ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইউনূস-তারেক বৈঠক: ফারুকী, জ্যোতি ও তুষারের প্রতিক্রিয়ায় চমক

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ১৬:১৬:৫৭
ইউনূস-তারেক বৈঠক: ফারুকী, জ্যোতি ও তুষারের প্রতিক্রিয়ায় চমক

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন হাওয়া। লন্ডনের অভিজাত ডরচেস্টার হোটেলের কক্ষে মুখোমুখি হলেন দুই মেরুর দুই মুখ—অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) শুরু হওয়া এই বৈঠক যেন অনেকদিন ধরে জমে থাকা কুয়াশার মধ্যে প্রথম সূর্যকিরণের মতো আলো ছড়াল রাজনৈতিক অঙ্গনে।

এই বৈঠকের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আলোড়ন উঠেছে দেশের রাজনৈতিক মহলে, গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিশ্লেষকরা বলছেন—এই আলোচনার প্রভাব শুধু ভবিষ্যতের নির্বাচন নয়, দেশের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক রূপরেখাকেও প্রভাবিত করতে পারে।

এমন এক সন্ধিক্ষণে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে ভোলেননি সংস্কৃতি উপদেষ্টা ও খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি ফেসবুকে লেখেন,

“সম্ভবত সর্বকালের সবচেয়ে প্রত্যাশিত সভাগুলির একটি! আশা করি এটি ঐক্যের পথ প্রশস্ত করবে—যা আমরা ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেখেছি!”

ফারুকীর এই কথায় স্পষ্ট—তিনি কেবল রাজনৈতিক সমঝোতার সম্ভাবনা দেখেননি, বরং তা জাতীয় ঐক্যের দ্বার খুলে দিতে পারে বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

তবে সবচেয়ে বিস্ময় তৈরি করেছেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। যিনি সাধারণত প্রগতিশীল ও আওয়ামীপন্থী মতাদর্শে পরিচিত, তিনিও তারেক রহমানের রাজনৈতিক পরিপক্কতাকে স্বীকার করে নিয়েছেন। জ্যোতি লিখেছেন,“গত ৮/১০ মাসে যে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে দেশের মানুষ তাকিয়েছিল, আমার মতে তাদের মধ্যে সব থেকে পরিপক্ক এবং কল্যাণমূলক কথাবার্তা বলে আসছে তারেক জিয়া। আশা করি এ মুহূর্তেও সে একটি ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত দেশকে উপহার দিবে।”

জ্যোতির এই মন্তব্য যেন রাজনীতির পরিচিত ছকের বাইরে গিয়ে এক নতুন বাস্তবতার সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে আমাদের—যেখানে মানুষ ব্যক্তি ও কর্ম দিয়ে মূল্যায়িত হচ্ছে, দলীয় পরিচয় দিয়ে নয়।

এদিকে, সব আলোচনার মাঝে ব্যতিক্রমী ভঙ্গিতে ব্যাঙ্গ ছুঁড়ে দিয়েছেন জনপ্রিয় উপস্থাপক ও চিকিৎসক আব্দুন নূর তুষার। জাতীয় নির্বাচনের নির্ধারিত সময় ও অর্থ বিতর্ককে টেনে এনে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,

“ভোট যারা দেয় তারা শুধু এপ্রিল মাসে টাকা নেয় না। তাই এপ্রিল মাসে পৃথিবীর সেরা নির্বাচন হবে।”

তুষারের এই রসিকতা নিছক ঠাট্টা নয়, বরং বিদ্যমান নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর জমে থাকা মানুষের ক্ষোভ আর হতাশার প্রতিফলন। কেউ কেউ বলছেন, এটি ইউনূস-তারেক বৈঠকের পর রাজনৈতিক ‘দেওয়াল লিখন’ হিসেবেও পাঠ করা যেতে পারে।

সব মিলিয়ে বলা যায়—লন্ডনের এই বৈঠক শুধু দুটি ব্যক্তির আলোচনা নয়, বরং এটি দেশের রাজনীতিতে একটি সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। যেটি হয়তো বর্তমান সংকট কাটিয়ে নতুন একটি পথ দেখাতে পারে জাতিকে। এখন দেখার বিষয়, এই আলোচনার ফসল কতটা ঘরে ওঠে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ