স্ত্রী অনুষ্কার কাঁধে মুখ লুকিয়ে কান্নায় ভাসলেন কোহলি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৬ বছরের অপেক্ষা। বারবার তীরে এসে তরী ডোবার যন্ত্রণা। প্রতিবার নতুন করে শুরু, আর প্রতিবারই শেষে শূন্য হাতে ফেরার বেদনা। আরসিবির এই দীর্ঘ যাত্রাপথের একান্ত সাক্ষী ছিলেন বিরাট কোহলি। আর সেই সফরের ছায়াসঙ্গী হয়ে ছিলেন অনুষ্কা শর্মা। মাঠে না নেমেও যিনি খেলেছেন—ভাঙা মন নিয়ে, গভীর প্রার্থনায়, নিঃশব্দ কান্নায়।

এবার আরসিবি জিতল। বিরাট জিতলেন। জয় এল, তবে শুধুই ট্রফির নয়—এটা ছিল ভালোবাসার, সহযাত্রার, এবং বিশ্বাসের জয়।

ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠজুড়ে উল্লাস। সতীর্থদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে নেমেছিলেন কোহলি। কিন্তু আসল গন্তব্য ছিল আরেকটু দূরে, বাউন্ডারির ধারে, যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় সমর্থক—অনুষ্কা। চোখে জল, মুখে হাসি—একটি নিঃশব্দ স্বস্তির নিঃশ্বাস।

দৌড়ে এলেন বিরাট, পেছনে ফেলে দিলেন সব আলো, ক্যামেরা, ভিড়। অনুষ্কাও ছুটে এলেন। দু’জন একে অপরকে জড়িয়ে ধরলেন ঠিক সেখানেই, যেখানে সময় যেন কিছুক্ষণ থেমে গেল। বিরাট মাথা রাখলেন অনুষ্কার কাঁধে—এক ঝলকে যেন সমস্ত ক্লান্তি ধুয়ে গেল।

"আমাদের গল্পটা শুধু ট্রফির নয়"

পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে বিরাট বললেন, “২০১৪ সাল থেকে ও আমার সঙ্গে আছে। মাঠে এসে ম্যাচের পর ম্যাচ দেখেছে। কখনো হাসি, বেশিরভাগ সময় চোখের জল। ও দেখেছে কতবার আমরা কাছাকাছি গিয়েও হেরে গেছি। কিন্তু কখনো পিছিয়ে যায়নি। একজন খেলোয়াড়ের জীবনসঙ্গী যা দেয়, তা ভাষায় বলা যায় না।”

তিনি আরও বলেন, “অনুষ্কা জানে আমি কতটা ভেঙে পড়েছি কিছু কিছু সময়ে। ও সবসময় আমার পাশে থেকেছে। আজ ওর চোখে আমি গর্ব দেখতে পাচ্ছি। সেটাই আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার।”

এই জয় বিরাটের জন্য যতটা, তার চেয়েও বেশি অনুষ্কার জন্য। প্রতিটা আউট হয়ে ফেরার রাতে, প্রতিটা হতাশার শেষে, যিনি চুপচাপ পাশে থেকেছেন, তিনিই তো আজকের এই জয়কে সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য।

যেন মাঠ থেকে উঠে এসে বিরাট বললেন—

“অনুষ্কা, আমি শুধু জিতিনি। আমরা জিতেছি। এই ট্রফি আমাদের দু’জনের।”

এটা শুধু আইপিএল ট্রফির গল্প নয়। এটা এক সম্পর্কের, এক ভালোবাসার, এক সমর্থনের মহাকাব্য। যেখানে প্রমাণিত হয়, সত্যিকারের জয় কেবল স্কোরবোর্ডে নয়—হৃদয়ে লেখা থাকে।

মো: রাজিব আলী/