ঢাকা, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

বিনিয়োগকারীদের দুঃস্বপ্ন! ৪ শেয়ারে ৯৬% পর্যন্ত পতন কেন?

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৩:৫৫:০১
বিনিয়োগকারীদের দুঃস্বপ্ন! ৪ শেয়ারে ৯৬% পর্যন্ত পতন কেন?

দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল ও বস্ত্র খাতের চারটি কোম্পানি বর্তমানে তাদের এক বছরের সর্বনিম্ন দামে লেনদেন হচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অ্যাপেলো ইস্পাত, সুহ্নদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফ্যামিলি টেক্স এবং রিংশাইন টেক্সটাইলের শেয়ারের লাগামহীন পতনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

প্রকৌশল ও বস্ত্র খাতের চার কোম্পানির ভয়াবহ পতন:

বৃহস্পতিবারের লেনদেন অনুযায়ী, প্রকৌশল খাতের অ্যাপেলো ইস্পাতের শেয়ার ২ টাকা ৬০ পয়সায় এবং সুহ্নদ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার ৪ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে, বস্ত্র খাতের ফ্যামিলি টেক্সের শেয়ার ১ টাকা ৮০ পয়সায় এবং রিংশাইন টেক্সটাইলের শেয়ার ২ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এই চারটি শেয়ারই তাদের গত এক বছরের সর্বনিম্ন দরে অবস্থান করছে।

এক নজরে পতন:

অ্যাপেলো ইস্পাত: ৯৬% পতন।

সুহ্নদ ইন্ডাস্ট্রিজ: ১১৪.৫৩% পতন।

ফ্যামিলি টেক্স: ৮৩.৩৩% পতন।

রিংশাইন টেক্সটাইল: ৮১.৩০% পতন।

এই ভয়াবহ পতন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা তলানিতে নিয়ে গেছে। যারা উচ্চমূল্যে এসব শেয়ার কিনেছিলেন, তাদের পুঁজির একটি বড় অংশ কার্যত গলে গেছে। অনেক বিনিয়োগকারী আশা করেছিলেন যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব শেয়ার ঘুরে দাঁড়াবে, কিন্তু বাস্তবতা হয়েছে ঠিক উল্টো। তাদের কয়েক বছর আগের স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে, এবং তারা হতাশা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ:

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বলছেন, শেয়ারবাজারে এতটা ধস তারা কল্পনাও করেননি। তাদের পুঁজির বড় অংশ এখন পানির নিচে। ফলে অনেকেই নিরুপায় হয়ে শেয়ার ধরে রেখেছেন, আবার কেউ কেউ ক্ষতি মেনে নিয়েই বাজার থেকে বের হয়ে গেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতামত ও আশার আলো:

বাজারসংশ্লিষ্টরা অবশ্য একে পুরোপুরি অন্ধকার দেখছেন না। তাদের মতে, বাংলাদেশের প্রকৌশল ও বস্ত্র উভয় খাতই শ্রমঘন ও রপ্তানিমুখী। দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক পোশাক চাহিদার কারণে এই খাতে দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, কোম্পানিগুলোর করপোরেট গভর্ন্যান্স জোরদার করা, সঠিক আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহণ এবং দায়-দেনার ভারসাম্য আনা জরুরি।

তারা আরও মনে করেন, বর্তমানে পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশাজনক হলেও, খাতের দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনা এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (DSE) নিয়মিত নজরদারি কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল শক্তিশালী স্বচ্ছতা, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং বাজারে আস্থা ফিরলেই আলোচ্য শেয়ারগুলো আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

ভবিষ্যৎ পথ:

এই চার কোম্পানির জন্য ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দীর্ঘ এবং চ্যালেঞ্জিং। কোম্পানিগুলোকে তাদের আর্থিক কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে, করপোরেট গভর্ন্যান্স উন্নত করতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। ডিএসই এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এই কোম্পানিগুলোর উপর নিবিড় নজরদারি রাখতে হবে যাতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ