ঢাকা, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে ২০ সাধারণ বীমা কোম্পানির

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১২ ১০:৪৫:০৯
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে ২০ সাধারণ বীমা কোম্পানির

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ মেয়াদের প্রথম প্রান্তিকে দেশের সাধারণ বীমা খাতে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির মুনাফা কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, দেশের শেয়ারবাজারে সাধারণ বীমা খাতে বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ৪৩টি। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৮টি কোম্পানি তাদের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, এই ৩৮টি কোম্পানির মধ্যে ২০টি কোম্পানির মুনাফা কমেছে, আর ১৮টি কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে। অর্থাৎ অধিকাংশ কোম্পানিই বছরের শুরুতে মুনাফা হ্রাসের মুখে পড়েছে।

যেসব কোম্পানির মুনাফা কমেছে:

১. এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স

২. অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স

৩. সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স

৪. কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স

৫. দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স

৬. ঢাকা ইন্স্যুরেন্স

৭. এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স

৮. কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স

৯. ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স

১০. মেঘনা ইন্স্যুরেন্স

১১. মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স

১২. নিটল ইন্স্যুরেন্স

১৩. নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স

১৪. ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স

১৫. প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স

১৬. পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স

১৭. প্রাইম ইন্স্যুরেন্স

১৮. প্রগতী ইন্স্যুরেন্স

১৯. পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স

২০. রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স

এই কোম্পানিগুলোর আয় প্রতি শেয়ারে (EPS) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির ইপিএস হ্রাসের চিত্র তুলে ধরা হলো:

এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স: ইপিএস ১.২১ টাকা থেকে কমে ১.০৩ টাকা, হ্রাস ১৮ পয়সা

অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স: ৫০ পয়সা থেকে কমে ৩৫ পয়সা, হ্রাস ১৫ পয়সা

সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স: ৫৪ পয়সা থেকে কমে ৪৩ পয়সা, হ্রাস ১১ পয়সা

দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স: ২৪ পয়সা থেকে কমে ৫ পয়সা, হ্রাস ১৯ পয়সা

ঢাকা ইন্স্যুরেন্স: ৭৫ পয়সা থেকে কমে ৫০ পয়সা, হ্রাস ২৫ পয়সা

মেঘনা ইন্স্যুরেন্স: ৬৭ পয়সা থেকে কমে ৩৮ পয়সা, হ্রাস ২৯ পয়সা

প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স: ৫৫ পয়সা থেকে কমে ৩৮ পয়সা, হ্রাস ১৭ পয়সা

পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স: ১.৫০ টাকা থেকে কমে ১.৩৬ টাকা, হ্রাস ১৪ পয়সা

প্রাইম ইন্স্যুরেন্স: ৭৫ পয়সা থেকে কমে ৬১ পয়সা, হ্রাস ১৪ পয়সা

রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স: ৫৬ পয়সা থেকে কমে ৪৭ পয়সা, হ্রাস ৯ পয়সা

সবচেয়ে বেশি ইপিএস কমেছে মেঘনা ইন্স্যুরেন্সে (২৯ পয়সা), ঢাকা ইন্স্যুরেন্সে (২৫ পয়সা), এবং দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সে (১৯ পয়সা)। এ থেকে স্পষ্ট যে, কয়েকটি কোম্পানির মুনাফা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

সমস্যার কারণ কী?

বীমা খাতের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নীতিনির্ধারণী জটিলতা, গ্রাহক দাবি নিষ্পত্তিতে বিলম্ব, প্রিমিয়াম আদায়ে শৃঙ্খলার অভাব এবং বিনিয়োগে দুর্বলতা—এসব কারণেই কোম্পানিগুলোর মুনাফায় চাপ পড়ছে। এছাড়া, শেয়ারবাজারের অস্থিরতা এবং খরচ বৃদ্ধিও মুনাফা হ্রাসের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে।

এগিয়ে থাকা কোম্পানিগুলোর কী অবস্থা?

যদিও ২০টি কোম্পানির মুনাফা কমেছে, তবুও ১৮টি সাধারণ বীমা কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে, যা খাতটির স্থিতিশীলতা এবং সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি মিশ্র সংকেত।

২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন সাধারণ বীমা খাতের জন্য একটি সতর্কবার্তা। এই খাতে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কোম্পানিগুলোকে স্বচ্ছতা, সঠিক দাবি নিষ্পত্তি এবং লাভজনক বিনিয়োগ কৌশল গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকেও সময়োপযোগী নীতিমালা তৈরি করে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ