৩২ সেঞ্চুরি ৬৩ হাফসেঞ্চুরির মালিক বাংলাদেশ দলে সুযোগ না পাওয়ার আক্ষেপ

এখন ১২ হাজার রানের হাত মেলানো দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছেন যশোরের এ স্টাইলিশ ব্যাটার। আর মাত্র ২৮ রান দরকার। তা হলেই ঐ মাইলফলক স্পর্শ করতে পারতেন। খেললে হয়তো এবছরই সে অসামান্য কৃতিত্ব ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন তুষার। কিন্তু নাহ! তার আগেই বিদায় বলে দিয়েছেন।
আজ (রোববার) জাতীয় ক্রিকেট লিগে খুলনার হয়ে ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচটি খেললেই হয়তো ২৮ রান করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১২ হাজারি ক্লাবে বাংলাদেশের প্রথম সদস্য হতে পারতেন তুষার। কিন্তু ইনজুরি বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোয় আর খেলবেন না। মাঠের বাইরে থেকেই বিদায় জানাচ্ছেন।
বিদায় বেলায় অনেক কথার ভিড়ে তুষার জানান, ‘রেকর্ড গড়া, ১২ হাজার রান পূর্ণ করার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই কমিটমেন্ট, ডেডিকেশন ও নিজের মুখের কথাকে। এবছর জাতীয় লিগ শুরুর আগেই বলেছিলাম, যদি রান করতে না পারি তাহলে আর কন্টিনিউ করবো না, ছেড়ে দেবো।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘মাঠে নেমে দেখি ব্যাট কথা বলছে না, রান নেই। শেষ তিন ম্যাচের ৫ ইনিংসে (১৩, ২১, ১, ১৫, ০) করেছি মোটে ৫০ রান। তাই ভাবলাম থাক, অনেক হয়েছে এবার থামি।’
জাতীয় লিগে নিজের দীর্ঘ পথ পরিক্রমার কথা জানিয়ে তুষার ইমরান বলেন, ‘সেই ২০০০ সালে শুরু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। দেশের ২৩ জাতীয় লিগের ২২ টিই খেলে ফেলেছে। সেটাও অনেক বড় অর্জন।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেশের সফলতম ব্যাটসম্যানের জাতীয় দলের ক্যারিয়ার কিন্তু মোটেও দীর্ঘ হয়নি। টেস্ট ক্যারিয়ারের বয়স ৫ (২০০২ সালের জুলাই থেকে ২০০৭ সালের জুলাই) বছর, ম্যাচও ৫টি। আর ৬ বছরে (২০০১ সালের মার্চ থেকে ২০০৭ সালের ডিসেম্বর) ওয়ানডে খেলেছেন ৪১টি।
জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন ছিল বুকে। সে স্বপ্ন নিয়েই খেলে গেছেন এত দীর্ঘ সময়। তবে বিদায় বেলায় একটা আক্ষেপ ঠিকই পোড়াচ্ছে। অনেক আশা ছিল আবার জাতীয় দলে ফেরার। সে আশা নিয়েই প্রতি বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটটা খুব মন দিয়ে খেলেছেন। ভালো খেলে রানও করেছেন প্রচুর। সেঞ্চুরি-হাফসেঞ্চুরি ছিল নিত্যসঙ্গী।
তারপরও আর জাতীয় দলে ফেরা হয়নি। সেই আশাভঙ্গের বেদনা নিয়েই ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। সেটা ভেবেই খারাপ লাগছে তার, ‘খুব ইচ্ছে ছিল আবার জাতীয় দলে ফেরার। মনে প্রাণে চাইতাম, স্বপ্ন দেখতাম আবার দেশের হয়ে খেলবো। কিন্তু সে স্বপ্নপূরণ হয়নি।’
২০১৬-১৭ মৌসুমে নিজের ফর্মের কথা মনে করিয়ে তুষার আরও বলেন, ‘তবে একটা আক্ষেপ বেশি পোড়ায়, তা হলো ২০১৬-২০১৭’র দিকে আমি বেশ ভালো ফর্মে ছিলাম। এখন মনে হয় ঐ সময়টায় কামব্যাক করার মত অবস্থা ছিল। সেই না ফেরার যন্ত্রণা এখনো মনে কাটার মত বিঁধে।’
এক-দুটি নয়, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩২টি শতক আছে তার। ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনটি। লম্বা ইনিংস খেলেছেন অনেক। স্বরণীয় ইনিংস আছে ভুরিভুরি। কিন্তু শুনে অবাক হবেন, বিদায়বেলায় সেগুলোর একটির কথাও সেভাবে মনে হচ্ছে না তার। জাতীয় লিগ, বিসিএলের কোনো বিশেষ শতক বা দ্বিশতক বিশেষভাবে স্বরণীয় করে রাখতে চান না।
তার ভাষায়, ‘হ্যাঁ স্মরণীয় ইনিংস ও ঘটনা আছে ভুরিভুরি। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এমন কোনো ইনিংসের কথা এখন মনে পড়ছে না। বরং ‘এ’ দলের হয়ে ভারতের মহরাষ্ট্রের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে করা ডাবল সেঞ্চুরিটিই বেশি মনে আছে।’
‘সম্ভবত ২০০১ সালের কথা, আমরা এ দলের হয়ে ভারত সফরে গিয়েছিলাম। পুনেতে মহারাষ্ট্রের হয়ে ম্যাচে আমাকে বলা হলো ওপেন করতে। বোধ করি, মেহরাব হোসেন অপি ভাই ছিলেন আমার ওপেনিং পার্টনার। খুব মনে আছে মহরাষ্ট্রের বিপক্ষে ঐ তিন দিনের ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলাম। ঐ ইনিংসটিই আমাকে জাতীয় দলে জায়গা করে দিয়েছিল।’
এর বাইরে ২০০১-২০০২ মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের বিপক্ষে ধানমন্ডির হয়ে খেলা ম্যাচ উইনিং সেঞ্চুরিটিও খুব প্রিয় তুষারের। জাতীয় দলের হয়ে কোন ম্যাচ জেতানো ইনিংস সেভাবে মনে দাগ কেটে নেই। তবে দুটি ইনিংস তাকে এখনও পোড়ায়। প্রথমটি ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে। আর অন্যটি পাকিস্তানের সঙ্গে চট্টগ্রামে।
তুষারের মূল্যায়ন, ঐ দুই ম্যাচেই তার দল জিতিয়ে বিজয়ীর বেশে সাজঘরে ফেরার সুবর্ণ সুযোগ ছিল। কিন্তু বয়স কম থাকায় পারেননি।
কেনিয়ার বিপক্ষে ২০০৩ বিশ্বকাপ ম্যাচের স্মৃতি টেনে তুষার বলেন, ‘আমি দেশ ছাড়ার আগেই বলেছিলাম, কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ জেতাবো আমি। ম্যাচে আকরাম ভাই ও আমি জুটি গড়ে অনেক দূর চলেও গিয়েছিলাম। কিন্তু পারিনি। যেমন পারিনি পাকিস্তানের সঙ্গে ২০০১-২০০২ মৌসুমে। আমরা পাকিস্তানকে ২০২ রানে অলআউট করেও জিততে পারিনি।’
এর বাইরে আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে ২০০৫ সালে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর ম্যাচে ৩৫ বলে ২৪ রানের ইনিংসটি এখনও সুখস্মৃতি অংশ তুষারের।
খেলা ছেড়ে কী করবেন? এখনও ঠিক করেননি। তবে কোচিং করার ইচ্ছে আছে। এখনই একটি একাডেমির হেড কোচ হিসেবে কাজ করছেন। সুযোগ পেলে দেশের ক্রিকেটের জন্য কাজ করতে চান। বিসিবি থেকে কোন প্রস্তাব পেলে সানন্দে রাজি হবেন তুষার, ‘ক্রিকেটই ধ্যানজ্ঞান, ক্রিকেট নিয়েই ছিলাম। থাকতে চাই আজীবন।’
তার সমসাময়িক অনেক ক্রিকেটারই বোর্ডে কোনো না কোনো পদে আছেন। কেউ নির্বাচক, কেউ জুনিয়র নির্বাচক। কেউ বা বয়সভিত্তিক দলে কোচিং করাচ্ছেন। আবার ক্রিকেট অপারেশনস, গেম ডেভেলপমেন্টেও কাজ করছেন কেউ কেউ। সেই দলে তুষারের অন্তর্ভুক্তিও হয়তো সময়ের ব্যাপার।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- এসএসসি রেজাল্ট ২০২৫: কিভাবে সবার আগে দেখবেন আপনার ফল? জানুন নিয়ম
- SSC Result 2025: দুপুর ২টায় প্রকাশ, কীভাবে দেখবেন ফলাফল
- এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষার তারিখ ঘোষণা: ‘বোর্ড চ্যালেঞ্জ’ করবেন যেভাবে
- এসএসসি ফল পুনঃনিরীক্ষণ ২০২৫: ঘরে বসেই যেভাবে করবেন বোর্ড চ্যালেঞ্জ
- আজ এসএসসি রেজাল্ট ২০২৫ প্রকাশ: দ্রুত অনলাইনে ফল দেখার সহজ উপায়
- চলছে SSC বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: খাতা চ্যালেঞ্জ করবেন সবার আগে যেভাবে
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: টস শেষ বাংলাদেশের একাদশে তিন পরিবর্তন
- চেলসি বনাম পিএসজি ফাইনাল: পরিসংখ্যান, লাইভ ম্যাচ ও ভবিষ্যদ্বাণী
- SSC ফল পুনঃনিরীক্ষণ শুরু আজ: খাতা চ্যালেঞ্জের নিয়ম ও আবেদন খরচ
- এসএসসি রেজাল্ট ২০২৫: অনলাইনে ও এসএমএসে দেখবেন যেভাবে
- চেলসি বনাম ফ্লুমিনেন্স: সেমিফাইনালে জমজমাট ৯০ মিনিট শেষ, ফাইনালে কার জায়গা?
- চেলসি বনাম পিএসজি ফলাফল: একতরফা লড়াইয়ে শেষ ক্লাব বিশ্বকাপ ফাইনাল
- আর মাত্র ৪ দিন! এসএমএস করে SSC বোর্ড চ্যালেঞ্জ করবেন যেভাবে
- রাতে পিএসজি বনাম রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ: বাংলাদেশ থেকে লাইভ দেখার সহজ উপায়
- এসএসসি ও দাখিল রেজাল্ট ২০২৫: ওয়েবসাইট ও মোবাইল থেকে দ্রুত ফল