ঢাকা, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

পে স্কেল : জোটবদ্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা, সামনে এলো যেসব তথ্য

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৫:২৮:১০
পে স্কেল : জোটবদ্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা, সামনে এলো যেসব তথ্য

ঢাকা: সরকারি কর্মজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো কার্যকরের বিষয় নিয়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় পে কমিশন গঠন করলেও, সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্যে এর বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হওয়ায় কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পথে হাঁটছেন। বৃহত্তর দাবি আদায়ে তারা সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এখন সরকার ও কমিশনের ওপর চরম চাপ সৃষ্টি করেছেন।

দেশের সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বেতন কাঠামো ঢেলে সাজাতে জাতীয় পে কমিশন গঠন করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। কর্মচারীদের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রত্যাশা ছিল—কমিশন নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যেই তাদের সুপারিশ জমা দেবে এবং বর্তমান সরকারই গেজেট প্রকাশ করে তা কার্যকর করবে।

অর্থ উপদেষ্টার কথায় সংশয়

কিন্তু এই প্রত্যাশায় বড় ধাক্কা লাগে যখন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ একটি মন্তব্য করেন। তার বক্তব্যের ভিত্তিতে আভাস পাওয়া যায় যে অন্তর্বর্তী সরকার এই বেতন কাঠামো কার্যকর করবে না।

তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘আগামী নির্বাচিত সরকার পে কমিশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’ অর্থ উপদেষ্টার এই ঘোষণার পরপরই সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ দ্রুত ঘনীভূত হয়।

নভেম্বরের সময়সীমা ও ঐক্যের নজির

এই পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরিজীবীরা পে কমিশনের ওপর চাপ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, নভেম্বরের শেষ দিন অর্থাৎ ৩০ তারিখের মধ্যে সুপারিশ জমা না পড়লে তাদের আন্দোলন কেবল কমিশনের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং তা বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে মোড় নেবে।

এদিকে, এই দাবিকে কেন্দ্র করে কর্মচারীদের মধ্যে ঐক্যের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। সূত্রমতে, নতুন পে স্কেলের দাবিতে সব কর্মচারী সংগঠনকে এক ছাতার নিচে আনতে আলোচনা চলছে এবং এরই মধ্যে কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের নেতৃত্বে মোট ১২টি সংগঠন একটি জোটে শামিল হয়েছে।

১৫ ডিসেম্বরের কঠোর আল্টিমেটাম

বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের গেজেট প্রকাশের জন্য কর্মচারীরা সরকারের জন্য ১৫ ডিসেম্বরের একটি কঠোর সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, এই নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে পে স্কেল কার্যকরের গেজেট যদি প্রকাশ না হয়, তবে সরকারি কাজে সম্পূর্ণ কর্মবিরতির মতো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে তারা বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবেন না।

বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়ের আহমেদ মজুমদার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমরা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। আমাদের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে দাবি না মানা হলে, দাবি আদায়ে যেকোনো ধরনের কর্মসূচি নিতে আমরা পিছপা হব না।” সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন পে স্কেলের গেজেট প্রকাশিত হলে সরকারি কর্মচারীরা মানসিক প্রশান্তি পাবেন।

FAQ উত্তর (Frequently Asked Questions)

প্রশ্ন ১: সরকারি কর্মচারীরা কেন আন্দোলন করছেন?

উত্তর: অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন না হওয়ার আভাস মেলায় এবং অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অসন্তোষের জেরে সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন।

প্রশ্ন ২: কর্মচারীদের প্রধান আল্টিমেটামের তারিখ কী?

উত্তর: কর্মচারীরা আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পে স্কেল কার্যকরের গেজেট প্রকাশের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায় তারা কর্মবিরতির মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।

প্রশ্ন ৩: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বেতন কাঠামো নিয়ে কী মন্তব্য করেছেন?

উত্তর: তিনি বলেছেন, পে কমিশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ‘আগামী নির্বাচিত সরকার’। এই মন্তব্যের পরই কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

প্রশ্ন ৪: পে স্কেলের দাবিতে কয়টি সংগঠন জোটবদ্ধ হয়েছে?

উত্তর: কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের নেতৃত্বে মোট ১২টি কর্মচারী সংগঠন নতুন পে স্কেলের দাবিতে আন্দোলনের জন্য জোটবদ্ধ হয়েছে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ