
MD. Razib Ali
Senior Reporter
মাত্র ২০০ টাকায় স্টারলিংক! কীভাবে সম্ভব হলো জানলে চমকে যাবেন

স্টারলিংকের খরচ হাজারে হাজার, কিন্তু ভাইরাল এক কৌশলে এখন রিকশাওয়ালাও পাচ্ছেন এই ইন্টারনেট! কী সেই বাস্তবতা?
নিজস্ব প্রতিবেদক:সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর দাবি ভাইরাল হয়েছে—মাত্র ২০০ টাকায় স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহার করা সম্ভব। এই দাবির সঙ্গে ভিডিও, ছবি ও ব্যাখ্যাও শেয়ার করা হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে, এখন একজন সাধারণ দোকানদার বা রিকশাচালকও সহজেই স্টারলিংকের হাইস্পিড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। কেউ বলছেন এটি ‘গরিবের স্টারলিং প্ল্যান’।
তবে প্রশ্ন উঠছে—এটি কি আদৌ বাস্তবসম্মত? নাকি এটা শুধুই সোশ্যাল মিডিয়ার বিভ্রান্তিকর প্রচারণা?
স্টারলিংকের অফিসিয়াল প্যাকেজের খরচ কত?
স্টারলিংকের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে যেটি রেসিডেনশিয়াল প্যাকেজ হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে সেটির খরচ নিম্নরূপ—
মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি: ৪,২০০ টাকা
এককালীন কিট ও রাউটার খরচ: প্রায় ৪৭,০০০ টাকা
এই প্যাকেজে একজন গ্রাহক একটি নির্দিষ্ট এলাকায় হাইস্পিড ইন্টারনেট সুবিধা পেয়ে থাকেন। রাউটারের কভারেজ ৩২০০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত হতে পারে এবং এতে সর্বোচ্চ ২৩৫টি ডিভাইস কানেক্ট করা সম্ভব বলে উল্লেখ রয়েছে। তবে, সেই স্পিড সকল ডিভাইসে সমানভাবে পৌঁছাবে—এমন নিশ্চয়তা নেই।
তাহলে কোথা থেকে এলো ২০০ টাকার ধারণা?
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল কৌশলটি একেবারেই ভিন্নধর্মী। অনেকে বলছেন, যদি একটি মার্কেট বা দোকানপট্টির ২০-২৫টি দোকান মিলে ৪৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি স্টারলিংক কিট কিনে নেয় এবং তার মাসিক খরচ ৪,২০০ টাকা ভাগ করে দেয়, তাহলে প্রত্যেক দোকানদারের খরচ হবে মাত্র ২০০ থেকে ২১০ টাকার মতো।
এখানে রাউটারের কভারেজ রেঞ্জ ৩২০০ স্কয়ার ফিট হওয়ায় অনেকে মনে করছেন, ২০টির মতো দোকান সহজেই একসাথে এই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি দাবি করা হচ্ছে, একজন রিকশাচালকও যদি মাসে ২০০ টাকা খরচ করতে পারেন, তবে তিনিও এই শেয়ার করা স্টারলিং ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
বাস্তবে এটি কতটা কার্যকর?
যদিও এই পরিকল্পনা খুবই আকর্ষণীয় শোনায়, কিন্তু বাস্তবে একাধিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে—
১. স্পিড শেয়ারিং ও পারফরম্যান্স:
২৩৫টি ডিভাইস কানেক্ট করা গেলেও, স্পিড ভাগ হয়ে গেলে কার্যকর ইন্টারনেট সেবা পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। বিশেষ করে যখন সবাই একসাথে ইউটিউব, ফেসবুক, ভিডিও কনফারেন্সিং বা গেমিংয়ের মতো হেভি কাজ করবে।
২. বাধা ও দেয়ালের সমস্যা:
রাউটারের কভারেজ ৩২০০ স্কয়ার ফিট হলেও, বাজারের দোকানগুলো একে অপরের সঙ্গে দেয়াল দিয়ে আলাদা। ফলে দেয়ালের বাধায় ইন্টারনেট স্পিড অনেক জায়গায় দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
৩. রেসিডেনশিয়াল প্যাকেজের সীমাবদ্ধতা:
এই প্যাকেজ মূলত বাসা বা অ্যাপার্টমেন্টের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। সেখানে ১০ থেকে ১২টি ডিভাইস থাকলেও খুব একটা সমস্যা হয় না। কিন্তু ২০ থেকে ২৫টি দোকান মিলে একই সংযোগ শেয়ার করলে সেবার মান অনেকখানি কমে যেতে পারে।
তাহলে কি এটি সম্ভব?
২০০ টাকা দিয়ে স্টারলিংক ব্যবহার পুরোপুরি অসম্ভব নয়। যদি একাধিক দোকান বা ব্যবহারকারী সম্মিলিতভাবে একটি সংযোগ নেয় এবং কম গতিতে সন্তুষ্ট থাকে, তাহলে এমনটি করা যেতেই পারে। তবে এটি হাইস্পিড স্টারলিংক ইন্টারনেট নয়, বরং একটি সীমিত গতিসম্পন্ন শেয়ার্ড কানেকশন।
তাছাড়া এই মডেলে যারা রাউটার থেকে দূরে, তারা খুব কম স্পিড পাবেন। এমনকি ইন্টারনেট মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই “মাত্র ২০০ টাকায় স্টারলিং” কথাটি শুধুই আংশিকভাবে বাস্তব—এর পেছনে রয়েছে অনেক বাস্তবিক শর্ত।
স্টারলিংকের একটি বাড়তি সুবিধা
স্টারলিংকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—তারা ৩০ দিনের মধ্যে যদি ব্যবহারকারী সেবায় সন্তুষ্ট না হন, তাহলে পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছে। এর ফলে অনেকেই পরীক্ষামূলকভাবে সংযোগ নেওয়ার সাহস পাচ্ছেন।
২০০ টাকায় স্টারলিংক ব্যবহার করার ধারণা একেবারে ভুল নয়, তবে তা নির্ভর করছে কৌশল, পরিবেশ, এবং কম্প্রোমাইজের ওপর। শেয়ার্ড ইউজ মডেলে সীমিত গতির ইন্টারনেট মিললেও, প্রকৃত হাইস্পিড সুবিধা প্রত্যাশা করলে এই বাজেটের মধ্যে সেটি সম্ভব নয়।
তাই যারা “২০০ টাকায় স্টারলিং” দেখে চমকে উঠেছেন, তাদের উচিত পুরো তথ্য জেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া। বিভ্রান্তিকর তথ্য বা ভাইরাল পোস্ট দেখে বিনিয়োগ করা নয়।
প্রশ্নোত্তর (FAQ):
প্রশ্ন ১: মাত্র ২০০ টাকায় কি সত্যিই স্টারলিংক ব্যবহার সম্ভব?
উত্তর: একাধিক ব্যক্তি বা দোকান মিলে যদি একটি সংযোগ ভাগ করে নেয়, তাহলে মাথাপিছু খরচ কমে গিয়ে ২০০ টাকার কাছাকাছি হতে পারে। তবে এটি সীমিত গতিসম্পন্ন হবে এবং সেবার মান কমে যেতে পারে।
প্রশ্ন ২: বাংলাদেশে স্টারলিংকের মূল খরচ কত?
উত্তর: রাউটার ও কিট কিনতে এককালীন খরচ প্রায় ৪৭,০০০ টাকা এবং মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি ৪,২০০ টাকা।
প্রশ্ন ৩: স্টারলিংকের কভারেজ কতটুকু?
উত্তর: একক রাউটারে কভারেজ পাওয়া যায় প্রায় ৩২০০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত এবং তাতে সর্বোচ্চ ২৩৫টি ডিভাইস কানেক্ট করা যায়, তবে বাস্তবে স্পিড ভাগ হয়ে যায়।
প্রশ্ন ৪: এই ভাইরাল ভিডিও বা কৌশল কতটা বিশ্বাসযোগ্য?
উত্তর: কিছুটা বাস্তবসম্মত হলেও পুরোপুরি কার্যকর নয়। এটি নির্ভর করে অবস্থান, শেয়ারড ইউজ, এবং কভারেজের মানের ওপর।
মো: রাজিব আলী/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- সোনার বাজারে ঝড়! দাম পড়ে যেতে পারে ৮৫ হাজারে
- আমি বলব না কবুল”– তারপর কী ঘটল? ভাইরাল রাজনগরের বিয়ে (ভিডিওসহ)
- ভিন্সের উইকেট নেওয়ার পরও সাকিবকে বোলিংয়ে না আনায় ক্ষোভে সমর্থকরা
- মুস্তাফিজকে পরের ম্যাচে রাখার কারণ জানালেন দিল্লি অধিনায়ক
- শেয়ারবাজারে চাঙ্গাভাব ফেরাতে বড় উদ্যোগ অর্থ মন্ত্রণালয়ের
- ডিএসই সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন বাতিল করল বিএসইসি
- দেশের সোনার বাজার অস্থির: ১৮, ২১, ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য তালিকা
- গুজরাটের বড় জয়, দিল্লির অধিনায়কের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া
- দিল্লি ক্যাপিটালস ও গুজরাট টাইটানস: টস শেষ, জানুন একাদশে মুস্তাফিজের অবস্থান
- শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরাতে পাঁচ সদস্যের দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চাই
- একলাফে কমলো সোনার দাম, আজ ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম
- ম্যাচ হেরে আইপিএল থেকে বিদায়, ফাফ ডু প্লেসিসের কড়া মন্তব্য
- সেনানিবাসে আশ্রয় পাওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ
- চেন্নাইয়ের হাসপাতালে জনসম্মুখে শেখ হাসিনা, যা জানা গেল
- বিএসইসির সভায় পুঁজিবাজার উন্নয়নে ৯ দফা প্রস্তাব উত্থাপন