নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে সরাসরি যাকে দায়ি করলেন অধিনায়ক সাকিব

ক্রাইস্টচার্চে ডেভন কনওয়ে ও গ্লেন ফিলিপসের ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ২০৯ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় নিউজিল্যান্ড। জবাবে সাকিব আল হাসান ছাড়া কেউই জবাব দিতে পারেনি বাংলদেশের হয়ে।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এ দিন দেখেশুনে শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে মাত্র দুই রান নেয় তারা। এরপরের ওভারে অবশ্য খোলস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
টিম সাউদির করা ওভারে দুজনই একটি করে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নেন ১০ রান। ট্রেন্ট বোল্টের করা পরের ওভারেও একইভাবে ১০ রান নেন তারা। তবে চতুর্থ ওভারেই হয় ছন্দপতন।
১২ বলে ১১ রান করা শান্তকে বোল্ড করে বিদায় করেন অ্যাডাম মিলনে। দুইবার জীবন পাওয়া শান্ত এবার ফিরে যান। কিউই এই পেসারের দ্রুতগতির বল স্লগ করতে গিয়ে স্টাম্প হারান শান্ত। সেই ওভারে অবশ্য একটি বাউন্ডারি হাঁকান লিটন।
ইনিংসের একমাত্র ছক্কাটি লিটন মারেন পঞ্চম ওভারে। এই ওভারে লেগ বাইর থেকেও আসে চার রান। ষষ্ঠ ওভারে বল তুলে নেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। তাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন।
ফেরার আগে করেন ১৬ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ২৩ রান। পাওয়ার প্লে তে শান্ত ও লিটনের উইকেট হারিয়ে ৫২ রান তোলে বাংলাদেশ।
দুই ওপেনার ফিরে গেলেও সৌম্য সরকার ও সাকিবের ব্যাটে পথ খুঁজে বেড়াচ্ছিল বাংলাদেশ। দুজনই ছিলেন ছন্দে। অষ্টম ওভারে ব্রেসওয়েলের করা ওভারে দুজন মিলে নেন ১৭ রান।
সাকিব একটি ও সৌম্য হাঁকান দুটি চার। তারপরের ওভারে ইস সোধির বলে আবারও একটি চার হাঁকান সৌম্য। সেই ওভারে আসে ৯ রান। দশম ওভারের শেষ বলে ফিরে যান সৌম্য। তাকেও বিদায় করেন মিলনে।
থার্ড ম্যান অঞ্চলে তার ক্যাচ ধরেন বোল্ট। ফেরার আগে ১৭ বলে তিন চারে ২৩ করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবারই প্রথমবার জাতীয় দলে ফিরলেন সৌম্য। দশ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ৯০ রান তোলে বাংলাদেশ।
সৌম্য ফেরার পর উইকেটে আসেন আফিফ হোসেন। এ দিন একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি এই ব্যাটার। ১২তম ওভারে ব্রেসওয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে করেন চার বলে চার রান।
এর দুই ওভার পর ফিরে যান নুরুল হাসান সোহানও। বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক এ দিন করেন ৬ বলে ২ রান। দেখেশুনে খেলতে খেলতে ১৬তম ওভারে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পান সাকিব। ৩৩ বলে এসেছে এই হাফ সেঞ্চুরি।
সেই ওভারের শেষ বলে সাউদিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন ইয়াসির আলী রাব্বি। ছয় বলে ছয় রান করেন তিনি। সাকিব ফিরে যান ১৯তম ওভারে। সাউদির বলে কনওয়ে তার ক্যাচ লুফে নেয়ার আগে ৪৪ বলে আটটি চার ও একটি ছক্কায় ৭০ রান করেন তিনি। বাংলাদেশের ইনিংস থামে সাত উইকেটে ১৬০ রান করে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমত বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধোনা করেছেন কিউই ব্যাটাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন দুই কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। ওপেনার অ্যালেনকে ব্যক্তিগত ৩২ রানে ইয়াসির আলীর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান শরিফুল ইসলাম।
অ্যালেনের ১৯ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল দুই ছক্কা আর তিন চারে। পাওয়ার প্লের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন কিউই ব্যাটাররা। তারা প্রথম ছয় ওভারে তুলে নেন ৫৪ রান।
দ্বিতীয় উইকেটে মার্টিন গাপটিলকে নিয়ে একটি পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি গড়েন কনওয়ে। এই জুটি গড়ার পথে মাত্র ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কনওয়ে।
দ্বিতীয় উইকেটে গাপটিল ও কনওয়ের ৮২ রানের জুটি ভেঙেছেন এবাদত হোসেন। এই টাইগার পেসারকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন ৩৪ রান করা গাপটিল। যদিও ব্যাটে বলে ঠিক মতো না হওয়ায় সীমানার কাছে শান্তর হাতে ধরা পড়েন তিনি।
এরপর নিউজিল্যান্ড শিবিরে জোড়া আঘাত হেনেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। টাইগার এই পেসারের লেংথ বলে পুল করতে গিয়ে সীমানার কাছে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন কনওয়ে। এর ফলে ৪০ বলে তার ৬৪ রানের ইনিংস ভাঙে।
এর দুই বল পর মার্ক চ্যাপম্যানকে বোল্ড করে আউট করেন সাইফউদ্দিন। যদিও এরপর উইকেটে এসেই ঝড় তোলেন গ্ল্যান ফিলিপস। টাইগার বোলারদের তুলোধোনা করে ১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। ব্যক্তিগত ৬০ রানে তিনি এবাদতের ওপর চড়াও হতে গিয়ে বোল্ড হন। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল পাঁচটি ছক্কা আর দুই চারে।
ম্যাচ হারের পর সাকিবের কাঠগড়ায় ছিল দ্রুত উইকেট হারানো ও লক্ষ্য তাড়া করার বদলে ইনিংস লম্বা করার কারন। এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক উইকেট হারিয়েছি যা আমাদের পরাজয়ের কারন। যদি লক্ষ্য করেন, তবে আমরা প্রতি দুই ওভারে একটি করে উইকেট হারিয়েছি, যা আদর্শ নয়। আমরা লক্ষ্য তাড়া করার চেয়ে ইনিংস দাড় করাতে মনোযোগী হয়েছি।’
এরপর আরও বলেন, সত্যি বলতে, যদিও আমাদের কাছে বেশি সুযোগ নেই। আমরা এখানে আসব এবং চেষ্টা করব জেতার জন্য। যদি জিতি (পাকিস্তানের সঙ্গে) তবে এটা আমাদের মোমেন্টাম এনে দিবে। তাই সামনের ম্যাচ আমাদের জন্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
নিউজিল্যান্ড- ২০৮/৫ (২০ ওভার) (কনওয়ে ৬৪, ফিলিপস ৬০; সাইফউদ্দিন ২/৩৭, এবাদত ২/৪০)।
বাংলাদেশ- ১৬০/৭ (২০ ওভার) (সাকিব ৭০, লিটন ২৩; মিলনে ৩/২৪)।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- শেষ হলো মেলবোর্ন স্টার্স বনাম বাংলাদেশের মধ্যকার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড জায়গা পেলেন যারা
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বড় চমক, বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড চূড়ান্ত
- ‘ক্ষমতা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’—ড. ইউনূস
- মালয়েশিয়া প্রবাস: যেভাবে আবেদন করবেন সম্পূর্ণ বিনা খরচে
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: প্রথমার্ধের খেলা শেষ, জানুন সর্বশেষ ফলাফল
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি