ঢাকা, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আরাফার রোজা কখন রাখবেন? জানুন সঠিক তারিখ ও ফজিলত

২০২৫ জুন ০৫ ০৩:৫২:৪৩
আরাফার রোজা কখন রাখবেন? জানুন সঠিক তারিখ ও ফজিলত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশেষ বরকতময় সময়। এই পবিত্র দশকের মধ্যে জিলহজের নবম দিন অর্থাৎ ‘ইয়াওমে আরাফা’ বা আরাফার দিন ইসলামি ইতিহাস ও আধ্যাত্মিকতায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। এই দিনটি রোজা রাখার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে গুনাহ ক্ষমা ও বিশাল বরকত লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই জানা খুবই জরুরি, আরাফার রোজা কবে রাখা উচিত এবং এর ফজিলত কী।

আরাফার রোজা কখন রাখবেন?

হাদিস ও ঐতিহ্যের আলোকে আরাফার রোজা জিলহজের নবম দিনে অর্থাৎ ৯ জিলহজ রাখা হয়। যদিও সৌদি আরবে হাজিরা ৮ জিলহজে আরাফায় অবস্থান করেন, কিন্তু আমাদের দেশের মুসলিমদের জন্য সঠিক আরাফার রোজা রাখা হয় ৯ জিলহজেই।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও জিলহজের নবম দিন রোজা রাখতেন এবং এ দিনে রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে বিশেষ বাণী দিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ, নাসায়ী, মুসনাদে আহমাদ)

আরাফার রোজার ফজিলত কী?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

“আমি মনে করি, আরাফার দিনে সিয়াম পালন করলে আল্লাহ বিগত বছরের গুনাহ ও আগামী বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন।”(সহীহ মুসলিম: হাদিস ১১৬২)

এটি আমাদের জানায়, আরাফার দিনে রোজা রাখা শুধু ইবাদত নয়, বরং একটি মহান সুযোগ আল্লাহর কাছে আমাদের ভুল-ত্রুটি ও গুনাহের মাগফিরাত লাভ করার জন্য।

আরাফার রোজার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আমল

আরাফার দিন থেকে শুরু করে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত ‘তাকবিরে তাশরিক’ পাঠেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। নবীজি ৯ জিলহজের ফজর থেকে ১৩ জিলহজের আসর পর্যন্ত তাকবির পড়তেন, যা ঈদের আনন্দ ও মহান আল্লাহর প্রশংসার পরিচায়ক।

আরাফার দিন পরবর্তী দিন অর্থাৎ ১০ জিলহজ ‘ইয়াওমুন নাহর’ বা ঈদুল আজহার দিন। এদিন পশু কোরবানি দেওয়া হয় এবং মুসলিম উম্মাহ এক নতুন উৎসবের আনন্দ উদযাপন করে।

কেন ৯ জিলহজ আরাফার রোজার দিন?

কিছু উৎসবে বিভ্রান্তি থাকলেও ইসলামের ঐক্যমত ও শরীয়াহ অনুযায়ী ৯ জিলহজেই আরাফার রোজা রাখা উচিত। এটি ঐতিহ্যগত, দলিলবদ্ধ এবং নবীজির সুন্নাহমত একটি দিন।

আরাফার রোজা রাখার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ রহমত, মাগফিরাত ও বরকত কামনা করি। এটি আমাদের ইবাদতকে উন্নত করে এবং হৃদয়কে আলোকিত করে। আসুন, আগামী জিলহজের ৯ তারিখে সবাই একসঙ্গে আরাফার রোজা রেখে আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফের দোয়া করি।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

FAQ (প্রশ্ন ও উত্তর)

১. আরাফার রোজা কখন রাখা হয়?

আরাফার রোজা জিলহজ মাসের ৯ তারিখে রাখা হয়, যা ইসলামের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সঠিক দিন হিসেবে গৃহীত।

২. আরাফার রোজা রাখার ফজিলত কী?

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আরাফার রোজা রাখলে আল্লাহ আগের ও আগামি বছরের গুনাহ ক্ষমা করেন।

৩. সৌদি আরবে আরাফা ৮ জিলহজ হলেও কেন আমাদের দেশে ৯ জিলহজে রোজা রাখা হয়?

সৌদি আরবে হাজিরা ৮ জিলহজে আরাফায় অবস্থান করলেও আমাদের দেশে ঐতিহ্যগত ও হাদিসের আলোকে ৯ জিলহজই আরাফার রোজার সঠিক তারিখ।

৪. আরাফার রোজার সঙ্গে তাকবিরের কি সম্পর্ক?

তাকবিরে তাশরিক ৯ জিলহজের ফজর থেকে শুরু হয়ে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত চলে, যা আরাফার রোজার সময়কার আমলের একটি অংশ।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ