ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

কোন ব্যাংকে টাকা রাখা হারাম, আপনার জন্য জানা জরুরি

ধর্ম ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২০ ২২:৪০:২৩
কোন ব্যাংকে টাকা রাখা হারাম, আপনার জন্য জানা জরুরি

ইসলামী ব্যাংকিং-এ কেন লেনদেন জরুরি? সুদভিত্তিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে সতর্কবার্তা

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সঞ্চয় এবং লেনদেনের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট একটি অপরিহার্য প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, কোন ধরণের ব্যাংকে লেনদেন করা উচিত—বিশেষত মুসলিমদের জন্য—সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন ইসলামী চিন্তাবিদরা।

একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে, ইসলামী বক্তা উল্লেখ করেন যে, যে ব্যাংকগুলোতে সুদের লেনদেন হয়, সেখানে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা এবং সেই নীতি মেনে নেওয়া প্রায় এক জিনিস। ইসলামে সুদকে শুধু হারামই করা হয়নি, বরং এর বিরুদ্ধে আল্লাহ তাআলা যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তাই একজন মুসলমানের জন্য সুদভিত্তিক লেনদেন বা অ্যাকাউন্ট খোলা কোনোভাবেই জায়েজ নয়।

ইসলামী ব্যাংকিং-এ লেনদেন: বিকল্প পথের সন্ধান

বক্তা পরামর্শ দেন, এই পরিস্থিতিতে নিরাপদ লেনদেনের জন্য দুটি পথ অবলম্বন করা যেতে পারে:

১. পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক: সরাসরি কোনো ইসলামী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা।

২. ইসলামিক উইন্ডো বা ডিপার্টমেন্ট: প্রচলিত বা কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেখানে শরীয়াহ-সম্মত ইসলামী ব্যাংকিং উইং বা বিভাগ আছে, সেখানে লেনদেন করা।

টাকা-পয়সা ঘরে রাখা অনিরাপদ হওয়ায়, একান্ত প্রয়োজনীয় লেনদেনের জন্য ইসলামী ব্যাংকিং-এর এই বিকল্পগুলো ব্যবহারের চেষ্টা করা উচিত।

ইসলামী ব্যাংকিং-এ চ্যালেঞ্জ: তবে কেন উত্তম?

প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামী ব্যাংকিং উইংগুলো শতভাগ শরীয়াহ-সম্মত কিনা, এ নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বক্তা দুটি কারণে সেগুলোতে লেনদেনের পক্ষে মত দেন:

১. নীতিগত অবস্থান: ইসলামী ব্যাংক বা উইংগুলোতে অন্তত সুদকে হারাম মনে করা হয় এবং তা থেকে বাঁচার চেষ্টা থাকে। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি হারামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন।

২. সরাসরি সুদ পরিহার: সরাসরি সুদভিত্তিক লেনদেনের মধ্যে প্রবেশ করা এবং সুদকে স্বাভাবিক মনে করার চেয়ে, চেষ্টা করা বা বিকল্প পথ অবলম্বন করা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।

তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন, যে ব্যাংক ইসলামী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করে না এবং তাদের টাকা দিয়ে সুদভিত্তিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে, সেই ধরণের ব্যাংকে লেনদেন করা পারতপক্ষে একজন ইমানদারের জন্য উচিত নয়। তবে যদি কেউ নিরুপায় হন এবং অন্য কোনো বিকল্প না থাকে, তবে কেবল তার অর্থের নিরাপত্তা বা সেফটির জন্য সেখানে টাকা রাখতে পারেন, কিন্তু কোনোভাবেই সেখান থেকে লভ্যাংশ খাওয়া বা সুদের স্কিমে অর্থ রাখার চেষ্টা করা উচিত নয়।

ছাত্র জীবনের করণীয়: মনোযোগ দিন পড়ায়

এক মাদ্রাসা ছাত্রের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সমাজের জন্য কাজ করার মানসিকতা প্রশংসনীয়। তবে নাহ্ব-মিম জামাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক পর্যায়ে একজন ছাত্রের প্রধান কাজ হলো মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করা এবং জ্ঞানের ভিত্তি মজবুত করা। সামাজিক কাজ বা জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ার চিন্তা করার সময় আসবে আরও পরে, যখন জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। সময়ের কাজ সময়মতো করাই উত্তম। টাকা-পয়সার অভাব যেন সেবামূলক কাজ থেকে বিরত না রাখে। বরং মানসিকতা, আন্তরিকতা, ইখলাস এবং প্রচেষ্টাই সেবামূলক কাজের প্রধান পুঁজি হওয়া উচিত।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ