ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

শেখ হাসিনার পতনের আগেই ড. ইউনূসকে সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ২২:৩০:৩৯
শেখ হাসিনার পতনের আগেই ড. ইউনূসকে সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়

জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি গোলাম মোর্তুজা মজুমদার-এর নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি এই দাবি জানান।

নাহিদ ইসলাম তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন যে, শেখ হাসিনার পতনের আগেই ড. ইউনূসকে সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তিনি জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নেতাদের ওপর নিপীড়ন ও হয়রানির বর্ণনা দেন, যেখানে ছাত্র সমন্বয়কদের ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলা হয়েছে।

নাহিদ ইসলাম জানান, ২০শে জুলাই রাতে তাকে চোখ বেঁধে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে ডিবি তুলে নিয়ে যায়। তাকে বলা হয়েছিল যে তাকে "গুম" করা হয়েছে এবং আন্দোলন প্রত্যাহার না করলে তাকে ছাড়া হবে না। ২৪ ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২৬শে জুলাই তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুনুর রশিদ জোরপূর্বক একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করান, যা মোবাইলে ধারণ করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়। ওই বক্তব্যে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, আন্দোলনের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ এবং আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি তুলে ধরা থেকে গণমাধ্যম বিরত ছিল। তার মতে, গণমাধ্যম ফ্যাসিবাদীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, যদিও কিছু সংবাদকর্মী এবং কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তিনি গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক দল ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলে উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, আন্দোলন থেকে সরে আসার জন্য বারবার চাপ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, যা জনগণের কাছে সমঝোতার একটি মিথ্যা চিত্র তুলে ধরার জন্য করা হয়েছিল।

ডিবি কার্যালয় থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, ২০২৪ সালের ১লা আগস্ট সমন্বয়করা এক দফা দাবিতে সরকার পতনের ডাক দেন। ৪ঠা আগস্ট রাতে তারা ড. ইউনূসকে নতুন সরকারের উপদেষ্টা করার বিষয়ে আলোচনা করেন এবং তাকে এই প্রস্তাব দেন।

সর্বমোট ৪৭ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে এই মামলায়। নাহিদ ইসলাম শেখ হাসিনার মামলায় প্রসিকিউশনের একজন সাক্ষী। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেবেন এবং তারপর যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করা হবে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ