ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বাংলাদেশ-ভারত যুদ্ধে জিতবে বাংলাদেশ, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন গবেষকরা!

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১৯:১৪:২৯
বাংলাদেশ-ভারত যুদ্ধে জিতবে বাংলাদেশ, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন গবেষকরা!

দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে সময়ের সাথে সাথে পাল্টে যাচ্ছে সামরিক সমীকরণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ভৌগোলিক অবস্থানের কৌশলগত গুরুত্ব নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সমর বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকদের মতে, কোনো কাল্পনিক যুদ্ধে যদি বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হয়, তবে বাংলাদেশের অজেয় ভৌগোলিক প্রতিরক্ষা এবং উন্নত সমরাস্ত্র ভারতকে চরম বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে।

গবেষকদের এই দাবির পেছনে পাঁচটি প্রধান কারণ নিচে বিশ্লেষণ করা হলো:

১. ‘ডিফেন্ডারস প্যারাডাইস’ বা দুর্ভেদ্য প্রাকৃতিক দুর্গ

ভারতের প্রখ্যাত সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল ডি. কে. পালিত বাংলাদেশকে ‘ডিফেন্ডারস প্যারাডাইস’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। বাংলাদেশের নদী-নালা, খাল-বিল এবং বর্ষাকালের কর্দমাক্ত মাটি যেকোনো আধুনিক ট্যাংক বা পদাতিক বাহিনীর জন্য যমদূত। ১৯৭১ সালে ভারতের তৎকালীন সেনাপ্রধান স্যাম মানেকশ’ প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, বর্ষায় বাংলাদেশে অভিযান চালানো মানেই স্রেফ ‘আত্মহত্যা’। এই প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাই বাংলাদেশকে অজেয় করে রেখেছে।

২. চিকেন নেক ও শিলিগুড়ি করিডোরের ঝুঁকি

গবেষকদের মতে, ভারতের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো ‘শিলিগুড়ি করিডোর’, যা ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত। মাত্র ২২ কিলোমিটারের এই সরু পথটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করে। বাংলাদেশ যদি চীন বা অন্যান্য শক্তির সহায়তায় এই করিডোরটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়, তবে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ মুহূর্তেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এটি হবে ভারতের মানচিত্রের জন্য এক চরম পরাজয়।

৩. ফোর্সেস গোল ২০৩০: আধুনিক সমরাস্ত্রের শক্তি

বাংলাদেশ এখন আর কেবল লাঠি-সোটা নিয়ে যুদ্ধ করা দেশ নয়। ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে আধুনিক ভিটি-৪ ট্যাংক, ডব্লিউএস-২২ রকেট লঞ্চার এবং তুরস্কের তৈরি বিধ্বংসী ‘বায়রাক্তার টিবি-২’ ড্রোন। বিমানবাহিনীতে জে-১০ সি এবং জেএফ-১৭ ব্লক-৩ এর মতো আধুনিক যুদ্ধবিমান যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। গবেষকদের মতে, আকাশ ও স্থলপথে বাংলাদেশের এই আধুনিক সরঞ্জাম যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম।

৪. তিন ফ্রন্টের যুদ্ধ ও ভূ-রাজনৈতিক চাপ

যদি কখনো সংঘাত শুরু হয়, ভারতকে কেবল বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে হবে না। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত দিয়ে চীন এবং পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। একসাথে তিনটি ফ্রন্টে যুদ্ধ চালানো ভারতের মতো দেশের অর্থনীতির জন্য এক দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়াবে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো, বিশেষ করে তুরস্ক, সৌদি আরব ও ইরান বাংলাদেশের ওপর কোনো আগ্রাসন মেনে নেবে না, যা ভারতকে চরম কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক বয়কটের মুখে ফেলবে।

৫. ইতিহাসের অদম্য চেতনা ও জনশক্তি

ঐতিহাসিকরা বাংলার এই ভূখণ্ডকে ‘বুলগাকপুর’ বা বিদ্রোহের দেশ বলে অভিহিত করেছেন। মুঘল থেকে শুরু করে ব্রিটিশ—কেউই এই মাটিকে পুরোপুরি বশ করতে পারেনি। গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বিশাল জনশক্তি এবং প্রতি ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে গড়ে তোলা গেরিলা প্রতিরোধ যেকোনো পেশাদার সেনাবাহিনীকে ক্লান্ত ও পরাজিত করতে যথেষ্ট।

গবেষকদের বিশ্লেষণে এটি পরিষ্কার যে, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ হলেও তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং ভৌগোলিকভাবে অজেয়। ভারত বড় শক্তির দেশ হলেও বাংলাদেশের এই বিশেষ সামরিক ও প্রাকৃতিক সুবিধাগুলো যেকোনো যুদ্ধে বাংলাদেশকে বিজয়ী করার ক্ষমতা রাখে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ