ঢাকা, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২

মাশরাফিকে দিয়ে আন্ডারওয়্যার ধুয়েছিলেন মঞ্জুরুল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৭ ১৭:১৬:১৬
মাশরাফিকে দিয়ে আন্ডারওয়্যার ধুয়েছিলেন মঞ্জুরুল

বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে ক্ষমতার অপব্যবহার ও নৈতিকতার গুরুতর লঙ্ঘনের কিছু পুরোনো এবং সাম্প্রতিক ঘটনা তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষভাবে, ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলাকালীন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মঞ্জুরুল ইসলাম কুইকের বিরুদ্ধে জুনিয়র সতীর্থ, যিনি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলে ধারণা করা হয়, তাকে দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত অন্তর্বাস পরিষ্কার করানোর মতো একটি ন্যক্কারজনক কাজের অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনাটিকে সেসময় "নিকৃষ্টতম কাজ" হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল, যা অভিযুক্তের "মানসিক বিকৃতির" ফল হিসেবে গণ্য করা হয়। তৎকালীন কোচ ডেভ হোয়াটমরের তত্ত্বাবধানে এই কেলেঙ্কারির খবর বোর্ড পর্যন্ত পৌঁছালে কুইককে জাতীয় দল থেকে অপসারণ করা হয়।

নীতি নির্ধারকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নীতি নির্ধারকদের ভূমিকা নিয়ে। নৈতিকতার এমন গুরুতর স্খলন থাকা সত্ত্বেও মঞ্জুরুল ইসলামকে পরবর্তীতে নারী জাতীয় দলের নির্বাচক এবং ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেওয়ায় বোর্ডের সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ধরনের নিয়োগ প্রমাণ করে যে বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ‘ব্যক্তিত্ব’ বা ‘নৈতিক মূল্যবোধের’ চেয়ে 'জনপ্রিয় পছন্দ' অথবা 'লবিং'-কে বেশি গুরুত্ব দেন। এই সংস্কৃতিই দেশের ক্রিকেটের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।

নারীদের উপর প্রকাশ্যে নিপীড়ন

ক্রীড়াঙ্গনে সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে ক্ষমতার এই অপব্যবহারকে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘র‍্যাগিং’-এর সঙ্গে তুলনা করে জাতীয় দলের অভ্যন্তরে ‘প্রকাশ্যে নিপীড়ন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। বোর্ডের দুর্বল প্রশাসনিক পদক্ষেপের কারণেই এই ধরনের মানসিকতা দীর্ঘদিন ধরে জিইয়ে আছে।

এর ফলস্বরূপ, সম্প্রতি নারী ক্রিকেটারদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা গেছে। সাবেক তারকা জাহানারা আলম প্রায় দুই থেকে তিন বছর আগে (২০২২-২৩ সালের কাছাকাছি) নারী দলের অভ্যন্তরে শারীরিক নিগ্রহ, যার মধ্যে চড় মারার অভিযোগও ছিল, তা উত্থাপন করেছিলেন। তবে বিসিবি সেই অভিযোগ নিয়ে যথাযথ তদন্ত না করে কেবল একটি বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত হয়।

আক্ষেপের বিষয় হলো, নারী খেলোয়াড়রা প্রায়শই ঊর্ধ্বতনদের কাছ থেকে আসা নিপীড়ন বা চড়-থাপ্পড়ের মতো অভিযোগগুলো লিখিতভাবে বোর্ডের কাছে পেশ করতে সাহস পান না। এই ধরনের ঘটনাগুলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাম্প্রতিক সাফল্যকে আড়ালে ফেলে দিচ্ছে এবং বোর্ডের দুর্বল নজরদারিকেই আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ