ঢাকা, শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২

শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ২য় ওয়ানডে ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৩ মার্চ ০৩ ১৯:৩৫:৪৮
শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ২য় ওয়ানডে ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল

তাসকিন আউট হওয়ার ঠিক পরের বলেই ফিরলেন তাইজুলও। স্যাম কারেনের বলে কট বিহাইন্ড হয়েছেন তিনি। ৪৪.৪ ওভারে ১৯৪ রান তুলতেই অলআউট বাংলাদেশ। ১৩২ রানের জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড।

আগের দিনের চেয়ে ভালো উইকেটে ইংল্যান্ডের ৩২৬ রানের নাগাল পায়নি বাংলাদেশ। কারেনের প্রথম ওভারেই ২ উইকেট পড়ার পর এক সময় ৯ রানে ৩ উইকেটে পরিণত হয় স্বাগতিকেরা। এরপর থেকে লড়াইটা হয়ে পড়ে অসম।

সাকিব ও তামিমের জুটি, সাকিবের ফিফটি—আদতে পার্থক্য গড়তে পারেনি কোনো। বোলিং লাইনআপে নতুন দুজনকে নিয়েও শক্তিমত্তায় বাংলাদেশের সঙ্গে ইংল্যান্ডের পার্থক্যটা বরং ফুটে উঠেছে আরও বেশি করে।

চট্টগ্রাম আগামী ৬ মার্চ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। এখন যেটি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।বাংলাদেশের ইনিংস বিবরণ:

স্যাম কারেনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল, লেগ মিডলে গার্ড নেওয়া লিটন সেটিই খেলতে গেলেন পা সেভাবে না নড়িয়েই। সেটার মাশুলও দিলেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে। বাংলাদেশ ওপেনার ফিরেছেন ‘গোল্ডেন ডাক’ পেয়ে। ঠিক পরের বলে অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়েছেন আগের ম্যাচে বাংলাদশের সর্বোচ্চ স্কোরার নাজমুল হোসেন। ইনিংসের প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন কারেন।

৫ বলের মধ্যে তৃতীয় উইকেট কারেনের! এবার তাঁর শিকার মুশফিকুর রহিম। আবার অফ স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল, আবার খোঁচা ব্যাটসম্যানের। ইংল্যান্ড উল্লাস শুরু করে দিলেও আম্পায়ার অবশ্য শুরুতে আউট দেননি, তবে আত্মবিশ্বাসী জস বাটলার রিভিউ নিয়ে সফল হয়েছেন।

আগের ওভারে সাকিব বেঁচেছিলেন, পরের ওভারে ফিরলেন তামিম। মঈন আলীকে ডাউন দা গ্রাউন্ডে এসে ইনসাইড-আউট খেলার চেষ্টা করেছিলেন তামিম, তবে বলের পিচিংয়ে ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারেননি। লং অফে জেমস ভিন্সের হাতে ধরা পড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ৬৫ বলে ৩৫ রান করে। সাকিবের সঙ্গে তাঁর জুটি থেমেছে ৭৯ রানেই।

রশিদকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন সাকিব, তবে মিড অফের ফিল্ডারকে পার করাতে পারেননি। ফিফটির পর বেশিক্ষণ থাকলেন না তিনি, থামলেন ৬৯ বলে ৫৮ রান করেই।

অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে লেগ স্পিনিং ডেলিভারি, সেটিতে শুরুতে ড্রাইভ করতে চেয়ে শেষ মুহূর্তে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন আফিফ। তবে যা ভুল করার করে ফেলেছেন। ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ গেছে জস বাটলারের হাতে। আফিফ থেমেছেন ৩৩ বলে ২৩ রান করে।

খেললেন কই, আর বল গেল কই! মাহমুদউল্লাহর আউটের ধরন ঠিক এমনই! রশিদের লেগ স্পিন করা ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন, ক্যাচ গেছে স্লিপে। শেষ হয়েছে মাহমুদউল্লাহর সংগ্রাম, ৪৯ বলে ৩২ রান করে থেমেছেন তিনি।

ডাউন দা গ্রাউন্ডে গিয়ে ইনসাইড আউট খেলতে গিয়েছিলেন মিরাজ, ভারসাম্য রাখতে পারেননি। নিজের শেষ ওভার করতে আসা আদিল রশিদ পেয়েছেন চতুর্থ উইকেট, ক্যাচ নিয়েছেন বদলি ফিল্ডার রেহান আহমেদ।

ম্যাচ জয়ের প্রসঙ্গ নয়, আলোচনা ২০০ পার করানো নিয়ে। প্রথম ম্যাচে তাসকিন সহায়তা করেছিলেন ২০০ পেরোতে, যেটি ছিল লড়াই করার মতো স্কোর। এবার ৩২৭ রানের লক্ষ্য হলেও ২০০ পার করানোর দিকে বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাসকিন। তাঁর বিপক্ষে নেওয়া একতা রিভিউ একটু আগে ব্যর্থও হয়েছে ইংল্যান্ডের। তবে দলীয় ২০০ রানের আগেই থামলেন তাসকিন, মঈন আলীর সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট হয়ে। ২১ বলে ২১ রান করেছেন।

ইংল্যান্ডের ইনিংস বিবরণ:

টস হেরে ব্যাটিং করতে নামে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জেসন রয় ও ফিল সল্ট। শুরু থেকেই চাপে থেকে দুই ওপেনার। ১৫ বলে ১টি চারের সাহায্যে ৭ রান করে তাসকিনের বলে শান্ত’র হাতে ধরা পড়েন ফিল সল্ট। ১৯ বলে ১১ রান করেন দাভিদ মালান। ১৬ বলে ৫ রান করেন জেমস ভিন্সি।

সেঞ্চুরির পর গতি বাড়িয়েছিলেন রয়। মাঝে ৩ ওভারে এসেছিল ৫টি চার, ৩৮ রান। তবে ১৫০ পর্যন্ত যেতে পারলেন না ইংল্যান্ড ওপেনার। সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে মিস করে হয়েছেন এলবিডব্লু, আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত রিভিউ করারও প্রয়োজন বোধ করেননি। রয় ফিরলেন ১৩২ রান করে, ১২৪ বলের ইনিংসে ১৮টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছক্কা।

উইকেটের দেখা নেই, উইকেটের দেখা নেই… এরপর ৭ বলের মধ্যে ২ উইকেট! তাসকিনের ধীরগতির শর্ট বলে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে সাকিব আল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন উইল জ্যাকস।

ফিফটির পর ১৩ বলে ২৬ রান তুলে ফেলেছিলেন বাটলার। তবে তাঁকে থামতে হলো মিরাজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। ফুললেংথের বলে টেনে মেরেছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক, নিজের বলেই বাঁদিকে নিচু হয়ে দারুণ এক রিফ্লেক্স ক্যাচ নিয়েছেন মিরাজ। বাটলার থেমেছেন ৭৬ রানেই।

তাসকিনের লো ফুলটসে যেভাবে চেয়েছিলেন, টাইমিংটা সেভাবে করতে পারেননি মঈন। স্কয়ার লেগের দিকে খাড়া ওপরে ওঠে ক্যাচ। ডিপে থাকা লিটন দাস অবশ্য ক্যাচের জন্য ছুটতে একটু সময় নিয়েছিলেন, তবে পুষিয়ে দিয়েছেন ভালোভাবেই। ৩৬ বলে ৪২ রান করে থেমেছেন মঈন।

প্রথম বলেই বিমারে নো-বল করেছিলেন মোস্তাফিজ। শেষ ওভারে অবশ্য ৭ রানের বেশি দেননি। ১০ ওভারে ৬৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থেকেছেন এ বাঁহাতি পেসার। শেষ ওভারে এসে তাসকিন দিয়েছেন ১৫ রান, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ছক্কা মেরেছেন সায়ম কারেন। শেষ পর্যন্ত এ বাঁহাতি খেলেছেন ১৯ বলে ৩৩ রানের ক্যামিও। ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২৬ রান তুলেছে ইংল্যান্ড।

দুই দলের একাদশ:

বাংলাদেশের একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদি মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।

ইংল্যান্ডের একাদশ: জেসন রয়, ফিল সল্ট, ডেভিড ম্যালান, জেমস ভিন্সি, জস বাটলার (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), উইল জ্যাক, মঈন আলী, স্যাম কারেন, আদিল রশিদ, মার্ক উড, সাকিব মাহমুদ।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ