২০০ দিন শেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলনামা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে সিঁড়ি বেয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে নতুন সূর্যের আলো প্রবাহিত হয়। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মাত্র ২০০ দিনে এই সরকার দেশটিকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে পরিচালনার পথচলা শুরু করে।
অর্থনীতির সংকট এবং নতুন সম্ভাবনা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দিনগুলোর তাড়াহুড়ি ছিল একটি কঠিন সংকটের সাথে মোকাবিলা করার। দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ নিম্নমুখী ছিল, আর আন্তর্জাতিক মানে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মত রিজার্ভও ছিল না। তবে, প্রবাসী বাংলাদেশীদের রেমিটেন্স এক সুদৃঢ় আশ্রয় হয়ে ওঠে, ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেল, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বেশি। সরকারের জন্য এটি ছিল এক বড় ধরনের সাফল্য।
২০০ দিনের পর, দেশের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ বিলিয়ন ডলারে। একই সময়ে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১২%, তৈরি পোশাক রপ্তানি ১০.৬৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় বন্দরের উপর নির্ভরতা কমিয়ে, বাংলাদেশ নতুন রপ্তানি পথ হিসেবে মালদ্বীপকে বেছে নিয়েছে—এটি দেশের অর্থনীতির শক্ত ভিত্তি তৈরি করেছে।
অর্থ পাচার ও আইনি সংস্কার: একটি সাহসী উদ্যোগ
অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে আনছে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার কাজ। ২৩,৪০০ কোটি ডলার ফেরত আনার জন্য বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো মজবুত হতে পারে। এছাড়া, আইনি কাঠামোকে শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো হয়েছে। আর, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট সম্প্রতি শেখ হাসিনা পরিবারের ৬১৪ কোটি টাকা জব্দ করেছে, যা সরকারের কঠোর পদক্ষেপের সূচক।
মুদ্রাস্ফীতি ও সামাজিক পরিবর্তন: সামাজিক সমস্যা, সরকারী সাড়া
২০০ দিনের মাথায়, মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও, সমাজের কিছু অপরাধের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশু ধর্ষণ সহ অন্যান্য অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে, যা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে এর দ্রুত সমাধান চাওয়া হচ্ছে এবং আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার সম্পন্ন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: দেশের প্রতি নতুন আস্থা
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও অন্তর্বর্তী সরকার সফলতার ছোঁয়া পেয়েছে। চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছে, এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্তিশালী হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর এবং গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ সফর করেন। এই সমস্ত কূটনৈতিক পদক্ষেপ বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছে।
রাজনৈতিক সংস্কার: ঐক্যের নতুন দিশা
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক একটি নতুন শুরুর ইঙ্গিত পেয়েছে। সরকারের সংস্কারের উদ্যোগ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধতার প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় স্বার্থে কাজ করার শক্তিশালী একটি ভিশন সামনে আসছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ২০০ দিন এক মহামূল্যবান যাত্রা, যেখানে সাফল্য এবং চ্যালেঞ্জের এক সূক্ষ্ম মিশ্রণ দেখা গেছে। যদিও কিছু বিষয় এখনও চ্যালেঞ্জের মুখে, তবে সরকারের দৃঢ় নেতৃত্ব এবং প্রতিশ্রুতি দেশের ভবিষ্যতকে এক নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।
তারেক/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দেশের বাজারে ইতিহাস গড়ে কমলো সোনার দাম, জেনেনিন বাজার মূল্য
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদল কর্মীরা
- আজ বাংলাদেশের বাজারে১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- ৬ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, কারা কত শতাংশ দিচ্ছে
- বাংলাদেশ স্কোয়াডে দুই পরিবর্তন, আসছে এক চেনা মুখ ও এক নতুন নাম
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন হাসানত আব্দুল্লাহ
- মার্জিন রুলস ১৯৯৯-এ বড় পরিবর্তন: পুঁজিবাজারের নতুন দিগন্ত
- ১১ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: কার লাভ, কার ক্ষতি?
- শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বিএসইসি
- বাঁচাও শেয়ারবাজার’: বিনিয়োগকারীদের গর্জনে কাঁপলো মতিঝিল
- বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- রিয়াল বনাম বার্সা ফাইনাল: কখন, কোথায়, কিভাবে দেখবেন আজ রাতে
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (২৮ এপ্রিল ২০২৫)
- শ্রীলঙ্কার ‘না’ বলে দেওয়া, ভারতের সেতু স্বপ্ন স্থগিত