শেয়ারবাজারে রেকর্ড লেনদেন, ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজারে যে ধসের ধারা ছিল, তা রোববার কিছুটা স্বস্তির বাতাস বইয়ে দিয়েছিল। আর সোমবার সেই ধারা আরও কিছুটা জোরালো হলো। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হয়েছে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন, যা বাজারে নতুন করে আশার সঞ্চার করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি হতে পারে দীর্ঘমেয়াদে ঘুরে দাঁড়ানোর সূচনা।
টানা পতনে বিনিয়োগকারীরা ছিলেন দিশেহারা
গত ৬ এপ্রিল ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৫,২০৬ পয়েন্টে। এরপরে টানা পতনের ধারায় ৩০ এপ্রিল সূচক নেমে আসে ৪,৯১৭ পয়েন্টে। এ সময়ে সূচক কমে ২৮৯ পয়েন্ট এবং বাজার মূলধন হ্রাস পায় প্রায় ২০ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। এত বড় পতনে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে লোকসান নিয়েই বাজার থেকে সরে যান, আর যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও ছিলেন চরম আতঙ্কে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে এই ধাক্কা তৈরি হয়েছিল একদিকে মুনাফা তুলে নেওয়া, তারল্য সংকট, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অনুপস্থিতি এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উদ্বেগের কারণে।
রোববার থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত
পতনের ধারায় একটু ভরসা এনে দেয় রোববারের বাজার। ওইদিন সূচক বেড়ে ছিল ৩৮ পয়েন্টের বেশি, আর লেনদেনও কিছুটা বাড়ে।
সোমবার বাজারের সূচকে উত্থান সামান্য হলেও লেনদেনের দিক দিয়ে এটি ছিল ২০২৫ সালের মধ্যে সবচেয়ে বড় দিন।
ডিএসইর প্রধান সূচক আজ বেড়েছে ৮.৪১ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ৪,৯৬৪ পয়েন্টে। অন্যদিকে, ডিএসই শরীয়াহ সূচক কমেছে ১.৪৩ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ১০.০২ পয়েন্ট।
বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন
আজ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৮৪ কোটি ২ লাখ টাকার, যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ। আগের দিন রোববার লেনদেন হয়েছিল ৩৯৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকার।
লেনদেন হওয়া ৪০০ কোম্পানির মধ্যে ১৭৩টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৬৯টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮টি। এ থেকেই বোঝা যায় বাজারে কিছুটা ভারসাম্য তৈরি হচ্ছে, যদিও এখনও বড় বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হননি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক বাড়লেও লেনদেন কিছুটা কম
সোমবার সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ২ লাখ টাকার, যেখানে আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকার। লেনদেন হওয়া ১৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৬টির দাম বেড়েছে, ৬০টির কমেছে এবং ২৯টির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
চট্টগ্রামের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৮.৯৯ পয়েন্ট, যা আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উত্থান।
বাজারে আস্থার সংকেত, কিন্তু সতর্কতা এখনো রয়ে গেছে
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেয়ারবাজারে আস্থার সংকট অনেকাংশে মনস্তাত্ত্বিক। দীর্ঘ সময় পতনের ফলে বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ ও স্বল্প মুনাফার দিকেই ঝুঁকছেন। বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখনো পর্যবেক্ষণেই আছেন, তারা সক্রিয় হলে সূচক আরও দ্রুত বাড়তে পারে।
তবে বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। যারা এখনও বাজারে আছেন, তারা ধৈর্য ধরে ভালো শেয়ার বাছাই করে বিনিয়োগ করলে পরবর্তীতে ভালো ফল পেতে পারেন।
বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ
যেসব কোম্পানি মুনাফায় আছে, নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয়, সেগুলোর দিকেই নজর দেওয়া উচিত।
গুজবে নয়, তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
বড় মুনাফার আশায় অতিরিক্ত ঝুঁকি না নিয়ে ধাপে ধাপে বিনিয়োগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন, সূচকের উত্থান এবং কিছু কোম্পানির দামের বড়সড় পরিবর্তন বাজারে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। তবে এই ধারা স্থায়ী হবে কি না, তা নির্ভর করছে আগামী কয়েকদিনের বাজারচিত্রের ওপর। বিনিয়োগকারীদের এখন প্রয়োজন ধৈর্য, সচেতনতা ও পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত।
জামিরুল ইসলাম/
আপার জন্য বাছই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশে১৮, ২১ ও২২ ক্যারেট সোনার আজকের বাজার মূল্য
- আজ বাংলাদেশের বাজারে ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য তালিকা
- জ্বালানি তেলে সুখবর: মে মাসে কমলো ডিজেল ও পেট্রোলের দাম
- ৬৯০ টাকায় সাড়ে ১২ কেজির এলপি গ্যাস, কেন পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ?
- ৯ দিনে সোনার দাম কমলো ২৯০ ডলার
- সকালে ভেজানো কিসমিস খাওয়ার চমকপ্রদ ৭টি উপকার
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদল কর্মীরা
- বাংলাদেশে আজকের সোনার দাম ও রুপার বাজার মূল্য
- ২ ধরনের শরিক নিলে কোরবানি কবুল হবে না!
- স্বর্ণের দাম বাড়বে নাকি কমবে? বিশ্ববাজারের পরবর্তী পদক্ষেপ
- ৪১ কোম্পানির ইপিএস প্রকাশ: লাভবান ও ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানির তালিকা
- ৬ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, কারা কত শতাংশ দিচ্ছে
- ১৬ কোম্পানির ইপিএস প্রকাশ: কার আয় বাড়ল, কে পড়ল লোকসানে
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন হাসানত আব্দুল্লাহ
- গুজবের ফাঁদে শেয়ারবাজার: জুয়াড়ি চক্রের নতুন কৌশল