ঢাকা, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সব দল চায় ইউনূসই থাকুন, চাই শুধু সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২৪ ১৩:২৫:০৭
সব দল চায় ইউনূসই থাকুন, চাই শুধু সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ

পদত্যাগের আভাসে হঠাৎ আলোড়ন, নেপথ্যে ক্ষোভ–হতাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা ছিল। সেটি বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরিত হলো এক অনির্ধারিত বৈঠকে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস হঠাৎই জানিয়ে দিলেন, তিনি থাকতে চাচ্ছেন না। নানা প্রতিবন্ধকতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা আর অসহযোগিতার মধ্যে পড়ে তাঁর দায়িত্ব পালন কঠিন হয়ে পড়েছে—এই ছিল তাঁর ক্ষোভের মূল সুর।

এই ঘোষণায় যেন রাজনীতির বাতাস আচমকা পাল্টে গেল। রাত পোহাতে না পোহাতেই দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় বসে। ইউনূস যদি সত্যিই সরে যান, তাহলে কি আরও বড় অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে দেশ? এমন প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গন যেন অস্থির হয়ে ওঠে।

সূত্র বলছে, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ একাধিক দলের শীর্ষ পর্যায়ে রাতেই শুরু হয় আলোচনা। প্রায় সব দলের নেতাদের মতামত এক জায়গায় এসে মেলে—পদত্যাগ নয়, ইউনূসকেই দায়িত্বে থাকতে হবে।

তবে শর্তও আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ইউনূস থাকুন, কিন্তু বসে না থেকে দ্রুত একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। জনগণের কাছে সময়সীমা, রূপরেখা ও পরিকল্পনা তুলে ধরুন—সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি।

এদিকে এই ঘটনার ঠিক একদিন আগে, সেনানিবাসে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’-এ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন শেষ করে একটি নির্বাচিত সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেই বক্তব্য নিয়েও আলাদা করে আলোচনা হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা পদত্যাগ চাই না, চাই একটি পরিষ্কার রোডম্যাপ। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের জায়গায় যদি কেউ নিজেই নিজেকে সরিয়ে নেন, তাহলে বিকল্প ভাবতেই হবে।”

এরই মধ্যে অধ্যাপক ইউনূসের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন উপদেষ্টা ও রাজনীতিক তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁরা চেয়েছেন, অধ্যাপক ইউনূস যেন দায়িত্বে থেকে একটি গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত নির্বাচনের পথনকশা জাতির সামনে উপস্থাপন করেন।

সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার আশপাশের পরিবেশ নিয়েও অসন্তোষ আছে। অন্তত একজন উপদেষ্টাকে নিয়ে দলগুলোর মধ্যে আপত্তি রয়েছে। তাঁর কর্মকাণ্ড সরকারের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে—এমন অভিযোগ এসেছে কয়েক দিক থেকে।

সব মিলিয়ে দেশের রাজনীতিতে এখন এক অদ্ভুত সাম্যাবস্থা। কেউ চাইছে না অধ্যাপক ইউনূস চলে যান, কিন্তু সবাই চাইছে তিনি যেন এখন দায়িত্ববান হন, দ্বিধা ঝেড়ে এগিয়ে যান।

দেশের এই সংকটময় সন্ধিক্ষণে প্রয়োজন একটিই—দায়িত্ববোধ, সাহসিকতা ও ভবিষ্যতের প্রতি দায়বদ্ধতা। অধ্যাপক ইউনূস কি সেই নেতৃত্ব দেখাবেন? রাজনৈতিক দলগুলো এখন তাঁর দিকেই তাকিয়ে।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ