ঢাকা, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

প্রাথমিকের শিক্ষকদের জন্য বড় সুখবর

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৭ ১৬:৩৮:১৩
প্রাথমিকের শিক্ষকদের জন্য বড় সুখবর

প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি: স্লিপের বরাদ্দ তিন লাখ টাকা, ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের পথে

প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার ও শিক্ষকদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির খবর দিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। বিদ্যালয় পরিচালনা ও আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে প্রধান শিক্ষকদের জন্য ‘স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান (স্লিপ)’ বাবদ বরাদ্দ দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহাপরিচালক এই বড় ধরনের পদক্ষেপের কথা বিস্তারিত জানান।

স্লিপের অর্থ বৃদ্ধি, ক্ষমতা বাড়ছে প্রধান শিক্ষকের

বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত ও সংস্কার কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হচ্ছে। আবু নূর মো. শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, স্লিপ কর্মসূচির জন্য প্রধান শিক্ষকরা পূর্বে সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারতেন। এই নির্ধারিত পরিমাণ এখন বাড়িয়ে তিন লক্ষ টাকা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কেবল স্লিপের অর্থ বৃদ্ধিই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও শিক্ষকরা যেন আর্থিকভাবে ক্ষমতাবান হতে পারেন সেই লক্ষ্যে কাজ করছে অধিদপ্তর। বিশেষ করে নির্মাণ বা মেরামতের কাজের বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষা অফিসারের যৌথ স্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে, যা একটি সম্মিলিত জবাবদিহিতার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। মহাপরিচালক আশা করছেন, ভবিষ্যতে প্রধান শিক্ষকদের আরও বেশি প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া সম্ভব হবে।

দ্রুত আসছে ১০ম গ্রেড, ১১তম গ্রেডের সুপারিশ পে-কমিশনে

শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে দশম ও একাদশ গ্রেড সংক্রান্ত বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন মহাপরিচালক।

তিনি নিশ্চিত করেন, প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এটি দ্রুত বাস্তবায়নের পথে কাজ চলছে। অন্যদিকে, সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে এবং বিষয়টি পে কমিশনে আলোচনাও হয়েছে বলে তিনি জানান।

শূন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসছে নভেম্বরে

সারা দেশে বর্তমানে ১৩ হাজার ৫০০ সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। মহাপরিচালক জানিয়েছেন, শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা হাতে পাওয়া মাত্রই এই পদগুলোতে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে অর্থাৎ আগামী নভেম্বর মাসেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সম্ভব হবে।

৩২ হাজার পদে পদোন্নতির দীর্ঘদিনের জট

মহাপরিচালক একটি বড় প্রশাসনিক সমস্যার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বর্তমানে প্রায় ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে অথবা চলতি দায়িত্বে কর্মরত রয়েছেন।

একটি মামলার কারণে এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবু নূর মো. শামসুজ্জামান আশা করেন যে খুব অল্প সময়ে এই মামলার রায় হয়ে যাবে। এই রায় প্রধান শিক্ষকদের ৩২ হাজার পদ পূরণে সহায়ক হবে। ফলস্বরূপ, ওই পদগুলো পূরণের সঙ্গে সঙ্গে ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হবে এবং তখন ওইসব পদে ব্যাপক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।আগামী ৫ বছরে জরাজীর্ণ স্কুল থাকবে না

প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্মাণ কাজ থেকে শুরু করে সংস্কার কাজের জন্য অধিদপ্তর বহু প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

মহাপরিচালক দৃঢ়তার সাথে বলেন, এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে আর কোনো জরাজীর্ণ স্কুল ভবন থাকবে না।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে খুব গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নেতৃত্বদানের প্রশিক্ষণ (লিডারশিপ ট্রেনিং)-সহ অন্যান্য প্রশিক্ষণগুলোকে আরও ইনক্লুসিভ করার লক্ষ্যে অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ