বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের ভিসা পুনরায় চালু হবে কবে জানা গেল

ভারতে বাংলাদেশের জন্য ভিসা কার্যক্রম বন্ধ থাকার বিষয়টি কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ভারত এ পদক্ষেপকে কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের একটি কৌশল হিসেবে দেখতে পারে। যদিও ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সংকটকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে, তবুও এটি গভীর রাজনৈতিক বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করছে।
ভিসা স্থগিতের পেছনে কারণসমূহ:
শেখ হাসিনার সরকার ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে। তবে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘিরে ভারতের মনে সন্দেহ থাকতে পারে যে, তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে কি না। ভিসা স্থগিতের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশে স্থিতিশীল এবং অনুকূল পরিবেশ প্রত্যাশা করছে, যা একটি রাজনৈতিক বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
ভারত বলছে, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা ভিসা কার্যক্রম চালু করবে না। তবে, অনেক বিশ্লেষক মনে করেন এটি একটি অজুহাত মাত্র, কারণ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা বা বিদেশি দূতাবাস বাংলাদেশে নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা জানিয়েছেন যে, ৫ আগস্টের পর ভিসা অফিসের অনেক কর্মকর্তা ভারতে ফিরে গেছেন। তবে এটি সাময়িক একটি সমস্যা হতে পারে, এবং ভারতের মতো একটি বড় রাষ্ট্রের জন্য এটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ কৌশলগত। এটি বাংলাদেশকে পরোক্ষভাবে একটি "ডিপ্লোম্যাটিক সিগন্যাল" দেয়, যাতে তারা তাদের স্বার্থ রক্ষা ও সম্পর্ক বজায় রাখতে গুরুত্ব দেয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভিসা ইস্যু পুরোপুরি চালু হবে। তবে, বিশেষজ্ঞরা এটিকে ভিয়েনা কনভেনশন বা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক নিয়মের লঙ্ঘন হিসেবে দেখতে চান না, কারণ নিরাপত্তার অজুহাত কূটনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, "সম্পর্ক উন্নয়নে দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। একতরফা পদক্ষেপ কোনো সমাধান দিতে পারে না।" তিনি জানান, এই সংকট কেবল উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।
বাংলাদেশের জন্য প্রভাব:
যদিও মেডিকেল ভিসা চালু রয়েছে, তবে অন্যান্য ভিসা বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী, পর্যটক এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
দীর্ঘদিন ভিসা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার সংকট বাড়তে পারে, যা সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ভারতে চিকিৎসা, ব্যবসা ও পর্যটনের জন্য বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি যাতায়াত করে। ভিসা কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির উপরও প্রভাব পড়তে পারে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সুতরাং, ভিসা সংকট দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকার সম্ভাবনা কম। দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক এবং রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এ সংকটের সমাধান হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, ভারত শিগগিরই বাংলাদেশে তার নীতির পুনর্মূল্যায়ন করবে।
ভারতের ভিসা স্থগিতের বিষয়টি শুধুমাত্র নিরাপত্তা সংকট নয়; এটি একটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ। উভয় দেশের স্বার্থে এবং সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদী বন্ধুত্ব বজায় রাখতে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শোক সংবাদ: মারা গেলেন মুফতি আহমদুল্লাহ
- শেয়ারবাজারে আসছে বড় পরিবর্তন: ডিএসইর রেকর্ড ডেট প্ল্যান!
- 'জেড' থেকে 'এ' ক্যাটাগরি ও 'বি' থেকে 'জেড' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর দুই কোম্পানির শেয়ার
- আজকের খেলার সময়সূচি: শ্রীলঙ্কা বনাম হংকং
- দুই কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন
- ৫ কোম্পানির শেয়ার কারসাজি: ৩ ব্যক্তিকে দেড় কোটি টাকা জরিমানা বিএসইসির
- বেতন বাড়লো! সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন পে-স্কেল
- এক কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- বিনিয়োগকারী সতর্ক! ৮ কোম্পানির প্রভাবে শেয়ারবাজারে ধস
- ৫২৫ শতাংশ লভ্যাংশ পেল বিনিয়োগকারীরা
- 'বি' থেকে 'জেড' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর এক কোম্পানির শেয়ার
- শেয়ারবাজারে চমক: দুই ফার্মায় ছুটছে বিনিয়োগ!
- চলছে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- পুঁজিবাজারে ডিজিটাল জালিয়াতি: বিএসইসি-এনটিএমসি'র যৌথ উদ্যোগ
- শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হারলো বাংলাদেশ, এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে হোঁচট