ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেসিকে ছাড়া খেলতে শিখে গেছে আর্জেন্টিনা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১২ ১৫:২৮:৩২
মেসিকে ছাড়া খেলতে শিখে গেছে আর্জেন্টিনা

লিওনেল স্কালোনির চোখে গড়া এক পূর্ণ দল, যেখানে মেসি অনুপ্রেরণা—আবশ্যিকতা নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: সময় বয়ে চলে নিজের নিয়মে। এক সময় যা ছিল অবিচ্ছেদ্য, এখন তা হয়তো শুধুই প্রেরণা। ফুটবলবিশ্বে এমনই এক নাম লিওনেল মেসি। দীর্ঘদিন ধরে আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সির প্রধান কাহিনিকার ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই কাহিনিতে এখন নতুন অধ্যায় যোগ হয়েছে—যার লেখক লিওনেল স্কালোনি। আর এই নতুন অধ্যায়ের নাম হতে পারে, "মেসি ছাড়া মেসিদের জয়যাত্রা!"

২০১৮ বিশ্বকাপের হতাশা আর মেসির স্বেচ্ছা নির্বাসনের সময়টাতে যখন আর্জেন্টিনার ফুটবল ভবিষ্যৎ ছিল ধোঁয়াশায়, তখনই দায়িত্ব নেন তরুণ কোচ স্কালোনি। শুরুটা ছিল পরীক্ষানিরীক্ষায় ভরা, পায়ে চলার পথটা কাঁটায় ভরা। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি গড়ে তোলেন এমন এক দল, যার কেন্দ্রে মেসি থাকলেও, অস্তিত্ব নির্ভর করে না কেবল তার উপস্থিতিতে।

স্কালোনির কণ্ঠে সেই আত্মবিশ্বাস এখন স্পষ্ট, "এই দলটা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে মেসি মাঠে থাকুক বা না থাকুক— তাদের খেলা বদলায় না।"

অতীতে এমন কথা বলাটা হয়তো ধৃষ্টতা মনে হতো। কারণ মেসির ছায়ায় লুকিয়ে থাকতো পুরো স্কোয়াডের আত্মবিশ্বাস। কিন্তু এখন সেই ছায়া নয়, তারা নিজেরাই আলোর উৎস। চিলির বিপক্ষে জয় কিংবা কলম্বিয়ার সঙ্গে সমতা—উভয় ম্যাচেই মেসির প্রভাব ছিল সীমিত, তবুও দলের পারফরম্যান্সে ছিল না কোনো ঘাটতি।

বিশেষ করে কলম্বিয়ার বিপক্ষে দশজন নিয়ে পিছিয়ে থেকেও যেভাবে লড়েছে আর্জেন্টিনা, সেখানে মেসির অবর্তমানটাই যেন ছিল সবচেয়ে বড় বার্তা। দ্বিতীয়ার্ধে যখন স্কালোনি তাকে তুলে নিলেন, কেউ ভাবেনি গোল আসবে। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তেই সমতায় ফেরে আলবিসেলেস্তেরা। মেসি নিজেই বলেছিলেন বেরিয়ে যেতে, স্কালোনিও সম্মতি দেন।

“এমনিতে সে মাঠ ছাড়ে না,” বলেন স্কালোনি, “কিন্তু সে যখন বুঝল আমরা দুটি পরিবর্তন আনছি, তখন নিজেই বলল—তার বের হয়ে যাওয়াই ভালো হবে। তাই তুলে নেই। না হলে তাকে তুলতাম না।”

এ কথাগুলো শুধু একটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি পরিণত দলের নিঃশব্দ ঘোষণা—আমরা প্রস্তুত, মেসি ছাড়াও লড়তে।

৩৭ বছর বয়সী মেসি এখন ফিরে গিয়েছেন ইন্টার মায়ামিতে, সামনে ক্লাব বিশ্বকাপ। লাতিন আমেরিকার কঠিন শারীরিক ফুটবলে টিকে থাকা তার পক্ষে সহজ নয় আর। কিন্তু তিনি জানেন, তার অনুপস্থিতিতেও তার দল লড়তে জানে। এটাই কোচ স্কালোনির সবচেয়ে বড় অর্জন।

আজকের আর্জেন্টিনা এক নান্দনিক ক্যানভাস। মেসি সেখানে এক কালজয়ী ছায়া, কিন্তু পুরো ছবি আঁকা এখন অনেক রঙে।

শুধু একজনের মহিমা নয়, পুরো দলের জয়গান গাইছে আর্জেন্টিনা। এবং সেটাই মেসির জন্য সবচেয়ে বড় স্বস্তি— কারণ তার অনুপস্থিতিতেও দেশের পতাকা এখন ঠিকই উড়ছে বিজয়ের আকাশে।

জামিরুল ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ