Alamin Islam
Senior Reporter
ইসলামে হালাল-হারামের মূলনীতি: কোন কোন খাবার পরিহার করা আবশ্যক?
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। মানুষের শারীরিক ও আত্মিক সুস্থতার জন্য ইসলাম খাবারের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রদান করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, "হে মানবমণ্ডলী! পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র, তা থেকে তোমরা আহার করো।" (সূরা বাকারা: ১৬৮)। ইসলামে খাবার গ্রহণের মূলনীতি হলো—সবকিছুই মূলত হালাল, যতক্ষণ না সেটি হারাম হওয়ার ব্যাপারে শরিয়তে স্পষ্ট নিষেধ থাকে।
তবে কিছু খাবার ও পানীয়কে ইসলামে স্পষ্টভাবে ‘হারাম’ বা বর্জনীয় ঘোষণা করা হয়েছে। নিচে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সেসব খাবারের বিবরণ তুলে ধরা হলো:
১. মৃত জন্তু (Maytah):
যেকোনো পশু বা পাখি যদি স্বাভাবিকভাবে মারা যায় বা জবেহ করা ছাড়া অন্য কোনো কারণে প্রাণ হারায়, তবে তা খাওয়া হারাম। তবে মাছ ও পঙ্গপাল এই নিয়মের অন্তর্ভুক্ত নয়; এগুলো মৃত হলেও হালাল।
২. প্রবাহিত রক্ত:
পশু জবেহ করার সময় যে রক্ত প্রবাহিত হয়, তা পান করা বা খাবারের সাথে গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। তবে কলিজা বা প্লীহার মতো অঙ্গের ভেতরে লেগে থাকা রক্ত হারাম নয়।
৩. শূকরের মাংস:
ইসলামে শূকরকে অত্যন্ত অপবিত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। এর মাংস, চর্বি বা হাড় থেকে তৈরি যেকোনো উপাদান গ্রহণ করা সম্পূর্ণ হারাম। পবিত্র কুরআনে স্পষ্টভাবে শূকরের মাংসকে ‘রিজস’ বা অপবিত্র বলা হয়েছে।
৪. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবেহ করা পশু:
যদি কোনো পশু বা পাখি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি, মূর্তি বা দেব-দেবীর নামে উৎসর্গ করা হয় বা জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম না নেওয়া হয়, তবে তা হালাল থাকবে না।
৫. নেশাজাতীয় দ্রব্য ও অ্যালকোহল:
মদসহ সকল প্রকার নেশাজাতীয় দ্রব্য ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বা হারাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যেসব দ্রব্য বেশি পরিমাণে সেবন করলে নেশা হয়, তার সামান্য অংশও হারাম।" আধুনিক অনেক প্রক্রিয়াজাত খাবারে অ্যালকোহলের উপস্থিতি থাকে, যা এড়িয়ে চলা ঈমানি দায়িত্ব।
৬. হিংস্র পশু ও নখযুক্ত পাখি:
যেসব পশু অন্য পশুকে শিকার করে খায় (যেমন: বাঘ, সিংহ, নেকড়ে, কুকুর) এবং যেসব পাখি নখ দিয়ে শিকার করে (যেমন: ইগল, বাজপাখি, শকুন), তাদের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।
৭. নোংরা ও ঘৃণ্য প্রাণী:
যেসব প্রাণী দেখতে বা প্রকৃতিগতভাবে নোংরা, যেমন—ইঁদুর, সাপ, বিচ্ছু বা পোকা-মাকড়, সেগুলো খাওয়া পরিহার করা আবশ্যক।
হালাল হওয়ার শর্ত: ‘জবেহ’ করার পদ্ধতি
তৃণভোজী বা গৃহপালিত পশু (গরু, ছাগল, উট, মুরগি ইত্যাদি) হালাল হওয়ার জন্য সেগুলো ইসলামি পদ্ধতিতে ‘জবেহ’ করা জরুরি। জবেহ করার সময় অবশ্যই আল্লাহর নাম নিতে হবে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্বাসনালি, অন্ননালি এবং প্রধান দুটি রক্তনালি কেটে দিতে হবে।
কেন এই কঠোরতা?
ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, হারামের প্রভাব কেবল শরীরের ওপর নয়, বরং মানুষের চরিত্র ও ইবাদতের ওপরও পড়ে। হারাম খাদ্য গ্রহণ করলে দোয়া কবুল হয় না এবং অন্তরে কলুষতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত যে, রক্ত বা মৃত পশুর মাংসে অনেক ক্ষতিকারক জীবাণু থাকে যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
খাদ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজন মুসলিমকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে প্রক্রিয়াজাত খাবারের যুগে ই-কোড (E-codes) বা উপাদানের তালিকায় কোনো হারাম উপাদান আছে কি না, তা যাচাই করা প্রয়োজন। হালাল পথে উপার্জিত অর্থ দিয়ে হালাল খাবার গ্রহণ করাই হলো পরকালীন মুক্তির অন্যতম মাধ্যম।
আল-মামুন/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- তারেক রহমানের নির্দেশ বিএনপির মনোনয়নে বড় রদবদল: বাদ পড়লেন যারা
- বাংলাদেশকে না বলে দিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড
- হাদিকে যে প্রস্তাব দিয়েছিল ফয়সাল, সামনে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
- ৩টি পাপ করলে মানুষ দ্রুত মারা যায়
- অবিশ্বাস্য বিশ্ব রেকর্ড:১ ওভারে ৫ উইকেট নিয়ে গড়লো নতুন ইতিহাস
- অনার্স ১ম বর্ষের রেজাল্ট ২০২৫ প্রকাশ: ফলাফল দেখুন এখানে
- রুমিন ফারহানাকে বড় দু:সংবাদ দিল বিএনপি
- নির্বাচনের আগেই বিএনপির তিন নেতার বিদ্রোহে উত্তাল রাজনীতি
- নায়ক রিয়াজ মারা গেছেন না বেঁচে আছেন কি ঘটেছে জানা গেল আসল সত্য
- বিপিএল: এক নজরে জানুন ৬ দলের স্কোয়াড, সময়সূচি ও লাইভ দেখার উপায়
- নতুন পে স্কেল আপডেট: সরকারি কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার
- চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমায় বড় সংশোধন: নতুন অধ্যাদেশ জারি করল সরকার
- তারেক রহমানের দেশে ফেরা: ১৮ বছর পর বিএনপির সামনে ৫টি কঠিন চ্যালেঞ্জ
- স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়লে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি, রুমিন ফারহানার কী হবে
- ৩ দিনের লম্বা ছুটি: বন্ধ থাকবে দেশের যেসব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান