রাগ নিয়ন্ত্রণে মহানবীর নির্দেশনা: মানুষের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মানুষ সৃষ্টি হয়েছে এক অতি সূক্ষ্ম অনুভূতিবোধের সাথে, যেখানে এক মুহূর্তে খুশি হওয়া, রাগ হওয়া, সুখ ও দুঃখ অনুভব করা সবই স্বাভাবিক। তবে, যখন রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন তা মানব জীবনে এক ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনে, যা শরীর, মন এবং পরকালীন অবস্থাতেও ক্ষতির কারণ হতে পারে। ইসলাম, বিশেষত মহানবী (সা.)-এর হাদিসে রাগ নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব ও তার ক্ষতিকর দিকগুলো চমৎকারভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
রাগ: শয়তানের প্রভাব
হাদিসে রাগকে শয়তানী প্রভাবের ফল হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, “রাগ হলো শয়তানী প্রভাবের ফল। শয়তানকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।” (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৪)। শয়তানের প্রভাবে মানুষ কখনও এমন কাজ করে যা তার নিজ জীবন ও আমলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এ কারণে নবীজির (সা.) নির্দেশনা ছিল অত্যন্ত স্পষ্ট—‘রাগ কোরো না’। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যখন এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে এসে অসিয়ত চাইল, তিনি শুধুমাত্র বলেছেন, “রাগ কোরো না।” প্রতিবার ওই ব্যক্তি একই অনুরোধ করার পরও নবীজি (সা.) একই উত্তর দিয়েছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৬১১৬)।
রাগের বিপদ: শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি
বিজ্ঞানও এই সত্যকে সমর্থন করে। ২০১৫ সালে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে রাগ মানুষের হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং তা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, রাগের কারণে রক্তচাপ বেড়ে যায়, হৃদস্পন্দন দ্রুত হয় এবং রক্তনালীগুলি সংকুচিত হয়ে যায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
অধ্যাপক জিওফ্রে টফলার বলেন, “তীব্র রাগ বা উদ্বেগের বিস্ফোরণ করোনারি রোগের কারণ হতে পারে, তাই এসব পরিস্থিতিতে আমাদের সচেতন থাকা উচিত।”
রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়
মহানবী (সা.) রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু সুন্নত পন্থা দিয়েছেন, যা শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, স্বাস্থ্যগতভাবেও কার্যকর। হাদিসে এসেছে, "যদি তোমাদের কেউ রেগে যায়, তাহলে সে যেন বসে পড়ে। যদি রাগ কম না হয়, তবে শুয়ে পড়ে।" (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৮২)। এসব উপায় রাগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে, বিশেষত শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি থেকে বাঁচাতে।
ক্ষমা ও রাগের পরিণতি
প্রকৃত মুমিনের গুণ হলো, রাগের মুহূর্তে নিজের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ক্ষমা করা। আল্লাহ তাআলা কোরআনে সুরা শুরার ৩৭ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “যারা মহাপাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে দূরে থাকে এবং ক্রোধান্বিত হলে ক্ষমা করে দেয়।” এই আয়াতটি রাগের সময় আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমার গুরুত্ব তুলে ধরে।
রাগ নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব শুধু ইসলামী শিক্ষা নয়, বরং এটি মানবিক ও স্বাস্থ্যগতও এক অপরিহার্য বিষয়। মহামানবী (সা.)-এর জীবন থেকে আমরা শিখি, রাগের মুহূর্তে আত্মনিয়ন্ত্রণ, ধৈর্য ধারণ, এবং ক্ষমা করার পথই আমাদের জন্য সঠিক। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই সুন্নত অনুসরণের তাওফিক দান করুন, যাতে আমরা শারীরিক, মানসিক, এবং পরকালীন জীবনে শান্তি ও মুক্তি লাভ করতে পারি। আমিন।
সাবরিনা সাবা/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান: টস শেষ, একাদশে ৩ পরিবর্তন, লাইভ দেখুন এখানে
- চলছে বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে!
- আজকের খেলার সময়সূচি: শ্রীলঙ্কা বনাম হংকং
- ৫ কোম্পানির শেয়ার কারসাজি: ৩ ব্যক্তিকে দেড় কোটি টাকা জরিমানা বিএসইসির
- শেয়ারবাজারে চমক: দুই ফার্মায় ছুটছে বিনিয়োগ!
- বেতন বাড়লো! সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন পে-স্কেল
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএইসর গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা
- চলছে বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ম্যাচ: নাসুম জোড়া আঘাত, লাইভ দেখুন এখানে
- আজ বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ম্যাচ: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- কিছুক্ষণ পর আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ: লাইভ দেখবেন যেভাবে
- এক শেয়ারেই বাজিমাত: ডিএসইর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প
- নতুন পে-স্কেল: বড় সুখবর-সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়লো!
- ৩ পরিবর্তন নিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশ ঘোষণা
- এক নজরে শেয়ারবাজারের আলোচিত ১২ খবর
- আপনার বিনিয়োগ সুরক্ষিত? সিএমএসএফ কার্যকারিতায় বিএসইসি'র চমক!