ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

হতাশার রাতে হামজার নতুন বার্তা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১০:১০:০০
হতাশার রাতে হামজার নতুন বার্তা

বাংলাদেশের ফুটবলে আরেকটি পরিচিত দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হলো – খেলার অন্তিম মুহূর্তে এসে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ। হামজা চৌধুরীর জোড়া গোলের ঝলকানি সত্ত্বেও জাতীয় দল ঘরের মাঠে নেপালের সঙ্গে ২-২ গোলের হতাশাজনক ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। পুরো ম্যাচে হামজার অসাধারণ নৈপুণ্য শেষ পর্যন্ত ম্লান হয়ে যায় শেষ বাঁশির ঠিক আগের মুহূর্তে।

এই সমতা সদ্য শেষ হওয়া এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের বেদনাহত স্মৃতি ফিরিয়ে আনল, যেখানে হংকং চায়নার বিপক্ষে ইনজুরি টাইমের গোলে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে বাংলাদেশের সব আশা ধূলিসাৎ হয়েছিল। এবারও নেপালের বিপক্ষে ২-২ গোলের ড্র হামজা চৌধুরীর বীরত্বকে ঢেকে দিল।

হামজার বাইসাইকেল জাদুতে গ্যালারিতে বিস্ফোরণ

প্রথমার্ধে ডিফেন্সের ভুলে গোল হজম করে দল পিছিয়ে থাকার পর, দ্বিতীয়ার্ধে দৃশ্যপটে এলেন হামজা। ফ্যানদের তৃষ্ণার্ত অপেক্ষার অবসান ঘটাতে তিনি উপহার দিলেন এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। অধিনায়ক জামালের হালকা উঠিয়ে মারা বল বক্সের মধ্যে পেয়ে শূন্যে ভেসে উঠলেন হামজা, এরপর দুর্দান্ত বাইসাইকেল কিকে বল জালে জড়ালেন। এই চোখ ধাঁধানো গোলে জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি উল্লাসে ফেটে পড়ল।

সমতা ফেরানোর মিনিট চারেকের মধ্যেই লিডও চলে আসে বাংলাদেশের হাতে। সুমন শ্রেষ্ঠা স্বাগতিক ফরোয়ার্ড রাকিবকে বক্সের মধ্যে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। হামজা এবার বুদ্ধিদীপ্ত ও মাপা স্পট কিকে বল জালে পাঠিয়ে দলকে এগিয়ে দেন। তবে এই দুটি গোলের বাইরে দল তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। এছাড়া চোট নিয়ে হামজা ও জায়ান মাঠ ছাড়ার সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে নেপাল।

অন্তিম মুহূর্তের আঘাত ও ঐক্যের বার্তা

খেলা যখন শেষের দিকে, ঠিক ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে নাটকীয়তার জন্ম। কর্নার থেকে অনন্ত তামাং দারুণ দক্ষতায় একটি ফ্লিক করেন, যা গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে ব্যর্থ করে বাংলাদেশের জালে জড়িয়ে যায়। ফলে ২-২ সমতায় শেষ হয় ম্যাচটি।

এমন হতাশাজনক উপসংহার সত্ত্বেও, হামজা চৌধুরীর চোখ এখন ভবিষ্যতের দিকে। মাঠ থেকে উঠে আসার পর ডাগআউটে প্রবাসী এই প্রিমিয়ার লিগ তারকার পায়ে আইস ব্যাগ দেখা গেলেও, বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বিশ্বাস করেন এই চোট দুশ্চিন্তার কারণ হবে না।

পরবর্তীতে সমর্থকগোষ্ঠীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে হামজা লেখেন: "এটি শেষমুহূর্তের (গোলের) কারণে আরেকটি হতাশার রাত। ম্যাচটি আমাদের জেতা উচিত ছিল। আপনাদের নিরন্তর ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ, আসুন আমরা একসঙ্গে থাকি! আমরা আসন্ন বড় ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হই, এবং সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ।"

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বরে ২-০ গোলে জয়ের পর গত ৫ বছরে নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঝুলিতে এসেছে দুটি হার ও দুটি ড্র। তবে এখন হামজা-জামালদের পুরো মনোযোগ আগামী ১৮ নভেম্বরের দিকে। সেদিন জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে শক্তিশালী ভারতকে আতিথ্য দেবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ