ঢাকা, রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২

বাটলারকে ফেরালেন তাইজুল, জয়ের পথে বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৩ মার্চ ০৬ ১৮:৫১:৩০
বাটলারকে ফেরালেন তাইজুল, জয়ের পথে বাংলাদেশ

টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ৪৮.৫ ওভার শেষেসব কয়টি উইকেট হারিয়ে২৪৬ রান স্কোর বোর্ডে জমা করে বাংলাদেশ। ফলে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ২৪৭ রান।

ইংল্যান্ডের ইনিংস বিবরণ:

শটটা খেলার পর থেকেই যেন সল্ট বুঝতে পেরেছিলেন, কী হতে যাচ্ছে। তাঁর হতাশাটাও ছিল স্পষ্ট। সাকিবের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে টেনে মারতে গিয়ে সোজা কাভারে মাহমুদউল্লাহর হাতে ধরা পড়েছেন ইংলিশ ওপেনার। বাংলাদেশ পেয়েছে প্রথম ব্রেকথ্রুর দেখা। ২৫ বলে ৩৫ রান করে ফিরেছেন সল্ট, ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি ভেঙেছে ৫৪ রানে।

আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে সোজা মিড অনে ধরা পড়লেন ডেভিড ম্যালান, বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন ইবাদত হোসেন। পরের ওভারে সাকিবকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করে বোল্ড হয়েছেন রয়। নিচু হয়েছিল বল, রয় সেটির নাগাল পাননি। ১ রানের মধ্যে ইংল্যান্ড হারিয়েছে ৩ উইকেট!

উইকেটের খোঁজে মোস্তাফিজের পর সাকিবকেও এনেছিলেন তামিম, তবে ব্রেকথ্রু দিলেন মিরাজই। একটু নিচু হওয়া বলটি টেনে খেলতে গিয়ে লং অফে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন কারেন। ৪৯ বলে করেছেন মাত্র ২৩ রান, তাঁকে পাঁচে খেলানোর টোটকা ঠিক কাজে দেয়নি ইংল্যান্ডের। ২৪ ওভারে ১০৭ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ভিন্সের সঙ্গে কারেনের জুটিতে উঠেছে ৪৯ রান।

লেগ মিডলে পড়া বল, এরপর টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ছুঁয়ে গেল ভিন্সের ব্যাটের আউটসাইড-এজ। সাকিবের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে পরাস্ত ভিন্স ফিরলেন ৪৪ বলে ৩৮ রান করে। সাকিব করেছেন বেশ ক্ষীপ্র উদ্‌যাপন।

ইবাদত হোসেনের ফুললেংথের বল, মঈন আলী যেন বুঝতেই পারেননি! ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন, মিস করে গেছেন পুরোপুরি। মঈন হারিয়েছেন স্টাম্প, ইংল্যান্ড হারিয়েছে ষষ্ঠ উইকেট, সর্বশেষ ৫ ওভারেই পড়েছে ৩ উইকেট।

রিভিউ নেওয়ার পর আরেকবার শ্যাডো করলেন জস বাটলার, রিভার্স সুইপটা কীভাবে খেলতে চেয়েছিলেন সেটিই যেন দেখালেন। তবে ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। স্লো মোশনে একবার রিপ্লে দেখার পরই হাঁটা শুরু করলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। রিভিউটা যে নিতে হয় বলেই নিয়েছিলেন যেন। তাইজুল ইসলামের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে মিস করে গেছেন, হয়েছেন এলবিডব্লু। বাংলাদেশ পেল মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট। জয়ের জন্য এখনো ৮4 রান প্রয়োজন ইংল্যান্ডের, তবে বাকি মাত্র ৩ উইকেট। চট্টগ্রামের জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ!

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৩৫ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৬০ রান। ক্রিস ওকস ১৪ রানে ও ১ রানে ব্যাট করছেন আদিল রশিদ।

বাংলাদেশের ইনিংস বিবরণ:

আগের ম্যাচে আউট হয়েছিলেন প্রথম বলেই। এবার ৩ বল খেলে লিটন দাস ফিরলেন শূন্যতেই। ক্যারিয়ারে প্রথমবার টানা দুই ইনিংসে কোনো রান না করেই আউট হলেন লিটন। তিন ম্যাচ সিরিজটা লিটনের গেল ভুলে যাওয়ার মতোই—৭, ০ ও ০। স্যাম কারেনের অফ স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে এবার ফিরেছেন লিটন। প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

৪, ৫, ৪—কারেনের ওভারটা শুরু হয়েছিল এভাবে। নাজমুল হোসেন মেরেছিলেন দুই চার, মাঝে ওভারথ্রোয়ে এসেছিল ৫ রান। তবে সে ওভারের শেষে তামিম ইকবালকে ফেরালেন কারেন। প্যাডের ওপর থেকে ফ্লিক করতে গিয়ে লিডিং-এজড হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, পয়েন্টে সহজ ক্যাচ গেছে জেমস ভিন্সের কাছে। শুরুতেই আরেকবার এলোমেলো বাংলাদেশের ব্যাটিং, ৩ ওভারের মধ্যেই নেই দুই ওপেনার। দুজনই কারেনের শিকার।

জুটিটা জমেছিল বেশ। তবে সিরিজের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেওয়ার পরের ওভারেই আউট হয়ে গেছেন নাজমুল। রান আউট হওয়ার আগে ৭১ বলে ৫৩ রান করে যান তিনি।

লেগ সাইডে খেলেছিলেন নাজমুল, মুশফিকের ডাকে সাড়া দিতে দেরি করে ফেলেন। শেষ মুহূর্তে ডাইভ দিয়েও নিজেকে বাঁচাতে পারেননি, বাটলারের থ্রো তার আগেই পৌঁছে গেছে বোলার রেহানের কাছে।

আগের বলটি অফ স্টাম্প লাইনে পড়ে ঘুরেছিল বেশ, লেগ স্পিনিং ডেলিভারিটি জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে নাগাল পাননি মুশফিক। পরের বলটি পড়ল কাছাকাছি লাইনে, এবার ঢুকল ভেতরের দিকে। সুইপের চেষ্টায় ব্যর্থ মুশফিক, আদিল রশিদের গুগলিতে হলেন বোল্ড। থিতু হয়েছিলেন, সেঞ্চুরিটাও নাগালের মধ্যে ছিল। তবে মুশফিককে থামতে হলো ৯৩ বলে ৭০ রান করেই।

এ ওভারেই ডাউন দা গ্রাউন্ডে এসে ছক্কা মেরেছিলেন মাহমুদউল্লাহ, তবে ফিরলেন এর পরপরই। বড় লেগ স্পিনিং ডেলিভারির পর সোজা করেছিলেন রশিদ, মাহমুদউল্লাহ মিস করে গেছেন সেটি। মুশফিকের পর মাহমুদউল্লাহকেও বোল্ড করলেন রশিদ, ৯ বলে ৮ রান করেই থামলেন মাহমুদউল্লাহ।

ক্রিস ওকসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন, তবে কাভারে মঈন আলীর হাতে ধরা পড়লেন আফিফ। সাকিবের সঙ্গে তাঁর জুটি থামলো ৪৯ রানেই। ৯.৫ ওভার, ৬২ রান, ০ উইকেট। শেষ বলের আগে রেহান আহমেদের ফিগার ছিল এমন। ১০ ওভার শেষে সেটিই হয়ে গেল ১০-০-৬২-১। তাঁর শেষ বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বেশ বড়সড় গুগলিতে ধরা পড়েছেন মিরাজ। আগের বলটিও গুগলি ছিল, তবে ব্যাটের ফেস ওপেন করে ভালো একটা শটে চার পেয়েছিলেন মিরাজ। আর্চারের ধীরগতির বাউন্সারে খাড়া ওপরে তুললেন তাইজুল।

টেনে মেরেছিলেন, লং অনের ফিল্ডার ছিলেন বেশ ওয়াইডে। সেখান থেকেই ছুটে এসে ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নিলেন জেসন রয়, জফরা আর্চারের বলে সাকিবকে থামতে হলো ৭৫ রানেই। ৭১ বলের ইনিংসে সাকিব মেরেছেন ৭টি চার।

তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের একাদশ:

তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন, তাইজুল ইসলাম।

একাদশ: 1 জেসন রয়, 2 ফিল সল্ট, 3 ডেভিড মালান, 4 জেমস ভিন্স, 5 স্যাম কুরান, 6 জস বাটলার (ক্যাপ্টেন/উইকেটকিপার), 7 মঈন আলী, 8 ক্রিস ওকস, 9 রেহান আহমেদ, 10 আদিল রশিদ, 11 জোফরা আর্চার।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ