ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে আবার নতুন করে যা জানা গেল

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১৮:৫৮:০৩
হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে আবার নতুন করে যা জানা গেল

চলতি বছরের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র সংক্রান্ত একটি দাবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবিটি হলো—"বৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জাতিসংঘে জমা না দিলে সেনাবাহিনীর উপরে নিষেধাজ্ঞা" আসতে পারে। এই দাবিতে সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে উঠেছে।

গুজব ও বিভ্রান্তি: কেন এই দাবি ছড়িয়েছে?

চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, তিনি দেশ ছাড়ার আগে পদত্যাগ করেছেন। যদিও হাসিনাপুত্র জয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে ভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেন, যা সে সময় গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এই প্রেক্ষাপটেই 'পদত্যাগপত্র জাতিসংঘে জমা না দিলে নিষেধাজ্ঞা'র মতো দাবিটি সামনে এসেছে।

ফ্যাক্টচেক: দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এই দাবিটির সত্যতা যাচাই করা হয় এবং জানা যায়, আলোচিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

আন্তর্জাতিক কোনো সিদ্ধান্ত নেই: জাতিসংঘ বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা বা দেশ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জমা না দিলে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়নি।

গণমাধ্যমে অনুপস্থিতি: আন্তর্জাতিক বা জাতীয় পর্যায়ের কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা সূত্রে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যদি জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থা এমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত নিত, তবে তা অবশ্যই মূলধারার সংবাদ হতো।

জাতিসংঘের প্ল্যাটফর্মে খোঁজ: জাতিসংঘের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং তাদের সকল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স) প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে অনুসন্ধান করেও এই দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষী কমানো: গুজবের পেছনের আসল খবর

প্রকৃতপক্ষে, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে অন্য একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ গত ১৯ অক্টোবর প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা কার্যক্রম বিভাগের মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স দপ্তর (ওএমএ) ১৪ অক্টোবর নিউইয়র্কের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

ওই চিঠিতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীর সংখ্যা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্তের উল্লেখ করা হয়েছে।

এই তথ্য প্রমাণ করে যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত "শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জাতিসংঘে জমা না দিলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা" শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণভাবে তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ