ক্ষমতা হারিয়ে নিঃসঙ্গ লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৭৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ আজ ইতিহাসের কঠিনতম অধ্যায় অতিক্রম করছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে, আর সেই সাথে দলটি পড়ে যায় এক গভীর নেতৃত্ব সংকটে।
দেশের বাইরে শীর্ষ নেতৃত্ব, ভেতরে অন্ধকারে তৃণমূল
গণআন্দোলনের পরপরই দেশের বাইরে চলে যান দলের শীর্ষ নেতারা, এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। কেউ কেউ আশ্রয় নেন ভারত, কেউ পাড়ি জমান ইউরোপ বা আমেরিকায়। ফলে দেশের মাটিতে আওয়ামী লীগ হয়ে পড়ে কার্যত নেতৃত্বহীন।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা পড়ে যান চরম বিভ্রান্তিতে। কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় অনেকে আত্মগোপনে যান, কেউ কেউ গ্রেপ্তার হন, আবার কেউ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সামনে আসতে ভয় পাচ্ছেন সম্ভাব্য নেতারা
বিদেশে থাকা নেতারা এখন দেশীয়ভাবে একজন সাহসী নেতার খোঁজ করছেন—যিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন। আলোচনায় উঠে এসেছে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর নাম। তবে মামলার ভয়, গ্রেপ্তারের শঙ্কা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় কেউই প্রকাশ্যে আসছেন না।
দলীয় সূত্র বলছে, কোনো নির্দিষ্ট নাম ঘোষণা করাও এখন ঝুঁকিপূর্ণ। তাতে সেই নেতাকে রাষ্ট্রীয় দমননীতির মুখে পড়তে হতে পারে।
ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ রাজনীতি
বর্তমানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়েছে দিবসভিত্তিক ঝটিকা মিছিল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু প্রচারণায়। মাঠে সরাসরি নেতৃত্ব নেই, ফলে কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় ও দিকনির্দেশনার ঘাটতি স্পষ্ট।
তবে অনেক তৃণমূল নেতা দাবি করছেন, তারা অন্তত একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগে রয়েছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে দলকে ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।
শেখ হাসিনাই এখনো “চূড়ান্ত নেতা”
যদিও দলের ভেতরে নতুন নেতৃত্ব খোঁজা চলছে, কিন্তু এখনো অনেকেই শেখ হাসিনাকে একমাত্র নেতা হিসেবেই মেনে নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আমরা ঘুরে দাঁড়াব। বিকল্প নেতৃত্বের কোনো প্রশ্নই আসে না।”
রাজনীতিতে একঘরে, সামনে ধোঁয়াশা
গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত নতুন ছাত্র নেতৃত্বের দল এনসিপিসহ অনেক দলই আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে। তাদের মতে, দীর্ঘ শাসনকাল ছিল দমন, দুর্নীতি ও গণবিচ্ছিন্নতার প্রতিচ্ছবি।
আওয়ামী লীগের সাবেক জোটসঙ্গী ১৪ দল, জাতীয় পার্টি, এমনকি অন্যান্য প্রগতিশীল দলগুলোর অনেক নেতাও এখন কারাগারে বা আত্মগোপনে। ফলে আওয়ামী লীগ হয়ে পড়েছে রাজনৈতিকভাবে একঘরে।
বিশ্লেষকদের চোখে ভবিষ্যৎ
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বলেন, “দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। দলভিত্তিক সুবিধাবাদ ও দুর্নীতির কারণে তারা সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়েছে।”
তার মতে, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনীতিতে দ্রুত শক্ত অবস্থানে ফেরা কঠিন হবে।”
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
নেতৃত্বশূন্যতা, রাজনৈতিক নিঃসঙ্গতা আর আন্তর্জাতিক চাপ—এই ত্রিমাত্রিক সংকটে পড়ে আওয়ামী লীগ আজ টিকে থাকার সংগ্রামে। সাহসী কোনো নেতা কি সত্যিই এগিয়ে আসবেন? নাকি একসময়ের এই প্রভাবশালী দলের রাজনৈতিক অধ্যায় শেষের দিকে চলে এসেছে?
সময়ই দেবে এই প্রশ্নের উত্তর।
রাজিব/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল বিএসইসি
- দেশের বাজারে ইতিহাস গড়ে কমলো সোনার দাম, জেনেনিন বাজার মূল্য
- বাংলাদেশে ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য তালিকা
- সিলেটে ক্রিকেট মাঠে শোকের ছায়া: বিসিবি কর্মকর্তার অকাল মৃত্যু
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদল কর্মীরা
- বাংলাদেশ স্কোয়াডে দুই পরিবর্তন, আসছে এক চেনা মুখ ও এক নতুন নাম
- ৬ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, কারা কত শতাংশ দিচ্ছে
- মার্জিন রুলস ১৯৯৯-এ বড় পরিবর্তন: পুঁজিবাজারের নতুন দিগন্ত
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন হাসানত আব্দুল্লাহ
- ১১ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: কার লাভ, কার ক্ষতি?
- শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বিএসইসি
- বাঁচাও শেয়ারবাজার’: বিনিয়োগকারীদের গর্জনে কাঁপলো মতিঝিল
- বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
- রিয়াল বনাম বার্সা ফাইনাল: কখন, কোথায়, কিভাবে দেখবেন আজ রাতে
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা