ঢাকা, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

বিএনপির মনোনয়নে বড় রদবদল: যাদের কপাল খুলল, বাদ পড়লেন যারা

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ১৭:৪৮:৪৫
বিএনপির মনোনয়নে বড় রদবদল: যাদের কপাল খুলল, বাদ পড়লেন যারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রণকৌশল সাজাতে তিন দিনের বিশেষ কর্মশালা শেষ করেছে বিএনপি। তবে এই আয়োজন কেবল প্রশিক্ষণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রার্থী বাছাইয়ের অঘোষিত মানদণ্ড। গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় ডাক পাওয়া এবং না পাওয়ার ওপর ভিত্তি করে ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়নে বড় ধরনের রদবদলের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

যাদের কপাল খুলল, বাদ পড়লেন যারা

দলীয় সূত্রমতে, কর্মশালায় আমন্ত্রিতদের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আগের ঘোষিত তালিকায় থাকা বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা এবার ব্রাত্য রয়ে গেছেন। ঝালকাঠি-২ আসনে ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো, চট্টগ্রাম-৬ আসনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং যশোর-৬ আসনে কাজী রওনকুল ইসলাম আমন্ত্রণ না পাওয়ায় ওই সব আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে।

সবচেয়ে বড় চমক দেখা গেছে চট্টগ্রাম-৪ আসনে, যেখানে কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে আসলাম চৌধুরীকে কর্মশালায় ডেকে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জোটের রাজনীতির সমীকরণ ছাপিয়ে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে আশরাফ উদ্দিন নিজান এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনে সদ্য বিএনপিতে আসা শাহাদাত হোসেন সেলিমের নাম প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বাগেরহাট ও লক্ষ্মীপুরে চার আসনেই ঘরের প্রার্থী

লক্ষ্মীপুর ও বাগেরহাট—এই দুই জেলার সবকটি আসনে বিএনপির নিজস্ব প্রার্থীরাই ধানের শীষ নিয়ে মাঠে নামছেন বলে স্পষ্ট হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা: জেলার ৪টি আসনে যথাক্রমে কপিল কৃষ্ণ মন্ডল, ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন, ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম এবং সোমনাথ দে-কে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা: এখানে আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পাশাপাশি শাহাদাত হোসেন সেলিম ও আশরাফ উদ্দিন নিজানকে ডাকার মাধ্যমে মিত্রদের আসন ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।

তারেক রহমানের নির্দেশ: ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ‘স্মার্ট কার্ড’ বার্তা

শনিবার কর্মশালার সমাপনী দিনেও ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কঠোর বার্তা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নির্বাচনি প্রচারণায় চিরাচরিত পদ্ধতির বাইরে এসে ‘স্মার্ট ও ডিজিটাল’ কৌশলের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

প্রার্থীদের জন্য দেওয়া প্রধান নির্দেশনাগুলো হলো:

১. নাগরিক সুবিধা প্রচার: ফ্যামিলি কার্ড, হেলথ কার্ড এবং কৃষি কার্ডের মতো জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনাগুলো ভোটারদের সামনে বিশদভাবে তুলে ধরা।

২. ডিজিটাল প্রচার: প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় একজন করে দক্ষ ‘সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার’ নিয়োগ এবং কৃষকদের ডিজিটাল নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে সেবা প্রদান।

৩. এজেন্ট ব্যবস্থাপনা: পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণের জন্য দক্ষ প্রশিক্ষক ও নির্বাচনি এজেন্টদের তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাকি ২৮ আসনের চূড়ান্ত ঘোষণা শিগগিরই

বিএনপি এ পর্যন্ত মোট ২৭২টি আসনে তাদের সম্ভাব্য কান্ডারিদের নাম প্রকাশ করেছে। অবশিষ্ট ২৮টি আসনের ভাগ্য আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্ধারিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি মিত্র ও শরিক দলগুলোর জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে, যা আলোচনার ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কর্মশালার মাধ্যমে বিএনপি মাঠ পর্যায়ে কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা এবং ডিজিটাল প্রচারণাকে সুসংহত করার কাজ শুরু করল। ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার প্রকৃত তথ্য পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার লক্ষ্য নিচ্ছেন দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ