ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

৪ এনবিএফআইয়ের শেয়ার মাত্র ৯০ পয়সা! তারল্য বাড়াতে ডিএসইর নিয়ম বদল

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৪ ০৭:৩৭:২৭
৪ এনবিএফআইয়ের শেয়ার মাত্র ৯০ পয়সা! তারল্য বাড়াতে ডিএসইর নিয়ম বদল

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) শেয়ারদর এখন ১ টাকা নামের নিচে স্থান করে নিয়েছে, যা দেশের পুঁজিবাজারের অস্থিরতার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাজারে অর্থের জোগান হ্রাস এবং পুঁজি বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীদের অনীহার কারণে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর দর ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর হিসাব মতে, বর্তমানে ১ টাকার নিচে হাতবদল হওয়া শেয়ারগুলোর তালিকায় রয়েছে— পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

এই চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রিমিয়ার লিজিং এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ার সোমবার (০৩ নভেম্বর) ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এর আগে গত ২১ অক্টোবর পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার এবং ২৬ অক্টোবর ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার একই ৯০ পয়সার সর্বনিম্ন দরে রেকর্ড করা হয়েছিল।

দুর্বল শেয়ারের জন্য ডিএসইর নতুন সংস্কার

এই পরিস্থিতিতে, দুর্বল ও স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলোর লেনদেন দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) একটি নতুন টিক সাইজ নিয়ম কার্যকর করেছে। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ থেকে এই নিয়মটি প্রযোজ্য হচ্ছে।

পূর্বে শেয়ারদর ওঠানামার সর্বনিম্ন ব্যবধান ছিল ১০ পয়সা। এর ফলে স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলোর মূল্য সমন্বয় কঠিন ছিল। নতুন নিয়মে, ১ টাকার নিচে থাকা সিকিউরিটিজগুলোর দর এখন থেকে মাত্র ১ পয়সা ব্যবধানে পরিবর্তন হতে পারবে। এই সূক্ষ্ম মূল্য সমন্বয়ের কারণে লেনদেন আরও নিখুঁত হবে এবং বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে।

ডিএসই কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই সংস্কার সার্কিট ব্রেকারের কারণে সৃষ্ট স্থবিরতা দূর করবে এবং স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলোর সহজে বিক্রয়যোগ্যতা (তারল্য) বৃদ্ধি করবে। ডিএসইর অটোমেটেড ট্রেডিং রেগুলেশনস, ১৯৯৯-এর ১৮ নম্বর বিধি অনুসারে এই পরিবর্তনটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বাজারের সার্বিক চিত্র এবং বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

ডিএসইর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে ১০০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড তাদের ১০ টাকা ফেস ভ্যালুর নিচে লেনদেন করছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০টি কোম্পানি (যা ব্যাংক, বীমা, এনবিএফআই, টেক্সটাইল, খাদ্য, পরিষেবা এবং প্রকৌশল খাতের) এবং ৩৪টি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। যা গভীরভাবে চিন্তার বিষয়, সেই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ৫৫টির শেয়ারদর ৫ টাকারও নিচে নেমে গেছে।

বাজার বিশেষজ্ঞরা এই দীর্ঘমেয়াদি মহামন্দার পেছনে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, তারল্য সংকট এবং দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণকে প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, বাজারে বিরাজমান এই হতাশার ফলে নতুন পুঁজি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন এবং পুরোনো বিনিয়োগকারীরা অধিক হারে শেয়ার বিক্রিতে উৎসাহিত হচ্ছেন, যা সামগ্রিকভাবে লেনদেনের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে এবং দরকে আরও নিচে ঠেলে দিচ্ছে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ