ঢাকা, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২

Ballon d'Or 2025 Power Rankings: দেম্বেলে না ইয়ামাল, কার হাতে উঠবে ব্যালন ডি’অর?

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১২:৩৬:০১
Ballon d'Or 2025 Power Rankings: দেম্বেলে না ইয়ামাল, কার হাতে উঠবে ব্যালন ডি’অর?

ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরস্কার ব্যালন ডি'অর ২০২৩ প্রদানের জমকালো অনুষ্ঠান আজ রাতে বসছে প্যারিসের ঐতিহাসিক থিয়েটার দু শ্যাটলেটে। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে এই বহু প্রতীক্ষিত 'ফুটবলের অস্কার' রজনী, যেখানে রুড খুলিত ও কেট স্কটের মনোমুগ্ধকর সঞ্চালনায় একে একে ঘোষণা করা হবে বিভিন্ন বিভাগের বিজয়ীদের নাম। বরাবরের মতো ৬৯তম ব্যালন ডি'অর আসরের মূল আকর্ষণ বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলারের পুরস্কার। যদিও ৩০ জন খেলোয়াড় মনোনয়ন পেয়েছেন, তবে GOAL-এর চূড়ান্ত পাওয়ার র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে পিএসজির ফরাসি তারকা উসমান দেম্বেলে এবং বার্সেলোনার স্প্যানিশ সেনসেশন লামিন ইয়ামাল।

নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং গত মৌসুমের পারফরম্যান্স:

ফরাসি সাময়িকী 'ফ্রান্স ফুটবল' ব্যালন ডি'অরের আয়োজক হলেও, বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয় ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০০ দেশের একজন করে সাংবাদিকের ভোটে। সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র গত মৌসুমের ক্লাব পারফরম্যান্সকে (২০২৪-২৫ সিজন) বিবেচনা করা হয়েছে। গত বছর ম্যানচেস্টার সিটির রদ্রি রিয়াল মাদ্রিদের ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তবে রদ্রি ইনজুরির কারণে এবারের দৌড়ে নেই, ফলে নতুন একজন চ্যাম্পিয়নের উত্থান নিশ্চিত।

চূড়ান্ত পাওয়ার র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা ৫:

ইউরোপের ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বছরের ব্যালন ডি'অর রেস ছিল গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ক্লাব পারফরম্যান্সই ছিল মূল বিবেচ্য বিষয়, কারণ এই মৌসুমে কোনো বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ছিল না।

১. উসমান দেম্বেলে (পিএসজি):

গত মৌসুমে সব মিলিয়ে ৩৭ গোল এবং ১৬ অ্যাসিস্ট করে দেম্বেলে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। পিএসজির লিগ ১, কুপ ডি ফ্রান্স এবং ট্রফি দে চ্যাম্পিয়ন্স জেতার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। লিভারপুল ও আর্সেনালের বিপক্ষে নকআউট পর্বে তার গোল এবং ফাইনালে দুটি অ্যাসিস্ট তাকে এই র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে নিয়ে এসেছে।

২. লামিন ইয়ামাল (বার্সেলোনা):

ব্যালন ডি'অর জেতার ক্ষেত্রে ২১ বছরের কম বয়সী কোনো খেলোয়াড় না থাকলেও, লামিন ইয়ামাল সেই রেকর্ড ভাঙতে পারেন। ২১ গোল এবং ২৬ অ্যাসিস্ট নিয়ে বার্সেলোনার লা লিগা, কোপা দেল রে এবং সুপারকোপা দে এস্পানা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এই ১৮ বছর বয়সী তারকা। তার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পারফরম্যান্স, বিশেষ করে সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে, তাকে শিরোপার অন্যতম দাবিদার করেছে।

৩. ভিতিনহা (পিএসজি):

পিএসজির মাঝমাঠের প্রাণভোমরা ভিতিনহা ৮ গোল এবং ৮ অ্যাসিস্টের পাশাপাশি দলের ট্রেবল জয়ে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার নেতৃত্বসুলভ পারফরম্যান্স এবং পর্তুগালের হয়ে নেশনস লিগ জেতা তাকে এবারের সেরাদের তালিকায় উপরের দিকে নিয়ে এসেছে।

৪. রাফিনহা (বার্সেলোনা):

বার্সেলোনার আক্রমণভাগের অন্যতম প্রধান শক্তি রাফিনহা গত মৌসুমে ৩৯ গোল এবং ২৫ অ্যাসিস্ট করে ঘরোয়া ট্রেবল জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাকে এই র‍্যাঙ্কিংয়ের চতুর্থ স্থানে রেখেছে।

৫. মোহাম্মদ সালাহ (লিভারপুল):

লিভারপুলের হয়ে ৩৬ গোল এবং ২৪ অ্যাসিস্ট করে সালাহ প্রিমিয়ার লিগ জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে তাড়াতাড়ি বিদায় এবং কারাবাও কাপ ফাইনালে অনুপস্থিতি তার সম্ভাবনা কিছুটা কমিয়েছে, তবুও আফ্রিকার প্রথম ব্যালন ডি'অর জয়ী হওয়ার সুযোগ তার এখনো রয়েছে।

৬-২০ পর্যন্ত অন্যান্য শীর্ষ খেলোয়াড়রা:

৬. কিলিয়ান এমবাপ্পে (রিয়াল মাদ্রিদ): ৪৬ গোল, ৭ অ্যাসিস্ট। উয়েফা সুপার কাপ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জয়ী।

৭. আশরাফ হাকিমি (পিএসজি): ১৩ গোল, ১৭ অ্যাসিস্ট, ২৬ ক্লিনশিট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ ১, কুপ ডি ফ্রান্স ও ট্রফি দে চ্যাম্পিয়ন্স জয়ী।

৮. দেজায় দুয়ে (পিএসজি): ১৬ গোল, ১৬ অ্যাসিস্ট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ ১, কুপ ডি ফ্রান্স ও ট্রফি দে চ্যাম্পিয়ন্স জয়ী।

৯. খিচা কাভারাতশেলিয়া (পিএসজি): ১৫ গোল, ১৩ অ্যাসিস্ট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ ১, কুপ ডি ফ্রান্স ও সেরি এ জয়ী।

১০. নুনো মেন্ডেস (পিএসজি): ৭ গোল, ১২ অ্যাসিস্ট, ১৮ ক্লিনশিট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ ১, কুপ ডি ফ্রান্স, ট্রফি দে চ্যাম্পিয়ন্স ও উয়েফা নেশনস লিগ জয়ী।

১১. হ্যারি কেইন (বায়ার্ন মিউনিখ): ৪৮ গোল, ১৪ অ্যাসিস্ট। বুন্দেসলিগা জয়ী।

১২. কোল পালমার (চেলসি): ১৮ গোল, ১৪ অ্যাসিস্ট। ক্লাব বিশ্বকাপ ও কনফারেন্স লিগ জয়ী।

১৩. পেদ্রি (বার্সেলোনা): ৭ গোল, ১০ অ্যাসিস্ট। লা লিগা, কোপা দেল রে ও সুপারকোপা দে এস্পানা জয়ী।

১৪. রবার্ট লেভানডফস্কি (বার্সেলোনা): ৪৪ গোল, ৫ অ্যাসিস্ট। লা লিগা, কোপা দেল রে ও সুপারকোপা দে এস্পানা জয়ী।

১৫. জিয়ানলুইজি ডোনারুমা (পিএসজি): ১৯ ক্লিনশিট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ ১, কুপ ডি ফ্রান্স ও ট্রফি দে চ্যাম্পিয়ন্স জয়ী।

১৬. ভিক্টর গাইওকেরেস (আর্সেনাল): ৬৩ গোল, ১৬ অ্যাসিস্ট। লিগা পর্তুগাল ও তাকা দে পর্তুগাল জয়ী।

১৭. জোয়াও নেভেস (পিএসজি): ৭ গোল, ১০ অ্যাসিস্ট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ ১, কুপ ডি ফ্রান্স, ট্রফি দে চ্যাম্পিয়ন্স ও উয়েফা নেশনস লিগ জয়ী।

১৮. ভিনিসিয়াস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ): ২৪ গোল, ২০ অ্যাসিস্ট। উয়েফা সুপার কাপ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জয়ী।

১৯. মাইকেল ওলিসে (বায়ার্ন মিউনিখ): ২২ গোল, ২৪ অ্যাসিস্ট। বুন্দেসলিগা জয়ী।

২০. স্কট ম্যাকটমিনে (নাপোলি): সেরি এ MVP।

কোচের পুরস্কার ও অন্যান্য বিভাগ:

সেরা কোচের পুরস্কারের জন্য বার্সার হান্সি ফ্লিক মনোনয়ন পেলেও, পিএসজির লুইস এনরিকে সম্ভাবনার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছেন।ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের বিজয়ীর নাম জানতে। কে হাসবেন শেষ হাসি, দেম্বেলে নাকি ইয়ামাল, নাকি অন্য কেউ চমক দেখাবেন? তা জানতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ