ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ঘোষণা: পাঁচ মার্জিং ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের ভাগ্য সিলমোহর!

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ২২:৩৮:৫৬
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ঘোষণা: পাঁচ মার্জিং ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের ভাগ্য সিলমোহর!

মার্জার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে যাওয়া পাঁচটি সংকটাপন্ন ব্যাংকের সাধারণ লগ্নিকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের অধিকার সুরক্ষার কোনো অবকাশ বর্তমানে 'ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ, ২০২৫' অনুযায়ী নেই। তবে এই পরিস্থিতিতে সরকার বিশেষ বিবেচনায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও শেয়ার মালিকদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বিবি) প্রদত্ত এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় উল্লেখ করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কঠিন বার্তা এমন এক সময় প্রকাশিত হলো, যখন গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের আগের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বাজারে ব্যাপক হতাশা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর জানিয়েছিলেন যে, যেহেতু তাদের বিদ্যমান শেয়ারের সাথে সম্পর্কিত সম্পদের মূল্য ইতিমধ্যেই ঋণাত্মক, তাই এই পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা নতুন ব্যাংকের কোনো শেয়ার পাবেন না। গভর্নরের এই মন্তব্যের ফলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।

আন্তর্জাতিক পরামর্শে অধ্যাদেশ প্রণয়ন

বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বিবৃতিতে স্পষ্ট করেছে যে, 'ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ, ২০২৫' প্রণয়ন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক আচরণের ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্ব ব্যাংক এবং ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (FCDO) মতো আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থান ও কারিগরি সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর পরামর্শক্রমে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই অধ্যাদেশে রেজোলিউশনের আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলোর আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডার এবং অন্যান্য পাওনাদারদের অধিকার সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

'নেট অ্যাসেট ভ্যালু' ঋণাত্মক: লোকসানের ভার বহনের সিদ্ধান্ত

তথ্যের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এবং বিশেষ পরিদর্শনের মাধ্যমে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক কনসাল্টিং ফার্ম পরিচালিত ‘সম্পদ মানের পর্যালোচনা’ (Asset Quality Review) অনুযায়ী ব্যাংকগুলোতে ইতোমধ্যেই বিশাল লোকসান হয়েছে এবং তাদের নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV) ঋণাত্মক।

এই গুরুতর প্রেক্ষাপটে, অধ্যাদেশের ৪২ ধারার অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকিং সেক্টর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির (বিসিএমসি) এক সাম্প্রতিক বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, “রেজোলিউশনের আওতাভুক্ত পাঁচটি সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদেরই লোকসানের দায়ভার বহন করতে হবে”।

ক্ষতিপূরণের দুই সম্ভাব্য পথ

'ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ, ২০২৫'-এর প্রাসঙ্গিক বিধান এবং বিসিএমসি’র সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে, এই পাঁচটি ব্যাংকের মার্জার প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষার কোনো সুযোগ বর্তমানে না থাকলেও, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবৃতিতে দুটি ভিন্ন আশার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে:

১. রেজোলিউশন প্রক্রিয়া সমাপ্তির পর, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিযুক্ত একজন স্বাধীন পেশাদার মূল্য নির্ধারক দ্বারা পরিচালিত মূল্যায়নের ভিত্তিতে যদি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য বলে প্রমাণিত হয়, তবে তা প্রদান করা যেতে পারে।

২. বিদ্যমান কঠিন পরিস্থিতিতে সরকার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ