ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২

লিভারপুল-বোর্নমাউথ: প্রথম ম্যাচেই উত্তেজনায় ভরপুর লড়াই, থমকে যায় অ্যানফিল্ড

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৬ ০৯:২৫:২৮
লিভারপুল-বোর্নমাউথ: প্রথম ম্যাচেই উত্তেজনায় ভরপুর লড়াই, থমকে যায় অ্যানফিল্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: অ্যানফিল্ডের রাতটা শুরু হয়েছিল আবেগঘন পরিবেশে। এক মাস আগে স্পেনে সড়ক দুর্ঘটনায় ছোট ভাইসহ প্রাণ হারানো লিভারপুলের তারকা দিয়েগো জোতাকে স্মরণ করে নীরব দাঁড়িয়ে ছিলেন খেলোয়াড়, দর্শক থেকে শুরু করে সবাই। কিন্তু আবেগঘন সেই শুরুটা পরে রূপ নেয় টানটান উত্তেজনায় ভরা এক ফুটবল নাটকে। যেখানে কখনো লিভারপুল এগিয়ে গেছে, কখনো আবার সমতায় ফিরেছে বোর্নমাউথ। আর মাঝখানে ঘটে গেছে বর্ণবাদী আচরণের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, যার জবাব দিয়েছেন মাঠেই বোর্নমাউথের ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড অ্যান্তোইন সেমেনিও।

আবেগ থেকে আক্রমণ

ম্যাচের প্রথম বাঁশি বাজার চার মিনিট পরই প্রথম সুযোগ তৈরি করে লিভারপুল। মোহামেদ সালাহর জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন বোর্নমাউথের গোলরক্ষক। এরপর ফন ডাইকের হেড সামান্য উঁচু দিয়ে চলে যায়। ৩৭তম মিনিটে অ্যানফিল্ডে শোনা যায় প্রথম গোলের উল্লাস—অভিষিক্ত হুগো একিতিকে দুর্দান্ত এক শটে চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে দেন।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই ব্যবধান বাড়ায় লিভারপুল। একিতিকের পাস থেকে গোল করেন ডাচ ফরোয়ার্ড কোডি গাকপো। মনে হচ্ছিল, চ্যাম্পিয়নরা সহজ জয় পাবে।

বর্ণবাদী আচরণে থেমে যায় খেলা

কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্যালারিতে ঘটে যায় কলঙ্কজনক এক ঘটনা। বোর্নমাউথের আফ্রিকান স্ট্রাইকার সেমেনিওকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী আচরণ করেন এক দর্শক। মুহূর্তেই খেলা বন্ধ হয়ে যায়, কথা বলেন দুই দলের অধিনায়ক ও কোচ। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাই যেন বদলে দিল ম্যাচের চিত্র।

সেমেনিওর জোড়া গোল

ঘটনার পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন সেমেনিও। ৬৪ মিনিটে সতীর্থের পাস থেকে গোল করে ব্যবধান কমান তিনি। আর ৭৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া দুর্দান্ত শটে সমতায় ফেরান বোর্নমাউথকে। পুরো অ্যানফিল্ড যেন মুহূর্তেই থমকে যায়।

শেষ সময়ে লিভারপুলের প্রত্যাবর্তন

তবে শেষ হাসি হেসেছে চ্যাম্পিয়নরা। ৮৮ মিনিটে বদলি নেমে ভলিতে গোল করেন ইতালিয়ান তারকা ফেদরিকো চিয়েসা। যোগ করা সময়ে জালে বল জড়ান সালাহ। অ্যানফিল্ডে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে জয় তুলে নেয় লিভারপুল।

সালাহর নতুন মাইলফলক

এই গোলের মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে ১৮৭ গোল পূর্ণ করলেন মোহামেদ সালাহ। এতে তিনি অ্যান্ড্রু কোলের সঙ্গে যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। তার সামনে আছেন ওয়েইন রুনি (২০৮), হ্যারি কেইন (২১৩) ও কিংবদন্তি অ্যালান শিয়েরার (২৬০)। এ ছাড়া প্রিমিয়ার লিগের মৌসুম শুরুর ম্যাচে এটি ছিল সালাহর দশম গোল—যা তাকে শীর্ষে বসিয়েছে এককভাবে।

অ্যানফিল্ডের এই ম্যাচ তাই শুধু ফলাফলের জন্য নয়, বরং আবেগ, নাটকীয়তা, রোমাঞ্চ আর প্রতিবাদের জন্যও দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মো: রাজিব আলী/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ