ঢাকা, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

নতুন ভূমি আইন: আর করা লাগবে না মামলা, বেদখল জমি উদ্ধার হবে মাত্র ৭ দিনেই!

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৬ ১১:১১:১৬
নতুন ভূমি আইন: আর করা লাগবে না মামলা, বেদখল জমি উদ্ধার হবে মাত্র ৭ দিনেই!

দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো প্রকার আইনি মোকদ্দমা ছাড়াই অবৈধ দখলে থাকা জমি পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি হলো। সম্প্রতি প্রণীত ভূমি আইনের কারণে এখন থেকে সম্পত্তির আসল মালিককে বছরের পর বছর আদালতের কাঠগড়ায় ঘুরতে হবে না। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে মাত্র সাত দিনের মধ্যে এই সম্পত্তি দখলমুক্ত করে স্বত্বাধিকারীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।

দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার অবসান

পূর্বে কোনো ভূমি অবৈধভাবে বেদখল হলে, আসল স্বত্বাধিকারীকে দেওয়ানি মামলা দায়ের করতে হতো। এই বিচার প্রক্রিয়া চলত দীর্ঘ সময়—কখনও এক যুগ বা তার বেশি সময় ধরে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং বিচার প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রতাকেই ভূমিদস্যু চক্রগুলো সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করত। বর্তমান আইনে সেই দীর্ঘ পথ চিরতরে রুদ্ধ করা হয়েছে।

মামলা নয়, এবার প্রশাসনিক তৎপরতা

এই নতুন পদ্ধতিতে সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য আদালতে কোনো আরজি বা মামলা দায়ের করার দরকার নেই। সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ জানানো মাত্রই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করবে।

অনুসন্ধানে মূল মালিকানা প্রমাণিত হলে, পুলিশ বা প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে জমির দখল স্বত্বাধিকারীর কাছে হস্তান্তর করবে।

যদি বিরোধটি পুরোনো এবং জটিল হয়, সেক্ষেত্রে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করে সমাধান পাওয়া যাবে।

প্রয়োজনে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামবেন এবং তিনি তদন্ত ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

প্রকৃত স্বত্ব প্রমাণে কড়াকড়ি

সম্পত্তি ফেরতের আগে কঠোরভাবে ডকুমেন্ট পরীক্ষা করা হবে। জেলা প্রশাসকের অফিসে আবেদন জমা দেওয়ার সময়, আবেদনকারীকে অবশ্যই বৈধ কাগজপত্র যেমন ক্রয়সূত্রে পাওয়া দলিল, নামজারির কপি এবং খতিয়ানের মতো নথিগুলো পেশ করতে হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই ডকুমেন্টগুলোর সত্যতা খতিয়ে দেখবেন। একবার প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত হলে, দখলদারকে অবিলম্বে উচ্ছেদ করে জমির স্বত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি পদক্ষেপ

যে সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতার অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় মামলা রুজু করা হবে। এমনকি, কেউ যদি অস্ত্র বা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে উচ্ছেদ ঠেকানোর চেষ্টা করে, তবে সেই অপরাধটিকে “অজামিনযোগ্য” হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এটি দখলদারদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি।

অর্থ ও মামলাবিহীন মীমাংসার কেন্দ্র: লিগ্যাল এইড অফিস

জমি সংক্রান্ত যেকোনো বিরোধের (বাড়ি, ওয়ারিশ, ভাগ-বণ্টন বা পারিবারিক সমস্যা) দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রত্যেকটি জেলায় গঠন করা হয়েছে লিগ্যাল এইড অফিস। এখানে কোনো প্রকার অর্থ ব্যয় ছাড়াই বা আদালতের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়াই সমাধান মিলবে। সরকারি আইনজীবী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিরোধের উভয় পক্ষকে ডেকে নিয়ে আলোচনা করবেন এবং আলোচনার ভিত্তিতে একটি কার্যকর সমাধান দেবেন।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ