ফিড মিলস লিমিটেড – এর শেয়ারদরের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কোনো রকম মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই এই দরবৃদ্ধি ঘটায় ডিএসই কোম্পানি দুটির কাছে কারণ জানতে চেয়ে চিঠি পাঠায়। জবাবে উভয় কোম্পানিই জানিয়েছে, তাদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই যা এই দরবৃদ্ধিকে সমর্থন করে।

অস্বাভাবিক উত্থান ও ডিএসইর জিজ্ঞাসা

শেয়ারবাজারের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো কোম্পানির শেয়ারদরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা স্টক এক্সচেঞ্জ তার কারণ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে চিঠি পাঠায়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য বা কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়ানো হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করা এবং বাজারের স্বচ্ছতা ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা।

ডিএসইর চিঠির জবাবে কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং ন্যাশনাল ফিড মিলস লিমিটেড উভয়ই নিশ্চিত করেছে যে, তাদের কাছে এমন কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই যা তাদের শেয়ারদরের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে। কোম্পানি দুটি নিজেরাও এই দরবৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

কে অ্যান্ড কিউ: ২১% এর বেশি বৃদ্ধি

কে অ্যান্ড কিউ এর শেয়ারদর গত কয়েক কার্যদিবসে চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৩৪৪ টাকা ২০ পয়সা। যা ৮ অক্টোবর লেনদেন শেষে ৪১৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৭২ টাকা ৮০ পয়সা বা ২১.১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে কে অ্যান্ড কিউ শেয়ারহোল্ডারদের ৩ শতাংশ ক্যাশ ও ২ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

ন্যাশনাল ফিড: ১৪ দিনে ৩০% এর বেশি উর্ধ্বগতি

অন্যদিকে, ন্যাশনাল ফিড মিলসের শেয়ারদরেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৯ টাকা ১০ পয়সা। মাত্র ১৪ কার্যদিবসের ব্যবধানে, ৮ অক্টোবর লেনদেন শেষে এটি বেড়ে ১১ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, এই সময়ে শেয়ারটির দর ২ টাকা ৮০ পয়সা বা ৩০.৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, ন্যাশনাল ফিড মিলস ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।

বিনিয়োগকারীদের জন্য বার্তা

দুই কোম্পানির এমন অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের প্রশ্ন তৈরি করেছে। যখন কোনো কোম্পানির শেয়ারদর কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ বা ইতিবাচক সংবাদের ভিত্তিতে বাড়ে না, তখন তা বাজারে কারসাজির আশঙ্কা তৈরি করে। ডিএসইর এই সতর্কবার্তা বিনিয়োগকারীদের আরও সচেতন হতে এবং কোনো গুজবের ভিত্তিতে বিনিয়োগ না করার ইঙ্গিত দেয়। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের উচিত কোম্পানির মৌলিক বিষয়াদি এবং প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাতে তারা অপ্রত্যাশিত ক্ষতির শিকার না হন।

বিশেষজ্ঞদের মত

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়া শেয়ারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি প্রায়শই স্বল্পমেয়াদী হয় এবং পরবর্তীতে দ্রুত দরপতনের ঝুঁকি থাকে। ডিএসই বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এখানে কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ) লিমিটেড এর একটি কাল্পনিক শেয়ারবাজার গ্রাফ দেখানো হলো।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ