বিশ্ব ক্রিকেট মাতানো সেরা ৫ মিক্সড বোলারের তালিকায় আছেন দুই বাংলাদেশী ক্রিকেটার

একই ওভারে কখনো শর্ট রানআপে স্পিন করছেন কখনো দূর থেকে দৌড়ে এসে মিডিয়াম ফাস্ট অফ আবার অপ স্পিনের পাশাপাশি লেগ স্পিন করছেন। ব্যাটসম্যান প্রতিপক্ষ ম্যাচ সিচুয়েশন অনুযায়ী হাওয়েলের বোলিং স্টাইল ঘটে পরিবর্তন।

বেনি হাওয়েল বলেন, আমি প্রথম যখন লেগ স্পিন চেষ্টা করছিলাম তখন তো অরজিনাল উইকেটে বল ফেলতে পারেনি। পরে ধীরে ধীরে নেট অফ স্পিন লেগ স্পিন করি। কোচরা বললো ম্যাচেই ট্রাই করতে পারো। পরে ম্যাচেই প্রয়োগ করতে পারে কারতে লাগলাম। আমি বল করি যাতে দলের বোলিং বৈচিত্র বাড়ে। হাওয়েলের মত এই ধরনের বোলার বিশ্ব খুব একটা নাই।এই ধরনের বোলারদের ক্রিকেটীয় পরিভাষায় বলা মিক্সড বোলার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে এই ধরনের বলার খুব বেশি নেই তবে রয়েছে অতি পরিচিত কিছু নাম। এমনকি সর্বকালের সেরা কিছু নাম। মিক্সড বোলারদের তালিকায় রয়েছে কিছু বাংলাদেশ ক্রিকেটারের নাম। ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের তালিকায় যার নাম প্রথম তিন জনের মধ্যেই থাকবে সেই গ্যারি সোবার্স নিজের ক্যারিয়ারের ১৩০০ শোর বেশি উইকেট নিয়েছেন তিন ধরনের বোলিং করে।

বাঁহাতি স্পিনার পাশাপাশি নতুন বল হাতে পেস বোলিং তিনি নিয়মিত করতে আবার বাঁহাতি স্পিনার বলিং ছিল তাঁর অসীম দক্ষতা। একোবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের ক্রিকেটভক্তরা অস্ট্রেলিয়ার এই ঝাকড়া চুলের বাবরি দোলানো ক্রিকেটারকে কিভাবে ভুলবেন। বিধ্বংসী মিডিল অর্ডার ব্যাটসম্যান সিমন্স বল হাতেও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে যথেষ্ট অবদান রাখতেন। মিডিয়াম ফাস্ট ও অপ স্পিন যখন যেটা দরকার ম্যাচ সিচুয়েশন অনুযায়ী করতেন সেটি।

তালিকার পরের নামটি বাংলাদেশের এবং আমাদের অতি পরিচিত একজন নাসির হোসেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই পার্টটাইম বোলার হিসেবে বেশ কার্যকরী তার প্রমাণ দেওয়া নাসির। মূলত অফ স্পিনার হিসেবে পরিচিত হলেও ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে তিনি পূর্ণ রানা আপে পেস বোলিং করেছিলেন এমনকি ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার এর বেশি গতি ও তুলেছিলেন।

সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান শচিন ব্যাটের পাশাপাশি বল হাতেও দক্ষতা বেশ প্রমাণিত ৩৪ হাজার রানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রয়েছে ২০১ উইকেট। মূলত স্পিনার শচীন কখনো অফ স্পিন আবার কখনো লেগব্রেক গুগলি করতেন। এমন কি করতেন মিডিয়াম পেস বলও। অনেক সময় একই ম্যাচে তিন ধরনের বোলিং করেছেন ভারতীয়দের ক্রিকেট গড।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আনুষ্ঠানিকভাবে নয়, ঘরোয় ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তজার নাম লিখিয়েছেন মিক্স বোলারদের খাতায়। হয়তো অনেকেরই মনে আছে ২০১৬ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে মাশরাফি কয়েকটি ম্যাচে করেছিলেন অপ স্পিন। মুলত ইনজুরির কারনে পেস বোলিং করতে পারছিলেন না তিনি তাই মোহামেডানের বিপক্ষে অপ স্পিন করে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন তিনি।

ক্রিকেটে এখন নতুন বিশ্ময় আম্বিডেক্সট্রাস বা দুই হাতেই বল করতে পারেন এমন বোলাররা। সেই তুলনায় মিক্সড বোলার বা মিশ্র বোলাররা হয়তো বিশ্ময় চেয়ে বিনোদনী বেশি যোগান। তবে তাদের কার্যকরিতা যে অনেক তা কিন্তু এই নামগুলো দেখেই বোঝা যায়।