ঢাকা, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কোরবানির মাংস তিন ভাগ না করলেই কি গোনাহ হবে

২০২৫ জুন ০৫ ১৮:৫৭:০৯
কোরবানির মাংস তিন ভাগ না করলেই কি গোনাহ হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুল আজহার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ কোরবানি। আর কোরবানির পর যে প্রশ্নটি অনেকেই নিয়ে ভাবেন বা বিতর্কে জড়ান, তা হলো—মাংস কি অবশ্যই তিন ভাগে ভাগ করতে হবে? নিজের জন্য এক ভাগ, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীর জন্য এক ভাগ, দরিদ্রদের জন্য আরেক ভাগ—এটাই কি ইসলামি বিধান? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দিয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামি চিন্তাবিদ ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করাটা কোনো ফরজ বা ওয়াজিব নয়; এটি একটি মুস্তাহাব, অর্থাৎ পছন্দনীয় ও উত্তম আমল।” অর্থাৎ, কেউ যদি এই তিনভাগে না ভাগ করেন, তার কোরবানি অগ্রহণযোগ্য হয়ে যাবে—এমনটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই।

শায়খ আহমাদুল্লাহ কোরআনের আলোকে ব্যাখ্যা করে বলেন, “আল্লাহ তাআলা কোরআনে কেবল দুটি কথা বলেছেন—তোমরা নিজেরা খাও এবং অভাবীদের খাওয়াও। কিন্তু কতো ভাগ হবে, কে কত পাবে—সেই অনুপাত নির্ধারণ করা হয়নি। সুতরাং কেউ যদি পুরো মাংস গরিবদের দিয়ে দেন, কিংবা নিজের জন্য বেশি রেখে দেন, তাও ইসলামি দৃষ্টিকোণে বৈধ।”

সমাজে এই বিষয়টি নিয়ে যেভাবে ‘গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান’ হিসেবে কঠোরতা আরোপ করা হয়, সেটিকে কিছুটা ‘অতিরঞ্জন’ বলেই মনে করেন তিনি। “অনেক সময় দেখা যায়, কেউ তিন ভাগে ভাগ করেননি বলে তাকে ভুল বলা হয়, এমনকি অপরাধী বানানোর চেষ্টা হয়,” বলেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। “ইসলাম এতটা কঠোর না। এখানে রয়েছে সৌন্দর্য, ভারসাম্য এবং উদ্দেশ্যের প্রতি নজর দেওয়ার নির্দেশ।”

তার ভাষায়, কোরবানির আসল উদ্দেশ্য শুধু পশু জবাই নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। সেই উদ্দেশ্য পূরণ হলেই মূল কাজ সম্পন্ন হয়। আর মাংসের বণ্টন—তা হওয়া উচিত হৃদয়ের উদারতা থেকে, ধর্মীয় শর্ত হিসেবে নয়।

শেষ কথায়, কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার ও সুচিন্তিত পদ্ধতি। তবে এটি ইসলামের পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেওয়া কোনো নিয়ম নয়। বরং উদারতা, বিবেচনা ও প্রয়োজনে ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই ইসলামি সৌন্দর্য।

তাই এবারের ঈদে ভাগ নয়, ভাবুন—কোরবানির মূল তাৎপর্য নিয়ে।

আব্দুর রহিম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ